১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

লেনদেনে অধিকাংশ সময় বিক্রির চাপ ছিল : টানা ৪৯ দিন পর সূচক বাড়ল

এতদিন পর মূলধন ফিরল মাত্র ৬৭৯ কোটি টাকা
-


টানা সাত সপ্তাহ পর গেলো সপ্তাহে ‘ডিএসইএক্স’ ১৭.৭৯ পয়েন্ট বেড়েছে। তবে লেনদেনের বেশির ভাগ সময়ই বিক্রির চাপ ছিল পুঁজিবাজারে। গড় লেনদেন কমেছে ১১.৯৬ শতাংশ। এতদিন পর বাজার মূলধন ফিরেছে মাত্র ৬৭৯ কোটি টাকা, যা মোট বাজার মূলধনের দশমিক ১০ শতাংশ। ডিএসইতে শেয়ার বিক্রির চাপ ছিল ৫৭ শতাংশ এবং কেনার চাপ ছিল ৪৩ শতাংশ। ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে দাপট দেখালো শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩ প্রতিষ্ঠান। কোম্পানিগুলো হলো- ম্যাকসন স্পিনিং, মেট্রো স্পিনিং এবং কেঅ্যান্ডকিউ বাংলাদেশ লিমিটেড। এই তিন প্রতিষ্ঠান উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের গেইনারের শীর্ষ তালিকায় অবস্থান করেছে।

পর্যালোচনায় রয়েল ক্যাপিটাল বলছে, টানা সাত সপ্তাহ পর চলতি সপ্তাহে প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ১৭.৭৯ পয়েন্ট বেড়েছে। সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবসে সূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল। যদিও লেনদেনের বেশির ভাগ সময় বিক্রয় চাপ লক্ষ্য করা গেছে। তবে শেষ দিকে এমএসসি এবং টেক্সটাইল খাতে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। অন্য দিকে, গড় টার্নওভার ১১.৯৬ শতাংশ কমেছে। পুরো সপ্তাহে ১১৮টি কোম্পানির শেয়ারের বাজার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ২২৮টি শেয়ারের বাজার মূল্য হারিয়েছে। বাজার মূল্যের ভিত্তিতে ৯টি খাত গেলো সপ্তাহে দর বৃদ্ধি পেয়েছে। যার মধ্যে টপ গেইনার ছিল সিরামিক্স, বস্ত্র ও টেলিকম খাত। আর ৯টি খাতের শেয়ার এই সপ্তাহে দর কমেছে। যার মধ্যে টপ লুজার ছিল ভ্রমণ, সিমেন্ট ও ওষুধ খাত। মূল্য ও লেনদেনের দিক থেকে সার্বিকভাবে মালেক স্পিন সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল। সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে বলা যায় যে, আগামী সপ্তাহে বাজারের সূচক কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পাশাপাশি মাঝারি পরিমাণে লেনদেন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

দুই বাজারের প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৬৭৯ কোটি টাকা বা ০.১০ শতাংশ। ডিএসইর বর্তমান বাজারমূলধন ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৯০৮ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহের চেয়ে বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর সব কটি সূচকে কিছু পয়েন্ট ফিরেছে। প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৭.৭৯ পয়েন্ট বা ০.৩১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমেছিল ১৬৩.৩৪ পয়েন্ট বা ২.৭৫ শতাংশ। শরিয়াহ সূচকে ১১.৮৭ পয়েন্ট বা ০.৯৫ শতাংশ ফিরেছে। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমেছিল ৩৮.৪৯ পয়েন্ট বা ২.৯৮ শতাংশ। আর ডিএসই-৩০ সূচকে ফিরেছে ৩.৮৪ পয়েন্ট বা ০.১৯ শতাংশ। তবে আগের সপ্তাহে এটি ৪৬.৬৩ পয়েন্ট বা ২.২৭ শতাংশ হারিয়েছিল।

সূচকের এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পাশাপাশি ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১৭৪ কোটি ২০ লাখ ১০ হাজার টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৯৭৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। লেনদেন বেড়েছে ১৯৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। তবে প্রতি কর্মদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১১.৯৬ শতাংশ বা ৫৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা। গেলো সপ্তাহের প্রতি লেনদেন দিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৩৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছিল ৪৯৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ৩৯৫টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৮৮টি কোম্পানির, কমেছে ৩৯টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬৮টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। বাজারমূলধনে এ শ্রেণীর শেয়ারের অংশীদারিত্ব ছিল ৮২ শতাংশ, বি শ্রেণীর ১৪.৭ শতাংশ, এন শ্রেণীর ১.৪ এবং জেড শ্রেণীর ১.৯ শতাংশ।

আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সপ্তাহ ব্যবধানে প্রধান সূচক সিএএসপিআই ০.৩৬ শতাংশ, সিএসসিএক্স সূচক ০.৪২ শতাংশ, সিএসই-৩০ সূচক ০.০৮ শতাংশ এবং সিএসইএসএমই ১২.৯৫ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া সিএসআই সূচক ০.৯৬ শতাংশ ও সিএসই-৫০ সূচক ০.৫৮ শতাংশ বেড়েছে। তবে সপ্তাহ ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন কমেছে ৪৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। সপ্তাহজুড়ে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৬৫ হাজার ৬৮৩টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড লেনদেন হয়েছে ৫৩ কোটি ৭২ লাখ ১৩ হাজার ৯০৫ টাকায়। আগের সপ্তাহে হয়েছিল ৯৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা। সিএসইতে ৩১০টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিলেও মধ্যে দাম বেড়েছে ১৩৪টির, কমেছে ১৪৮টির ও দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৮টির। এখানে লেনদেনে এ শ্রেণীর শেয়ার ৫১.২৯ শতাংশ, বি শ্রেণীর ২৯.৭৫ শতাংশ, এন শ্রেণীর ১৩.৭৯ শতাংশ এবং জেড শ্রেণীর ৫.১৬ শতাংশ অংশীদারিত্ব ছিল।

 


আরো সংবাদ



premium cement