আড়াই হাজার স্কুল কলেজে শিক্ষাদান কার্যক্রম বন্ধ
- শাহেদ মতিউর রহমান
- ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫, আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১১
- এমপিওভুক্তির আশায় গড়ে উঠেছে প্রতিষ্ঠান
- করোনার পরেই বন্ধ হয়েছে বেশিরভাগ স্কুল
সরকারি অনুমোদন থাকার পরও দেশের আড়াই হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষাদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সূত্র বলছে, বন্ধ হওয়া এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশই গড়ে উঠেছে এমপিওভুক্তির আশায়। কিন্তু বর্তমানে এমপিওভুক্তিতে বেশ কিছু শর্ত আর কড়াকড়ি থাকায় এই প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষাদান থেকেই বিরত রয়েছে। তবে যেহেতু এই প্রতিষ্ঠানগুলোর সরকারি ইআইআইএন (এডুকেশনাল ইনস্টিটিউট আইডেনটিফিকেশন নম্বর) রয়েছে তাই অতি সহজে এসব প্রতিষ্ঠানের অনুমোদনও বাতিল করা যাচ্ছে না। এদিকে শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, বোর্ডের অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও দেশের আড়াই হাজারেরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বর্তমানে কোনো শিক্ষা কার্যক্রম নেই। আবার শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও যেহেতু এখনো ইআইআইএন নম্বর আছে তাই এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাবোর্ডের অনুমোদন বাতিল হয়নি। তাই এসব প্রতিষ্ঠানকে কাগজপত্রে এখনো বন্ধের তালিকাভুক্তও করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বাস্তবে এসব প্রতিষ্ঠান কার্যত নেই। সূত্রমতে দেশের মাধ্যমিক থেকে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান সংগ্রহ, সংকলন ও বিতরণ করে সরকারি সংস্থা ব্যানবেইস। সংস্থাটির তথ্য বলছে, শিক্ষা বিভাগের অনুমোদন থাকা সারা দেশের ২ হাজার ৬৯৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম গত কয়েক বছরে বন্ধ হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ শিক্ষা পরিসংখ্যান’ প্রতিবেদনের জন্য তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে এই তথ্য পেয়েছে ব্যানবেইস। শিক্ষা কার্যক্রম না থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের সবই বেসরকারি মালিকানার আওতাধীন। এর মধ্যে গত কয়েক বছরে ১ হাজার ২৭৪টি বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে। এ ছাড়া ৯১২টি কলেজ, ৭৪১টি মাদরাসা, ৩৭ শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, ৩১৩টি কারিগরি প্রতিষ্ঠান, ৪৪টি পেশাগত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েরও অবস্থা একই।
তবে কী কারণে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে, তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি ব্যানবেইসের কর্মকর্তারা। একজন কর্মকর্তা জানান, অধিকাংশ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে এমপিওভুক্তির আশায়। কিন্তু দীর্ঘদিনেও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় অনেকেই হাল ছেড়ে দেন। এ ধরনের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীও পায় না। উত্তরাঞ্চলে তুলনামূলকভাবে বেশি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে বলেও জানায় ব্যানবেইস।
অপর দিকে শিক্ষা বোর্ডগুলোর উচিত এ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ইআইআইএন নম্বর বা অনুমোদন বাতিল করে ব্যানবেইসকে জানিয়ে দেয়া, যাতে ব্যানবেইস প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে বলে জানান ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক। তিনি বলেন, তার কাছে মনে হয়েছে অপ্রয়োজনীয়ভাবেও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। কিন্তু সেগুলোতে মানসম্মত শিক্ষক, অবকাঠামো তৈরি হয়নি। ফলে একটা সময় পর আর এসব প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। করোনার কারণেও অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে বলেও জানান তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা