২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অর্থনীতি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার তেমন কারণ নেই : পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী

-

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেছেন, স্থানীয় বাজারে ডলারের ওপর চাপ কমানো, ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার বিদেশী উৎস থেকে ঋণ নিতে উদ্যোগ নিয়েছে। বৈশ্বিক সঙ্কটের কারণে পণ্য আমদানি ব্যাহত হওয়ায় মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, তবে দেশের অর্থনীতি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার তেমন কোনো কারণ নেই।
গতকাল রোববার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বেসরকারি খাতের দৃষ্টিতে ২০২১-২২ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের অর্থনীতির সামগ্রিক পর্যালোচনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরে আমরা প্রায় ১০ লাখ শ্রমিক বিদেশে পাঠাতে সক্ষম হয়েছি। ফলে আগামীতে রেমিট্যান্সপ্রবাহ আরো বাড়বে। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ পাট, চামড়া ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রভৃতি খাতের প্রতিটি থেকে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য রফতানি করতে সক্ষম হয়। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক বাজারে দেশের রফতানি প্রবাহ আরো বাড়াতে সম্ভাবনাময় সব খাতের ওপর আরো নজর দিতে হবে।
এতে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান ২০২১-২২ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের অর্থনীতির সার্বিক প্রেক্ষাপটের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি অর্থনীতিতে বৈশ্বিক সঙ্কট ও কোভিড মহামারীর প্রভাব, এলডিসি উত্তরণ, জাতীয় বাজেট ও মুদ্রানীতির বাস্তবায়ন অবস্থা, মুদ্রাস্ফীতি, বেসরকারি বিনিয়োগ, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান, কৃষি, উৎপাদন ও সেবা খাতের চিত্র তুলে ধরেন।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, বৈশ্বিক সঙ্কটের কারণে গত অর্থবছরে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে প্রায় সাড়ে ৯ শতাংশ এবং আমাদের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৪০ দশমিক ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ ছাড়াও কোভিড মহামারীর কারণে জিডিপিতে বেসরকারি বিনিয়োগের হার ২৩ দশমকি ৭০ শতাংশ নেমে এসেছে। যদিও গত অর্থবছরে আমাদের রফতানি প্রথমবারের মতো ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছিল। ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, বৈশ্বিক সঙ্কটের কারণে আন্তর্জাতিক সাপ্লাই চেইন প্রভাবিত হওয়ায় স্থানীয় বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর ঊর্ধ্বমূল্য মূল্যস্ফীতিকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন দেশের সাধারণ জনগণ। এ অবস্থা নিরসনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিলাসবহুল ও অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মো: শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ জ্বালানি সঙ্কটে ভুগছে। আমাদের টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে অফশোর গ্যাস কূপ অনুসন্ধানকার্যক্রম বাড়ানোর পাশাপাশি বাপেক্সকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে বৈশ্বিক অর্থনীতির অবস্থা খুব ভালো নয়। সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। তারপরও আমাদের রিজার্ভ সাড়ে ৫ মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে সক্ষম, যা বেশ স্বস্তিদায়ক। সরকার বিষয়গুলোকে যথেষ্ট দক্ষতার সাথে মোকাবেলার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মো: হাবিবুর রহমান বলেন, মুদ্রাপ্রবাহ স্থিতিশীল রাখার মাধ্যমে অর্থনীতির গতিধারা অব্যাহত রাখতে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন করে আসছে। বিশেষত কোভিড মোকাবেলায় বেশ কিছু প্রণোদনা প্যাকেজ দেয়া হয়েছে।
সেমিনারে বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আমাদের ম্যানুফেকচারিং খাতে গ্যাসের চাপ উল্লেখযোগ্য হারে কম থাকায় শিল্পকারখানায় পণ্য উৎপাদন মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ায় ব্যবসায় ব্যয় বাড়বে। মূল্যস্ফীতিও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে।


আরো সংবাদ



premium cement