২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ড

লক্ষ্যমাত্রা পেরিয়ে ৯৬.৫০৬ মিলিয়ন কেজি উৎপাদন
দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী বেলগাঁও চা বাগান থেকে শ্রমিকরা চা-পাতা সংগ্রহ করছেন : নয়া দিগন্ত -

চা উৎপাদনে সর্বোচ্চ ৯৬.৫০৬ মিলিয়ন কেজি উৎপাদন করে নয়া রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৯ সালে রেকর্ড পরিমাণ ৯৬.০৬৯ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন করে রেকর্ড করেছিল দেশ। ২০২১ অর্থবছরে ১৬৭টি বাগানে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭৭ হাজার ৭৮০ মিলিয়ন কেজি। গত অক্টোবরেই এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে উৎপাদিত হয়েছিল ৭৯ হাজার ৩৩৩ মিলিয়ন কেজি।

মাসওয়ারি গত জানুয়ারিতে .২৮৬ মিলিয়ন, ফেব্রুয়ারিতে .০১৯ মিলিয়ন, মার্চে ১.৬৮১ মিলিয়ন, এপ্রিলে ৩.৯৩২ মিলিয়ন, মেতে ৬.১৫১ মিলিয়ন, জুনে ১৩.৩৫৪ মিলিয়ন, জুলাইয়ে ১২.৩৩৮ মিলিয়ন, আগস্টে ১৪.৩৮৭ মিলিয়ন, সেপ্টেম্বরে ১২.৬০৭ মিলিয়ন, অক্টোবরে ১৪.৫৭৮ মিলিয়ন, নভেম্বরে ১০.২৪১ মিলিয়ন ও ডিসেম্বরে উৎপাদন হয়েছে ৬.৯৩২ মিলিয়ন কেজি।

গত চা উৎপাদন বছরের শুরুতে নভেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত অনাবৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বৃহৎ ২২টি চা বাগানে চা উৎপাদন কিছুটা ঘাটতি হয়। এই সামান্য ঘাটতি না হলে ২০২১ সালে চা উৎপাদন শত মিলিয়ন ছাড়িয়ে যেত বলে মনে করা হচ্ছে। অপর দিকে চট্টগ্রামের ২২টি বাগানে ২০২০ উৎপাদন বছরে ১১ মিলিয়ন কেজির বেশি (এক কোটি ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৭৫৪ কেজি) উৎপাদন হলেও ২০২১ উৎপাদন বছরে প্রায় সাত মাসের অনাবৃষ্টির কারণে উৎপাদন হয়েছে ৯.৬৫ মিলিয়ন কেজি( ৯৬ লাখ ৫১ হাজার ৭১১ কেজি)।

বিভিন্ন সময়ে সরকারের দেয়া নির্দেশনার আলোকে ও বাংলাদেশ চা বোর্ডের সরাসরি তত্ত্বাবধানে দেশের ১৬৭টি চা বাগানে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে চা উৎপাদনে নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে বাংলাদেশ। চা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, চলমান বৈশ্বিক মহামারী করোনাকে জয় করেই এগিয়ে চলছে দেশের অন্যতম চা শিল্প। দেশের চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে প্রতি বছরই বিদেশে চায়ের রফতানির পরিমাণও বাড়ছে। এদিকে গত দুই মৌসুম ধরে করোনা সংক্রমণ ও প্রচণ্ড খরা উপেক্ষা করেও প্রতি বছর চায়ের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এগিয়ে যাচ্ছে চা শিল্প। গত দুই বছরের মতো চলতি (২০২১) বছরেও দক্ষিণ চট্টগ্রামে সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন একমাত্র চা বাগান বাঁশখালী চাঁদপুর বেলগাঁও চা বাগানসহ ১৬৭টি চা বাগান ও এস্টেটে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার ৭৭.৭৮০ মিলিয়ন কেজি ছাড়িয়ে উৎপাদন হয়েছে ৯৬.৫০৬ মিলিয়ন কেজি।

গত ২০২০ অর্থবছরে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৫.৯৪০ মিলিয়ন কেজি তা ছাড়িয়ে উৎপাদন হয়েছে ৮৬.৩৯৪ মিলিয়ন কেজি। অপর দিকে ২০১৯ অর্থবছরে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৪.১৪০ মিলিয়ন কেজি তা ছাড়িয়ে উৎপাদন হয়েছিল ৯৬.০৬৯ মিলিয়ন কেজি। গত বছরের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত চট্টগ্রামে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এ অঞ্চলের ২২টা চা বাগানে উৎপাদনে কিছুটা বিঘœ ঘটে। সিটি গ্রুপের বাঁশখালী বেলগাঁও চা বাগানের ম্যানেজার আবুল বাসার জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় তার বাগানে ২০২১ উৎপাদন বছরে তিন লাখ তিন হাজার ১৬০ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে । তাদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল তিন লাখ ৪০ হাজার কেজি।

এদিকে চট্টগামের উদালিয়া চা বাগানের ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম জানান, তার বাগানে এবার উৎপাদন হয়েছে ৮ লাখ ৮৬ হাজার ৮৮২ কেজি অথচ গত বছর উৎপাদন হয়েছে ১০ লাখ ৬১ হাজার ৩৯০ কেজি। তিনি জানান, বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে এবার গতবারের তুলনায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের ২২টি বাগানে গড়ে ১৫.৩৩ শতাংশ চা উৎপাদন কম হয়েছে। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগ ও নির্দেশনা মোতাবেক বর্তমানে দেশে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি করার পাশাপাশি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে চা রফতানি করার যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশ চা বোর্ড গ্রহণ করেছেন নানামুখী উন্নয়নকার্যক্রম, এই কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে প্রতিটি বাগানে প্রতি বছর কমপক্ষে আড়াই শতাংশ করে চা বাগান বর্ধিত করা আর সে জন্য উন্নত মানের চারা প্রদান ও পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ আনুষঙ্গিক সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করায় প্রতি বছরই এখন চা বাগানের পরিধি ও উৎপাদন দুটোই বাড়ছে।

প্রতি বছর গড়ে প্রতি হেক্টরে চা উৎপাদন হয় এক হাজার ৫০০ কেজি অপর দিকে সমপরিমাণ জমিতে ইস্পাহানি, ফিনলে, ডানকানসহ বেশ কিছু বাগানে দুই হাজার ৫০০ কেজি থেকে তিন হাজার কেজি উৎপাদন ছাড়িয়ে যায়।
এদিকে চা চাষের পরিধি ও উৎপাদন বৃদ্ধির কর্মযজ্ঞে পিছিয়ে নেই দক্ষিণ চট্টগ্রামের একমাত্র চা এস্টেট বাঁশখালীর চাঁদপুর বেলগাঁও ।
চা বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী জানা গেছে, দেশে মোট নিবন্ধনকৃত ১৬৭টি টি এস্টেট ও চা বাগান রয়েছে। তাতে সর্বমোট দুই লাখ ৭৯ হাজার ৫০৬.৮৮ একরে চা উৎপাদন হয়ে আসছে। এর মধ্যে মৌলভী বাজারে রয়েছে। ৭৬টি এস্টেট ও ১৫টি চা বাগান (এক লাখ ৫৬ হাজার ১৯১.৯৪ একর), হবিগঞ্জ জেলায় রয়েছে ২২টি টি এস্টেট ও তিন চা বাগান (৫৪ হাজার ১৬৪.১৬ একর), সিলেট জেলায় রয়েছে ১২টি টি এস্টেট ও ৭টি চা বাগান (২৮ হাজার ৯৩৬.৩২ একর), চট্টগ্রাম জেলায় রয়েছে ১৮টি টি এস্টেট ও ৩টি চা বাগান (৩৪ হাজার ৫৬০.৪৫ একর), রাঙ্গামাটি জেলায় রয়েছে একটি টি এস্টেট ও একটি চা বাগান (৭৯৪.৯৪ একর), পঞ্চগড় জেলায় রয়েছে ৮টি চা বাগান (৪ হাজার ৮১৮.২৯৫ একর) এবং ঠাকুরগাঁওয়ে রয়েছে একটি চা বাগান (৪০.৭৭ একর)।

 


আরো সংবাদ



premium cement
গাজায় সাহায্য বাড়াতে ইসরাইলকে নির্দেশ আইসিজের দিল্লি হাইকোর্টে কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা খারিজ বস্ত্র-পাট খাতে চীনের বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ জামালপুরে সাব রেজিস্ট্রারকে হত্যার হুমকি মামলায় আ’লীগ নেতা গ্রেফতার গাজায় অনাহার যুদ্ধাপরাধ হতে পারে : জাতিসঙ্ঘ ‘প্রত্যেককে কোরআনের অনুশাসন যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে’ মতলব উত্তরে পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের শেষ ধাপের পরীক্ষা শুক্রবার লম্বা ঈদের ছুটিতে কতজন ঢাকা ছাড়তে চান, কতজন পারবেন? সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করলেন ভুটানের রাজা বছরে পৌনে ৩ লাখ মানুষের মৃত্যু দূষণে

সকল