২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রূপগঞ্জে জমি আত্মসাৎ চেষ্টায় ভুতুড়ে জালিয়াত চক্র

-

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আমলাবো মৌজার কালী গ্রামটি ঢাকা বাইপাস সড়কের পাশে হওয়ায় জমির দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। এতে ভূমি ব্যবসায়ীসহ নজর পড়েছে জালিয়াত চক্রেরও। অভিযোগ রয়েছে, জমি মালিকদের অনেকেই নিরীহ ও সংখ্যালঘু হওয়ায় একটি জালিয়াত চক্র সেখানে সক্রিয়। তারা ছদ্মবেশে ভিন্ন ভিন্ন দলিলে লোকজনের জমি আত্মসাতের পাঁয়তারা করে আসছে। শুধু তা-ই নয়, জালিয়াতরা ছদ্মনাম ব্যবহার করে বন্ধ রাখা মোবাইল নম্বর ও দূরের জেলার নাম-ঠিকানাসহ ভুয়া দাতার মাধ্যমে দলিল বানিয়ে জমি আত্মসাৎ করে আসছে। ফলে বাস্তবে তাদের অস্তিত্ব পাচ্ছে না ওই সব নিরীহ পরিবার ও তদন্তকারী কর্মকর্তারা। কিন্তু ভূমি অফিস থেকে নামজারি কেটে নিতে ভুতুড়ে আবেদনকারীরা রয়েছে সক্রিয়। ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে মূল জালিয়াত চক্র।
রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের কালী এলাকার মৃত শরৎ চন্দ্র দাসের ছেলে অমল চন্দ্র দাস, একই পরিবারের বলরাম চন্দ্র দাসের ছেলে বিমল চন্দ্র জানান, তারা শত বছর ধরে বংশপরম্পরায় পৈতৃক ওয়ারিশ ও ক্রয়সূত্রে আমলাবো মৌজার বিগত সিএস ও এসএ ৩০৯, ৪৭৩, ৫০৫, আরএস ৩৮৪, ৬৮৬, ৭৪০ দাগে মোট ৮২ শতাংশ জমির ওয়ারিশসূত্রে মালিক হয়ে ভোগদখলে আছেন। এমনকি তাদের নামে খাজনা খারিজ বহাল রয়েছে। কিন্তু একটি জালিয়াত চক্র নানা কৌশলে তাদের জমি আত্মসাতের চেষ্টা করে আসছে। তারা ভুয়া দাতা ও দলিলের মাধ্যমে ভূমি অফিস থেকে নামজারি কেটে নেয়ার চেষ্টায় পরপর তিনবার আবেদন করেছে। কিন্তু আবেদনপত্রে দেয়া নাম-ঠিকানা ও সংশ্লিষ্ট দলিল যাচাই করলে এর কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এমনকি আবেদনকারী জালিয়াত চক্রের হোতা নাটোর জেলার শের মোহাম্মদ সরকারের নামে আরো চারটি ভুয়া দলিলসহ কোনোটারই অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় প্রকৃত জমি মালিক হয়েও জমি হারানোর শঙ্কায় ভুগছেন চারটি নিরীহ সংখ্যালঘু পরিবার। তারা ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে। আবার ভূমি অফিস বারবার তাদের দরখাস্ত গ্রহণ করছে রহস্যজনকভাবে। এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন অমল চন্দ্র দাস। এ ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলা করেছেন পরিবারটি।


এ দিকে ভুয়া মালিক সেজে আবেদনকারী শের মোহাম্মদ সরকারের বর্ণিত ঠিকানা নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানা ধারাবারিয়া ইউনিয়নের শিধুলী এলাকার মৃত হায়তুল্লাহ সরকারের ছেলে বলা হলেও ওই ঠিকানায় তাকে পাওয়া যায়নি। কিন্তু এ নামে পরপর চারটি ভুয়া দলিল সৃজন করেছে জালিয়াতকারীরা। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসে লিখিত অভিযোগ জানালে তা তদন্ত করেন গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন সহকারী কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান। জানতে চাইলে তিনি বলেন, অমল চন্দ্র দাস গংয়ের নামে জমা খারিজ বহাল আছে। তবে একাধিকবার একটি পক্ষ জমিটির খারিজ পেতে আবেদন করেছে। কিন্তু পরে আর কেউ যোগাযোগ করেনি। ধারণা করা হচ্ছে কোনো জালিয়াত চক্র এ কাজে জড়িত রয়েছে। তদন্ত চলছে, জালিয়াতি প্রমাণিত হলে এসব আবেদন বাতিল করা হবে।
অন্য দিকে জালিয়াতকারীদের দেয়া ১৯৬৩ সালের ১৪৫২০ নম্বর সাব কবলা দলিলে রাজশাহীর সদর সাব রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল লেখক রুহুল আমিনের মাধ্যমে তল্লাশি করা হলে এসব দলিলের কোনো হদিস পাননি সেখানকার কর্মকর্তারা। এ মর্মে তাদের পাঠানো প্রতিবেদনে রূপগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসকে অবহিত করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, বালাম বইয়ের সঠিক তথ্য গোপন রেখে শরৎ চন্দ্র ও বলরাম চন্দ্র দাসের নাম বসিয়ে ওই প্রতারক চক্র জমি আত্মসাতের চেষ্টা করেছে। তবে তদন্তে জালিয়াতির প্রমাণ মিললেও কারা এ কাজে জড়িত তা খুঁজে পায়নি কেউ। এ দিকে ভুয়া জমি মালিকানার দাবিদার অভিযুক্ত শের মোহাম্মদের আবেদনপত্রে উল্লিখিত মুঠোফোনে (০১৭১৯৮৯০৪২৮) যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এসব বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতিকুল ইসলাম বলেন, জমি মালিকদের এ ধরনের অভিযোগ পেলে তা দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। কারা এমন কাজে জড়িত তা খুঁজে বের করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সাথেপ্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ গ্যাস বিতরণে সিস্টেম লস ২২ শতাংশ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশে নেমে এসেছে : নসরুল হামিদ গণকবরে প্রিয়জনদের খোঁজ কক্সবাজারে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, স্বজনদের হাসপাতাল ঘেরাও বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিকসহ কার্গো জাহাজডুবি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশকে ‘নেট সিকিউরিটি প্রোভাইডার’ হিসেবে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি রাজশাহীতে টানা তাপদাহ থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা শরীয়তপুরে তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ জামায়াতের এক শ্রেণিতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী নয় : শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নজিরবিহীন দুর্নীতির মহারাজার আত্মকথা

সকল