শিল্পকলার ডিজি লাকীকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ
বললেন বিলে আমার সই নেই বেশির ভাগই অপপ্রচার- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
দুর্নীতির অভিযোগে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলীকে প্রায় ৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রোববার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এ দিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বের হয়ে যাওয়ার সময় লাকী সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়ায় বলেন, কোনো বিলে আমার সই নেই। অভিযোগ যা এসেছে, তার বেশির ভাগই অপপ্রচার।
গতকাল সকাল ১০টার দিকে লিয়াকত আলী লাকী দুদক কার্যালয়ে হাজির হন। এর কিছু সময় পরে দুদক উপপরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়ার সমন্বয়ে গঠিত টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে লাকী সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগ যা এসেছে, তার বেশির ভাগই অপপ্রচার। আপনারা বস্তু‘নিষ্ট সাংবাদিকতা করবেন বলে আশা করি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা ২৬ কোটি টাকা উত্তোলনের কথা বলছেন, সেটি হবে ২১ কোটি টাকা। এর মধ্যে আট কোটি টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। ১৩ কোটি টাকা বেতন-বোনাস, পৌরকর ও বিদ্যুৎ বিলসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় হয়েছে। এর মধ্যে দেড় কোটির মতো ভ্যাট-ট্যাক্সে জমা হয়েছে।
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়া, ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎসহ বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। গত ৬ জানুয়ারি তাকে তলবি নোটিশ দেয় দুদক। এর আগে ৫ জানুয়ারি অভিযোগ অনুসন্ধানে শিল্পকলা একাডেমির দুই অর্থবছরের বাজেট ও ব্যয় সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র তলব করে চিঠি দেয় দুদক। সেসব নথিপত্র এরই মধ্যে দুদকে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে শিল্পকলা একাডেমির ঢাকা কার্যালয়ে বরাদ্দ করা বাজেট ও ব্যয় সংক্রান্ত রেকর্ডপত্রসংবলিত নথির ফটোকপি এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে অব্যয়িত ৩৫ কোটি টাকা, ২০২১ সালের ৩০ জুনে ব্যয় করণ-সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র তলব করা হয়।
এ ছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান আয়োজন সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র সংবলিত নথির ফটোকপি, ২০১৯-২০২০ অর্থবছর থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত ব্যয় সংক্রান্ত বিভিন্ন ভাউচার-ক্যাশ বই এবং শিল্পকলা একাডেমি নামীয় সোনালী ব্যাংক (সেগুনবাগিচা শাখা) অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্টের কপি।
২ জানুয়ারি দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে দুই সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়। লিয়াকত আলী লাকীর বিরুদ্ধে অনিয়মের মাধ্যমে ২৬ কোটি টাকা তুলে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চুক্তিভিত্তিক এক কর্মকর্তাকে সচিবের দায়িত্ব দিয়ে এ অর্থ উত্তোলন করে নেন লিয়াকত আলী লাকীসহ একটি সিন্ডিকেট।
দুদকে দাখিল করা অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, ২০২১ সালের ৩০ জুন শিল্পকলা একাডেমির আগের সচিব নওশাদ হোসেন বদলি হলে সেদিনই নতুন আদেশ জারি করে একাডেমির চুক্তিভিত্তিক পরিচালক সৈয়দা মাহবুবা করিমকে সচিবের দায়িত্ব দেন লাকী। ৩০ জুন থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকালে প্রায় ২৬ কোটি টাকা বিভিন্ন কৌশলে উত্তোলন করা হয়। সরকারি বরাদ্দের অর্থ খরচ দেখাতেই এমন অনিয়ম আর দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয় বলে দুদকে দাখিল হওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা