২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

রাবি ক্যাম্পাসে নেটওয়ার্ক ভোগান্তিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

-

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ। প্রায়ই তার গ্রামের আত্মীয়স্বজন, বন্ধুদের কাছ থেকে অভিযোগ পান ফোনে পাওয়া যায় না তাকে। বেশির ভাগ সময় বন্ধ থাকে ফোন। তবে তিনি বলছেন, কখনো ফোন বন্ধ রাখেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এ শিক্ষার্থী বলছেন, ‘ক্যাম্পাসে নেটওয়ার্ক এত বাজে যেটা খুবই দুঃখজনক। ডাটা চালু করলেও অনেক সময় চালু হয় না, হলেও কোনো প্রয়োজনীয় কাজ করতে পারি না। ক্লাস রুমের ভেতরে তো ইমার্জেন্সি নেটওয়ার্ক। এত দুর্বল নেটওয়ার্ক, তা ধারণার বাইরে।’
এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন শিক্ষকরাও। বিশ্ববিদ্যালয়টির ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কনক বলেন, ক্যাম্পাসে ফোন নেটওয়ার্ক সমস্যা খুবই প্রকট আকার ধারণ করেছে। চালু থাকা অবস্থায় অনেকেই ফোনে পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন। যদিও আমি কখনো ফোন বন্ধ করি না। আবার কথা বলতে বলতে দেখি কল কেটে গেছে, ফোনে নেটওয়ার্কই নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক সাদিকুল ইসলাম সাগর বলছেন, তিনি নিজে ইন্টারনেট ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারে কথাই বলতে পারেন না। অনেক সময় ফোনেও কথা বলা যায় না।
ঘটনা অনুসন্ধানে দেখা যায়, এমন অভিযোগ দিচ্ছেন প্রায় সব শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মূলত ক্যাম্পাস থেকে টাওয়ার সরিয়ে নেয়ার ফলে সবাইকেই এই ভোগান্তির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। তবে সমস্যার শুরু হয় আরো বছর দেড়েক আগে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ছাদ থেকে ফোন অপারেটরগুলো টাওয়ার খুলে নিয়ে যায়। ভবনটির নির্মাণকাজের কারণে তখন টাওয়ারগুলো খুলে নেয়া হয়। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ক্যাম্পাসে অর্ধ লাখের কাছাকাছি জনসংখ্যার জন্য কোনো টাওয়ার নেই। মাঝে করোনা মহামারীর কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সমস্যা টের পাওয়া না গেলেও খোলার পর নেটওয়ার্ক নিয়ে ভোগান্তির শুরু হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার।
এদিকে ভোগান্তি নিরসনে সংশ্লিষ্ট ফোন অপারেটরগুলোর সাথে আলোচনা করেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এখন থেকে বিল্ডিংয়ের ওপর টাওয়ার না করে সরাসরি ভূমিতে টাওয়ার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রশাসনের করা কমিটি প্রধানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালামকে। তিনি জানান, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনে আগে টাওয়ারগুলো স্থাপন করা হয়েছিল। নির্মাণ কাজের জন্য সেখান থেকে টাওয়ারগুলো সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সাথে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে আপত্তির একটা বিষয় ছিল। এখন ভূমি থেকে টাওয়ার স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর মাধ্যমে দ্রুত সমাধান হবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মো: জাহিদ আলী বলেন, ‘নেটওয়ার্ক সমস্যা সমাধানে অপারেটরগুলোর সাথে কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান হলের পুকুরের কোনায় তাদের জন্য আলাদা জায়গা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। সেখানে বাংলালিংক, রবি, টেলিটক ল্যান্ড টাওয়ার করবে। আর জিপি আলাদা করে জায়গা চাওয়ায় বিষয়টা এখনো সমাধান হয়নি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মোবাইল অপারেটরগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আলোচনা করে জায়গা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এখন তারা যেকোনো মুহূর্তে কাজ শুরু করতে পারে। আর একতলা স্থাপনা করে সেখানেই টাওয়ার বসাতে খুব বেশি সময় অপেক্ষা করার দরকার হবে না শিক্ষার্থীদের।


আরো সংবাদ



premium cement