পুলিশ সরিয়ে দিলে আ’লীগ কতক্ষণ টিকবে সেটাই বড় প্রশ্ন

বিএনপির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, আওয়ামী লীগ কখনোই গণতন্ত্র ও গণমানুষের অধিকারে বিশ্বাস করে না। বিএনপির দুর্ভাগ্য হলো, আওয়ামী লীগের মতো একটি একদলীয় সরকারকে বিশ্বাস করা। গণতান্ত্রিক সরকারের সময়ের আন্দোলন এবং স্বৈরাচার, একদলীয় সরকারের সময়ের আন্দোলন কখনোই একরকম হয় না। পুলিশ প্রশাসন যদি সরিয়ে দেয়া হয়, তাহলে আওয়ামী লীগ কতক্ষণ টিকে থাকতে পারবে, সেটাই এখন একটা বড় প্রশ্ন। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজশাহী নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় বিএনপির মিডিয়া সেল আয়োজিত ‘জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন-পরবর্তী জাতীয় সরকার ও দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট জাতীয় সংসদ অপরিহার্য’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রুমিন ফারহানা বলেন, গত ১০ বছরে সমাজ ও মূল্যবোধের মতো বিষয়গুলো ধ্বংস করা হয়েছে। সরকারের হস্তক্ষেপে সব রাষ্ট্রীয় ও সাংগঠনিক প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করা হয়েছে। এ অবস্থায় সমাজ, আইনশৃঙ্খলা ও সংবিধানের মৌলিক পরিবর্তন কেবল ক্ষমতার পরিবর্তন হলে হবে বলে বিএনপি বিশ্বাস করে না। এ জন্য পুরো রাষ্ট্রের মেরামত দরকার।
তিনি বলেন, স্বৈরাচারী সরকার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয়করণ করতে চায়। এজন্য তারা ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ চায় না। এক কক্ষবিশিষ্ট সংসদের চেয়ে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ ভারসাম্য রক্ষা করতে অনেক বেশি কার্যকর। এক কক্ষবিশিষ্ট আইনসভায় কোনো দল যদি নির্বাচনে বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়, সে স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে উঠে। এজন্য দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার ধারণার সূত্রপাত। বিএনপি যদি দেশ পরিচালনায় আসে, তাহলে একসঙ্গে সবাই মিলে যেমন জনমতের সরকার গঠন হবে; তেমনি সমাজের জ্ঞানী-গুণী, পেশাজীবীদের নিয়ে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট একটি সংসদ তৈরি করবে।
জাতীয় সরকারের বিষয়ে ব্যারিস্টার রুমিন বলেন, রাজনীতিবিদরা আগামী নির্বাচন নিয়ে ভাবেন, রাষ্ট্রনায়করা আগামী ১০০ বছরে দেশ কোথায় যাবে তা নিয়ে চিন্তা করেন। দেশনায়ক তারেক রহমান জাতীয় সঙ্কট নিরসনে জাতীয় সরকার ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের বিষয়ে ভাবছেন। তিনি বলেন, দেশে আইনের শাসন, মানবাধিকার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ধ্বংস করা হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বিএনপি এবং মিত্র জোট যদি সরকার গঠন করতে পারে, তখন তাদের নিয়েই জাতীয় সরকার গঠিত হবে। নির্বাচনে মিত্র দলগুলো হারলেও সরকারে থাকবে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলটির মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। সঞ্চালনা করেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমন। এতে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফজলুল হক, কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক আব্দুল আলীম, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য আলী মাহমুদ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।