১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভোলায় কয়েক গুণ বেড়েছে শুঁটকির বাজার

-


ভোলায় কয়েক বছর আগেও শুঁটকির এত চাহিদা ছিল না, এখন দিন দিন জনপ্রিয়তা বাড়ছে শুঁটকির। এখন শুঁটকির বাজার বেড়েছে কয়েক গুণ।
এ ছাড়া স্থানীয়ভাবে শুঁটকির উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয়ভাবে প্রস্তুতকৃত শুঁটকি যাচ্ছে- ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বগুড়া, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।


জেলায় বছরের অনান্য সময়ে শুঁটকি কেনাবেচা হলেও শীতের সময় এর উৎপাদন ও বিক্রি দুটোই বৃদ্ধি পায়। এই সময়ে পাইকারি ও খুচরা দোকানে শুঁটকির কদর বাড়ে। বাজারে শুঁটকির চাহিদা থাকায় দামও ভালো পাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। শুঁটকির আড়ৎদাররা জানান, ছুরি মাছের শুঁটকি কেজিপ্রতি ২৮০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিংড়ি কেজি ১৮০-৩০০, চেউয়া ১০০-২৫০, লইট্টা ৪০০-৫০০, মলা ৪৮০-৫০০, অনুফা ৩৫০-৪০০, পোয়া ৩০০-৩৫০, কাচকি ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শহরের নতুন বাজার, কালীনাথ রায়ের বাজারের শুঁটকির দোকানগুলোতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হচ্ছে কেনাবেচা। বর্তমানে প্রায় সব শ্রেণীর মানুষের খাবারের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে শুঁটকি। ভর্তাসহ নানান ধরনের খাবারে শুঁটকির ব্যবহার বাড়ছে। তবে দেশী মাছের শুঁটকির চাহিদার কথা জানান তারা।
জানা যায়, শীতে ইলিশের সঙ্কট থাকায় অনেক জেলেই বেকার হয়ে পড়েন। এ সময় তাই বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে শুঁটকি তৈরির কাজ বেছে নিয়েছেন অনেক জেলে। মাছ ধরার পাশাপাশি শুঁটকি তাদের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনছে। প্রথম দিকে সীমিত আকারে শুঁটকি হলেও সাম্প্রতিক সময়ে এর পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে। নভেম্বর থেকে শুরু করে মার্চ পর্যন্ত এখানে ব্যাপক আকারে শুঁটকি হয়ে থাকে।


শহরের কালীনাথ রায়ের বাজারের শুঁটকি বিক্রেতা লোকমান হাসেন বলেন, শীতে জেলায় শুঁটকির বাজার জমজমাট থাকে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ও জেলার বাইরে থেকে আসা শুঁটকি বিক্রি করেন তারা। দৈনিক এসব প্রতিষ্ঠানে হাজার-হাজার টাকার শুঁটকি বিক্রি হয়। অপর ব্যবসায়ী রফিক মিয়া বলেন, কয়েক বছর আগেও ভোলায় শুঁটকির এত চাহিদা ছিল না। কিন্তু এখন এর চাহিদা বেড়েছে। দাম বেশি হওয়ায় তারা লাভবান হচ্ছেন।
নতুন বাজারের শুঁটকি বিক্রেতা নুর ইসলাম জানান, তার এখানে অনুফা, বদর ছুরি, পোয়া, লাইট্টা, চিংড়ি, লাল চেউয়া, কাচকি, মলমদা বেশি বিক্রি হয়। শীতে অনান্য মাছের আমদানি কম থাকায় শুঁটকি বেশি বিক্রি হয়।


এদিকে জেলার চরফ্যাসন উপজেলার ঢালচর ইউনিয়নের পূর্ব ঢালচর, কুকরি-মুকরি ইউপির চর পাতিলা ও মনুরা, চর মানিকা ইউনিয়নের চর কচ্ছপিয়া, হাজারিগঞ্জের চর ফকিরা এবং দুলার হাট থানার আশার চরে শুঁটকি উৎপাদন হয়ে আসছে বেশ কয়েক বছর যাবৎ। নতুন করে আসলামপুর ও চরমাদ্রাজ ইউনিয়নে শুঁটকি তৈরি হচ্ছে। এ ছাড়া মনপুরা উপজেলার দু’টি ইউনিয়নে শুঁটকি উৎপাদন চলছে প্রায় ১০ বছর ধরে। একইসাথে কক্সবাজার, কুয়কাটাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শুঁটকি জেলায় আসে।
চরফ্যাসন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন মিনার জানান, এখানে সাধারণত চেউয়া মাছের শুঁটকি বেশি হয়। এ ছাড়া রুপচাঁদা, লইট্টা, অনুফা, কাচকি মাছেরও শুঁটকি হয়। বিশেষ করে কুকরি-মুকরির চর পাতিলা, মনুরা, ঢালচরের পূর্ব ঢালচর শুঁটকির জন্য বিখ্যাত।
দুলারহাট মাছ বাজারের শুঁটকি আড়ৎদার মো: আব্বাস মিয়া বলেন, দুলারহাট মাছবাজার শুঁটকির জন্য এই অঞ্চলের সর্ববৃহৎ একটি বাজার। মৌসুমে এই বাজারে কয়েক কোটি টাকার শুঁটকি বেচাকেনা হয়। এখান থেকে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুঁটকি পাঠান তারা। কয়েক হাজার পরিবার সরাসরি এই খাতের সাথে জড়িত।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্ল্যাহ জানান, জেলার চরফ্যাসন ও মনপুরা উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে শুঁটকি উৎপাদন হয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে এর উৎপাদন বেড়েছে। ৮ থেকে ৯ হাজার মানুষ এই খাতের সাথে জড়িত। দিন-দিন জনপ্রিয় হচ্ছে শুঁটকি। এতে জেলেরাও লাভবান হচ্ছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement
গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২ বিল দখলের চেষ্টা, জেলা ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি ‘শাহাদাতের তামান্নায় উজ্জীবিত হয়ে কাজ করলে বিজয় অনিবার্য’ কারাগারে নারী হাজতিকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, প্রধান কারারক্ষীসহ ৩ জনের বদলি প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে ঢুকে আত্মঘাতী হামলার হুমকিদাতা গ্রেফতার প্রেম যমুনার ঘাটে বেড়াতে যেয়ে গণধর্ষণের শিকার, গ্রেফতার ৫ ‘ব্যাংকিং খাতের লুটপাটের সাথে সরকারের এমপি-মন্ত্রী-সুবিধাবাদী আমলারা জড়িত’ ইরানের সাথে ‘উঁচু দরের জুয়া খেলছে’ ইসরাইল!

সকল