১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মিরসরাইয়ে ২০০ বছরের পুরনো ইছামতির মেলায় মানুষের ঢল

-

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জে ২০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী ইছামতি মেলা দেখতে মানুষের ঢল নেমেছে। শুক্রবার এই গ্রামীণ বৈশাখী মেলা উপলক্ষে হাজার হাজার দর্শনাথীর সমাগমে মুখরিত হয় মেলা প্রাঙ্গণ। প্রতি বছর ৬ বৈশাখ মেলাকে ঘিরে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শতাধিক দোকানি বিভিন্ন পণ্যের পসরা নিয়ে আসেন। গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে ও ক্রেতাদের মন আকৃষ্ট করতে মৃৎ শিল্পীরা মাটির বিভিন্ন খেলনা, হস্তশিল্পীরা বাঁশ, বেত, কাঠ, লোহা, শঙ্খের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের পসরা নিয়ে এসেছেন মেলায়। মেলায় উঠেছে বিভিন্ন খেলনা, খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় আসবাবপত্রের দোকানও।
জানা গেছে, ২০০ বছর ধরে ইছামতি দেবীর মন্দিরে সনাতন ধর্মালম্বীদের পূজা ও উৎসব হয়। এই উৎসবকে ঘিরে প্রতি বছর মন্দিরসংলগ্ন জমিতে মেলা বসে। বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের মধুর শব্দে পুরো মেলা প্রাঙ্গণে এক উৎসবের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। প্রায় সব ধর্মের লোকের সমাগম ঘটে মেলায়। সারা দিন চলে পূজা-অর্চনা। মেলায় দেশ বিদেশের হাজার হাজার দর্শনাথী ছুটে আসে। অনেকে মানত করে মন্দিরের পাশে অবস্থিত বট গাছের গায়ে সুতো জড়িয়ে দেয়। মেলা উপলক্ষে মন্দির ও মেলা কমিটি সাজসজ্জা থেকে শুরু করে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। মেলার পরদিন চতুষ্প্রহর ব্যাপী নামসংকীর্ত্তন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান মেলা কমিটির তত্ত্বাধায়ক কালু কুমার দে।
মেলায় কুমিল্লার পদুয়া থেকে আসা দোকানি মৃৎশিল্পী পরিমল চন্দ্র পাল বলেন, ঐতিহ্যবাহী ইছামতির মেলায় আমি প্রতি বছর বিভিন্ন মাটির তৈরি জিনিস নিয়ে আসি। বিকিকিনি শেষে ভালোই লাভ হয়।
মেলায় ঘুরতে আসা গৃহবধূ নীলাম্বরী মজুমদার ও গৃহবধূ রুমা দে জানান, বৈশাখ মানেই বাঙালির প্রাণের উৎসব। বর্ষবরণের পাশাপাশি উৎসবকে পরিপূর্ণতা দেয় বৈশাখী মেলা। প্রতি বছর বৈশাখে ইছামতির মেলা বাঙালির ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।
মেলা কমিটির তত্ত্বাবধায়ক কালু কুমার দে বলেন, ‘আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও সভ্যতার একটি অংশ বৈশাখ। বৈশাখে অনুষ্ঠিত ইছামতির মেলাও সেই ঐতিহ্যর অংশ। যেখানে ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সবার উপস্থিতি জানান দেয় আমরা বাঙালি।
ইছামতি মেলা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক সুমন দত্ত ও সদস্য মিন্টু কুমার পাল বলেন, ২০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী ইছামতির মেলায় বলী খেলা, পালাগান ও আসরগান হলেও বর্তমানে হয় না। তবে বাঙালির ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে আগামীতে আরো সুপরিসরে মেলা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তারা।
মেলায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা জোরারগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বলেন, অসাম্প্রদায়িক দেশে যেন সাম্প্রদায়িক কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য আমরা তৎপর ছিলাম। খুব সুন্দরভাবে এবারের মেলা শেষ হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement