২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

সরকারিতে হুড়োহুড়ি বেসরকারিতে ফাঁকা

নতুন শ্রেণীতে ভর্তি
-

নতুন বছরে নতুন শ্রেণীতে স্কুলের শূন্য আসনে ভর্তিতে পরীক্ষার পরিবর্তে এবারো হবে লটারি। সরকারি-বেসরকারি উভয় স্কুলেই শিক্ষার্থী ভর্তির লটারি অনুষ্ঠিত হবে আগামী সপ্তাহে। ইতোমধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ অনলাইনে আবেদন শেষ হয়েছে। আবেদনের পরিসংখ্যান বলছে স্কুলে ভর্তিতে সরকারি স্কুলকে যেভাবে অভিভাবকরা প্রাধান্য দিচ্ছেন বেসরকারি স্কুল সেই তুলনায় হিসাবের মধ্যেই রাখছেন না তারা। অর্থাৎ সরকারি স্কুলের জন্য এক প্রকার হুড়োহুড়ি চললেও বেসরকারি স্কুলের প্রায় ৭০ ভাগ আসনই থাকবে ফাঁকা। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) সূত্র বলছে সরকারি স্কুলের প্রতিটি আসনের বিপরীতে আবেদন জমা পড়েছে গড়ে ছয়টি। অপর দিকে বেসরকারি স্কুলে গড়ে প্রায় তিনটি আসনের বিপরীতে আবেদন জমা পড়েছে মাত্র একটি।

ইতোমধ্যে সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির আবেদন শেষ হয়েছে। সূত্র মতে সরকারি বিদ্যালয়ে আসনপ্রতি প্রায় ছয়জন করে আবেদন জমা দিয়েছে। আর বেসরকারি বিদ্যালয়ে সাড়ে তিন আসনে একজন শিক্ষার্থী আবেদন করেছে। তার মধ্যেও প্রায় ৭০ হাজার আবেদনকারী এখনো আবেদন ফি জমা দেয়নি। এ দিকে বেসরকারি বিদ্যালয়ে আবেদনকারীর সংখ্যা আরো কমতে পারে। সরকারি বিদ্যালয়ে এক ধরনের ভর্তিযুদ্ধ সৃষ্টি হলেও বেসরকারিতে প্রায় ৭২ শতাংশ আসন খালি থাকছে বলে জানা গেছে। মাউশি সূত্রে জানা গেছে, এবার সারা দেশে ৫৫০টি সরকারি বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত ১ লাখ ৭ হাজার ৮৯টি শূন্য আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়া হবে। আর দুই হাজার ৮৫২টি বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি নেয়া হবে ৯ লাখ ২৫ হাজার ৬৬টি আসনে। ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণীতে ভর্তির অনলাইন আবেদন গত ১৬ নভেম্বর বেলা ১১টা থেকে শুরু হয়ে মঙ্গলবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত জমা শেষ হয়। এর মধ্যে যারা আবেদন করেছে তাদেরও বুধবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত আবেদন ফি জমা দিতে পেরেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য সারা দেশে ৫৫০টি বিদ্যালয়ে ১ লাখ ৭ হাজার ৮৯টি শূন্য আসনে মোট ৬ লাখ ২৬ হাজার ৫৯টি আবেদন জমা পড়েছে। সে হিসাবে প্রতি আসনে আবেদনকারীর সংখ্যা ৫ দশমিক ৮৪ জন। লটারির মাধ্যমে সব ক্লাসে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে।

অন্য দিকে দেশের ২ হাজার ৮৫২টি বেসরকারি বিদ্যালয়ে ৯ লাখ ২৫ হাজার ৬৬টি আসনে মাত্র ২ লাখ ৬০ হাজার ৯৩৩টি আবেদন জমা পড়েছে। সেই হিসাবে প্রতি সাড়ে তিনটি আসনে একজন মাত্র আবেদনকারী। এ স্তরে ৬ লাখ ৬৪ হাজার ১৩৩টি আসন খালি থাকছে। শিক্ষার্থী শূন্য থাকছে মোট আসনের প্রায় ৭২ শতাংশ। আগামী ১২ ডিসেম্বর সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির লটারি অনুষ্ঠিত হবে। বেসরকারি স্কুলের লটারি ১৩ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মাউশির উপ-পরিচালক (বিদ্যালয়) মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন বলেন, সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আসনের কয়েক গুণ আবেদনের বিপরীতে বেসরকারি স্কুলে তুলনামূলক অনেক কম হয়েছে। সে কারণে বেসরকারির অনেক আসন খালি থাকবে। সরকারিতে এক ধরনের ভর্তিযুদ্ধ সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, বেসরকারি স্কুলে বেশির ভাগ আবেদন ঢাকা মহানগরসহ অন্যান্য জেলা শহরের বড় বড় বিদ্যালয়ে এসেছে। অনেক বিদ্যালয়ে একজনও আবেদন করেনি। অনেকে আবার বর্তমান প্রতিষ্ঠান ছাড়তে চাচ্ছে না বলে আবেদন করেনি। করোনার কারণে অনেকে পড়ালেখায় পিছিয়ে গেছে বলেও কেউ কেউ পুরনো স্কুলে থাকতে চাচ্ছে বলে অন্য বিদ্যালয়ে যাচ্ছে না। এসব কারণে এবার বেসরকারি স্কুলে আবেদন সংখ্যা কমে যেতে পারে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা। স্কুলে ভর্তির নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, এবারো প্রথম শ্রেণীতে ভর্তির জন্য একজন শিক্ষার্থীর বয়স ন্যূনতম ছয় বছরের বেশি হতে হবে। প্রথম শ্রেণীতে ছয় বছরের বেশি ধরে অন্যান্য শ্রেণীতে ভর্তির বয়স নির্ধারিত হবে। যেমনÑ ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তির জন্য একজন শিক্ষার্থীর বয়স প্রথম শ্রেণীর বয়স হিসাবে আনতে হবে। তবে শিক্ষার্থীর বয়সের ঊর্ধ্বসীমা সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করবে বলেও নীতিমালায় জানানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীর ভর্তির সর্বোচ্চ বয়স নির্ধারণ করবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement