২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
জীবনী পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্তির দাবি

নবাব সলিমুল্লাহ ব্রিটিশ ভারতীয় মুসলিম শিক্ষা ও রাজনীতির অগ্রদূত : মুসলিম লীগ

-

নবাব সলিমুল্লাহ মুসলমানদের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য নিজের নবাবী থেকে শুরু করে জীবন পর্যন্ত বাজি ধরেছেন। ১৯০৮ সালে অমৃতসরে মুসলিম লীগ সভায় নবাব সলিমুল্লাহ বলেছিলেন, যখন আমি দেখলাম আমার জাতি তথা হজরত মুহাম্মদ (সা:)-এর উম্মতরা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে তখন সিদ্ধান্ত নিলাম প্রয়োজনে নিজে ধ্বংস হব; কিন্তু এ জাতিকে রক্ষা করব ইনশা আল্লাহ। তিনি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তার কথা রাখার চেষ্টা করে গেছেন। রাজ্যশাসন, ক্ষমতা দখল তার রাজনীতির লক্ষ্য ছিল না, বরং তিনি নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন বেনিয়া ইংরেজ আর ব্রাহ্মণ্যবাদীদের শাসন-শোষণে রাজা থেকে ফকির বনে যাওয়া অশিক্ষিত মুসলমান জাতিকে ঐক্যবদ্ধ আর শিক্ষিত করার জন্য। মুসলমানদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে এবং রাজনৈতিকভাবে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে নবাব সলিমুল্লাহর উদ্যোগে ও প্রস্তাবে ১৯০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর ঢাকার শাহবাগে প্রতিষ্ঠিত হয় অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ। ১৯০১ সালে নবাব হওয়ার পরপরই ঢাকার প্রতিটি এলাকায় নৈশ বিদ্যালয় স্থাপনের নির্দেশ ছিল তার শিক্ষানুরাগী হিসেবে আত্মপ্রকাশের প্রথম ধাপ। নিরন্তরভাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রাজনীতি ও সামাজিক প্রতিযোগিতার উপযোগী করে গড়ে তোলার মানসে ১৯১২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি তোলেন ব্রিটিশ শাসকদের কাছে। সায়মন কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত রিপোর্টে বিশ্ববিদ্যালয় করার মতো পর্যাপ্ত জায়গা নেইÑ এ রকম খোঁড়া যুক্তির জবাবে তিনি শাহবাগের গোটা বাগানবাড়িসহ আনুমানিক ৬০০ একর জায়গা দান করার যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে সুগম করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পথ। কিন্তু পরিতাপের বিষয়Ñ সেই বিশ্ববিদ্যালয় আজ নবাবকে এমনকি জন্মবার্ষিকী-মৃত্যুবার্ষিকীতেও স্মরণ করে না, অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতাকারীদের পালের গোদাকে জাঁকজমকের সাথে স্মরণ করা হয়। নতুন প্রজন্মকে নবাব সলিমুল্লাহ সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে জানানোর লক্ষ্যে পাঠ্যসূচিতে নবাব সলিমুল্লাহর জীবনী অন্তর্ভুক্তি অত্যাবশ্যক।
গতকাল দুপুরে উপমহাদেশে মুসলিম জাগরণের প্রাণপুরুষ, অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল (বর্তমান বুয়েট) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অসংখ্য এতিমখানা ও মাদরাসা প্রতিষ্ঠার মহানায়ক নবাব স্যার সলিমুল্লাহর ১০৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের উদ্যোগে, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে পল্টনের কার্যালয়ে বাদ জোহর আয়োজিত আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত মন্তব্য করেন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেনÑ দলীয় মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের আহ্বায়ক কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, দলীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন আবুড়ী, সহসভাপতি নজরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট জসীমউদ্দিন, অতি: মহাসচিব আকবর হোসেন পাঠান ও কাজী এ এ কাফী, ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার ওসমান গণি, সাংগঠনিক সম্পাদক খান আসাদ, প্রচার সম্পাদক শেখ এ সবুর, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আফতাব হোসেন মোল্লা, অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান, আব্দুল খালেক, নূর আলম প্রমুখ। সভা শেষে নবাব সলিমুল্লাহর রূহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। বিজ্ঞপ্তি।


আরো সংবাদ



premium cement