আট মাসে ৪৯৩ কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার

গত আট মাসে ৪৯৩ জন কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ওই সময়ের মধ্যে ১০১ জন কন্যাশিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে একক ধর্ষণের শিকার ৩২২ জন, গণধর্ষণের শিকার হয় ৭২ জন্য কন্যাশিশু, প্রতিবন্ধী কন্যাশিশু রয়েছে ৩৯ জন। প্রেমের অভিনব ফাঁদে ফেলে ৭০ জন কন্যাশিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও চলতি বছরের গত আট মাসে মোট ৩২৯ জন কন্যাশিশু যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এই সময়কালে পর্নোগ্রাফির শিকার হয়েছে ৩০ জন কন্যাশিশু। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বেসরকারি সংস্থা জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম ‘কন্যাশিশুর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন উপস্থাপন এবং প্রকাশনা গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন’ অনুষ্ঠানে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, এ সময়ে এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে দু’জন, অপহরণ ও পাচারের শিকার হয়েছে ১০৪ জন কন্যাশিশু। এর মধ্যে বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে ২৬০ জন আর বাল্যবিয়ে বন্ধ হয়েছে ২১টি। এ ছাড়া বাল্যবিয়ে হয়েছে কিন্তু অভিভাবকরা স্বীকারোক্তি দেয়নি এমন কন্যাশিশুর সংখ্যা এক হাজার ৫২৫ জন। তবে সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২২ সালের চেয়ে ২৩ সালে বাল্যবিয়ের সংখ্যা কমেছে ২৬ শতাংশ।
গত আট মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয় ৩৬ জন কন্যাশিশু। এ ছাড়া নানামুখী চাপে এ সময়ে আত্মহত্যা করে আরো ১৮১ জন। গত আট মাসে ১৩৬ জন কন্যাশিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এর অন্যতম কারণ ছিল পারিবারিক দ্বন্দ্ব, আগে থেকে পারিবারিক শত্রুতার জের, ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতন প্রভৃতি। দেশের ৭০টি দৈনিক পত্রিকা এবং মাঠপর্যায় থেকে এ তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। মোট ১৭টি ক্যাটাগরির আওতায় ৭০টি সাব-ক্যাটাগরিতে এসব তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে ৯টি সুপারিশও করেছে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি ড. বদিউল আলম মজুমদার, আয়োজন সহযোগী সংগঠন গুড নেইবারস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মাঈনুদ্দিন মাইনুল, সেভ দ্যা চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের হেলথ অ্যান্ড নিউট্রেশন সেক্টরের কর্মকর্তা ড. লিমা রহমান, চাইল্ড রাইটস স্পেশালিস্ট অ্যান্ড অ্যাক্টিভিস্ট টনি মাইকেল গোমেজ, এডুকো বাংলাদেশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি প্রমুখ।