২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসির ছায়া সংসদ

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন বেশি গ্রহণযোগ্য ছিল: শামসুল হুদা

ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসির বিতর্কে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন অতিথিরা -

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এ টি এম শামসুল হুদা বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাজনৈতিক ব্যবস্থার জন্য সুখকর না হলেও এ দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোই অধিকতর গ্রহণযোগ্য হয়েছিল। বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠন আইন সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রস্তাবিত খসড়া আইনে অনেক অপূর্ণতা রয়েছে। আপাতত দৃষ্টিতে মনে হয় এটি শুধু সার্চ কমিটি গঠনের জন্য। সত্যিকার অর্থে বর্তমান সংসদে জনপ্রতিনিধিত্ব নেই, তাই প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে এই প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সবার মতামতের ভিত্তিতে খসড়া আইনটি চূড়ান্ত করা উচিত। সর্বপোরি এই আইনটি যাতে জনগণের নিকট গ্রহণযোগ্য হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। একটি ভালো আইনের জন্য প্রয়োজনে সময় নেয়া যেতে পারে। তাড়াহুড়া করে ত্রুটিপূর্ণ আইন প্রণয়ন কারো জন্যই কল্যাণকর হবে না। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতা ও অযোগ্যতা সুষ্পষ্ট রূপরেখা থাকতে হবে। যাদের সম্পর্কে অভিযোগ রয়েছে তাদের বিবেচনায় না নেয়া উচিত। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনাররা কোনো দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়লে তাদের আইনানুগ বিচার হওয়া উচিত। কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়, তাই কোন বিশেষ পদধারী ব্যক্তির অপরাধের বিচারের জন্য ইনডেমনিটি থাকা উচিত নয়। বর্তমান নির্বাচন কমিশন সদিচ্ছা থাকলে ভালো নির্বাচন করতে পারত। তাদের পারফর্ম্যান্স সন্তোষজনক নয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাজনৈতিক ব্যবস্থার জন্য সুখকর না হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচন অধিকতর গ্রহণযোগ্য হয়েছে। গতকাল শনিবার ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসির আয়োজনে এফডিসিতে ‘গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন রাজনৈতিক দলের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করছে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এ টি এম শামসুল হুদা প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। সভাপতির বক্তব্যে তিনি নির্বাচনকালীন সরকারে অন্তর্ভুক্তির জন্য অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সাইয়িদ এবং ড. এ টি এম শামসুল হুদার নাম প্রস্তাব করেন।
হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ আরো বলেন, নির্বাচন কমিশন, বিচার ব্যবস্থা, প্রসাশন ও রাষ্ট্রীয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ওপর ভিন্নমতের রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থার অভাব রয়েছে। নির্বাচনকালে গ্রেফতার, মামলা, কালো টাকার ব্যবহার, পেশিশক্তি, ভিন্নমতের মানুষদের ওপর চাপ সৃষ্টি, প্রশাসনের পক্ষপাতিত্ব নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে তা বন্ধ করতে হবে। বর্তমান কে এম নুরুল হুদা কমিশন আইনের সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে ভালো নির্বাচন করতে পারত। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। তাই ভালো নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশনের দাবি জোরাল হচ্ছে। নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন হচ্ছে জনগণ, রাজনৈতিক দল ও প্রার্থী। নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা না থাকলে নির্বাচন ব্যবস্থা প্রশ্নের মুখোমুখি হয়। তাই আগামী নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে বিবেচনায় নেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসি নিয়োগের খসড়া আইনটির অনুলিপি কোথায় আছে এখনো কেউ বলতে পারছে না। যা জানার অধিকার জনগণের রয়েছে। অংশীজন, রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের যাচাই-বাছাই ও মতামত ছাড়া আইনটি পাস হলে এর গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তাই নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে নতুন আইন প্রণয়নে সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক মহলের সন্দেহ দূর করতে হবে। তাহলে অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ সুগম হবে। তা না হলে দেশে আবারো রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। যা মোটেই কাম্য নয়। বিজ্ঞপ্তি।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল