একতরফা তফসিল ও নির্বাচন আয়োজনে উদ্বেগ ৪৭ বিশিষ্ট নাগরিকের
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ২১ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০৫
‘একতরফা’ তফসিল ও নির্বাচন আয়োজন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ৪৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক। সোমবার এক বিবৃতিতে তারা এই উদ্বেগ প্রকাশ করার পাশাপাশি সব অংশীজনের সাথে আলোচনা করে নির্বাচন উপযোগী পরিবেশ তৈরি করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সের ভিজিটিং প্রফেসর স্বপন আদনান, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক আসিফ নজরুল প্রমুখ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন।
এতে তারা বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি, সরকার সম্প্রতি আরো একটি একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এরই অংশ হিসেবে ২৮ অক্টোবর পরবর্তী সময়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অজস্র মামলা দায়ের করা হচ্ছে, তাদের নির্বিচারে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বিরোধী দলের সাথে সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করা হয়েছে এবং বিভিন্ন প্রচারমাধ্যম ব্যবহার করে বিরোধী দলের প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে। এমন একটি পরিস্থিতিতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন সরকারের একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের সহায়ক শক্তি হিসেবে ভূমিকা রাখছে বলে আমরা মনে করি। এ পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা অতীতের দু’টি নির্বাচনের অভিজ্ঞতায় দেখেছি- একতরফা, বিতর্কিত ও সাজানো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে দেশে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক জবাবদিহিতা থাকে না; রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের অজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়, দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, খুন, দুর্নীতি, লুটপাট, বিদেশে অর্থপাচার ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আরো একটি বিতর্কিত এবং একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠান বাংলাদেশকে গভীরতর সঙ্কটে নিপতিত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে তাদের এবং অন্যান্য অংশীজনের সাথে আলোচনা করে নির্বাচন উপযোগী একটি পরিস্থিতি সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা একই সাথে সংলাপের পথ উন্মুক্ত রাখার স্বার্থে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করার জন্য বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি।
আমরা মনে করি, অতীতের একতরফা নির্বাচনের অভিজ্ঞতার পরও দেশী-বিদেশী নানা মহলের সংলাপের আহ্বানকে উপেক্ষা করে সরকার যদি আরো একটি অনুরূপ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিকে অগ্রসর হয় তাহলে এর দায়দায়িত্ব মূলত সরকারকে বহন করতে হবে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে আছেন- আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, মানবাধিকার কর্মী শিরিন হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, লেখক রেহনুমা আহমেদ, মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন, লেখক অরূপ রাহী, রাখাল রাহা, মাহবুব মোর্শেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, অধ্যাপক মির্জা তসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক রায়হান রাইন, লেখক ও নৃবিজ্ঞানী সায়েমা খাতুন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন, কবি সাখাওয়াত টিপু, সিনিয়র আইনজীবী তবারক হোসেইন, সুব্রত চৌধুরী, মানবাধিকার কর্মী হানা শামস আহমেদ, চিকিৎসক ও সমাজকর্মী নায়লা জামান খান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোশরেকা অদিতি হক, সাংবাদিক সায়দিয়া গুলরুখ, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী রেজাউর রহমান লেনিন, লেখক ড. মারুফ মল্লিক, যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব পিটসবার্গ-এর পিএইচডি গবেষক, মাইদুল ইসলাম, নৃবিজ্ঞানী নাসরিন খন্দকার, কথাসাহিত্যিক এহ্সান মাহমুদ, লেখক ও গবেষক মাহা মির্জা, লেখক বাকি বিল্লাহ, রাজনৈতিক ভাষ্যকার মনির হায়দার, শিল্পী ও সংগঠক অমল আকাশ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আর রাজী, কথাসাহিত্যিক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, সঙ্গীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, গীতিকবি লতিফুল ইসলাম শিবলী, কবি ও উন্নয়নকর্মী ফেরদৌস আরা রুমী, মানবাধিকার কর্মী রোজিনা বেগম, প্রকাশক সাঈদ বারী, যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সাদাফ নূর, চলচ্চিত্র নির্মাতা মুহাম্মদ কাইউম, লেখক জিয়া হাশান, লেখক আসিফ সিবগাত ভূঞা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক জি এইচ হাবীব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোস্তফা নাজমুল মানছুর তমাল।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা