২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঢাকা মেডিক্যালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি

ভোগান্তিতে রোগীরা
-

চিকিৎসককে মারধরের ৪৮ ঘণ্টা পার হলেও জড়িতদের আইনের আওতায় না আনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এর আগে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়া হয়েছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা: মহিউদ্দিন জিলানী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে প্রায় ২০০ ইন্টার্ন চিকিৎসক একযোগে কর্মবিরতিতে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা। হাসপাতালের সিনিয়র ও জুনিয়র চিকিৎসকদের তুলনায় রোগী অনেক গুণ বেশি হওয়ায় এই ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।
ডা: জিলানী বলেন, গত ৮ তারিখ বিনা কারণে আমাদের ইন্টার্ন চিকিৎসক সাজ্জাদ হোসাইনকে শহীদ মিনার এলাকায় মারধর করা হয়। এ ঘটনায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছিল। থানায় জিডিও করা হয়েছে। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরেও পুলিশ কোনো কিছুই করেনি। তাই আগের দেয়া কর্মসূচি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে প্রায় ২০০ ইন্টার্ন চিকিৎসক কর্মবিরতি শুরু করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের দাবি ছিল ওই চিকিৎসককে যারা মারধর করেছে তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা। এছাড়া ভবিষ্যতে শহীদ মিনার এলাকায় এমন ঘটনা আর যেন না ঘটে সেটা নিশ্চিত করা।


হাসপাতাল থেকে একটি সূত্র জানায়, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা দুপুর থেকে কর্মবিরতিতে আছেন। হাসপাতালে জুনিয়র ও সিনিয়র চিকিৎসকরা রোগীদের চিকিৎসা দিলেও রোগীর তুলনায় তা পর্যাপ্ত নয়। যার কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জরুরিভাবে পরিচালকের কক্ষে বৈঠকে বসেন।
ঢাকা মেডিক্যালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: নাজমুল হক জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে যাবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। কারণ ইন্টার্ন চিকিৎসকের মারধরকারীকে এখনো পুলিশ খুঁজে পায়নি। তাদের দাবি ৪৮ ঘণ্টা আলটিমেটাম শেষ হলেই তারা কর্মবিরতিতে যাবে। তবে আমরা সর্বাত্মক তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি।
এদিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ প্রিন্সিপাল অধ্যক্ষ টিটু মিয়া জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় কেউ এখনো শনাক্ত হয়নি। আলটিমেটামের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের কর্মবিরতিতে যাওয়ার কথা। তবে ইন্টার্নদের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যের ডিজি সবাই আলোচনা করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে।
এ বিষয়ে পুলিশের রমনা জোনের ডিসি মো: শহীদুল্লাহ জানান, শহীদ মিনারে ইন্টার্ন চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় খুবই গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সিসি ফুটেজগুলো পর্যবেক্ষণ এবং হামলাকারীকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাত ৯টায় ভুক্তভোগী সাজ্জাদ শহীদ মিনারে বসে থাকা অবস্থায় ঢাবির লোগো সংবলিত টিশার্ট গায়ে দেয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী আইডি কার্ড দেখতে চেয়ে তাকে মারধর করে। কানে থাপ্পর দেয়ায় কানের পর্দার আশপাশে রক্তক্ষরণ হয়। ফলে ডান কানে কম শুনতে পাচ্ছেন ভুক্তভোগী সাজ্জাদ। নাকে আঘাত লাগার কারণে প্রচুর রক্তক্ষরণও হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ডা: সাজ্জাদ হোসেন মঙ্গলবার শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement