২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাজধানীর ৮০ ভাগ ভবনে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই

ঢাকা ওয়াসার কর্মকাণ্ড নিয়ে মতবিনিময় অনুষ্ঠান : নয়া দিগন্ত -

রাজধানীর ৮০ ভাগ আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান।
রাজধানীর কাওরান বাজারের ওয়াসা ভবনে চলমান কার্যক্রম নিয়ে গতকাল শনিবার সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ তথ্য জানান। সাংবাদিক প্রশ্নের জবাবে ওয়াসা এমডি বলেন, রাজউক আইনে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনে পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিধান রয়েছে। কিন্তু ঢাকার মাত্র ২০ শতাংশ ভবনে এ ব্যবস্থা রয়েছে। বাকি ভবনগুলোতে সিটি করপোরেশনের নালায় সরাসরি সংযোগ দেয়া রয়েছে। তাদের ছয় মাসের সময় দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এ সময়ের মধ্যে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা না করলে এসব নালা বন্ধ করে দেবে ডিএনসিসি। তিনি বলেন, এ অব্যবস্থাপনা দূর করতে ঢাকা ওয়াসা ২০১৬ সাল থেকে স্যুয়ারেজ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করেছে। রাজধানীর দাসেরকান্দি, নারায়ণগঞ্জের পাগলা, উত্তরা, রায়েরবাজার ও মিরপুরে পাঁচটি প্লান্ট স্থাপনের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে দাসেরকান্দির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ঢাকা ওয়াসা ২০২৭ সালের মধ্যে রাজধানীর শতভাগ এলাকাকে স্যুয়ারেজ নেটওয়ার্কের আওতায় আনার চেষ্টা করছে।
শীতকালে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পানির সঙ্কট দেখা দেয়, এমন প্রশ্নের জবাবে তাকসিম এ খান জানান, নদীতে পানি কমে যাওয়া এবং গভীর নলকূপের পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় শীতকালে কিছু এলাকায় পানির সমস্যা হয়। পানির পাম্পগুলোতে যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্য বিশেষ প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কোনো এলাকায় পানির সঙ্কট হলে তাৎক্ষণিকভাবে পানি সরবরাহে ওয়াসার গাড়ি প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সম্প্রতি সমবায় অধিদফতরের অডিটে ঢাকা ওয়াসার কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী সমবায় সমিতির ১৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তাকসিম এ খান জানান, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কার্যক্রম চলমান। ওয়াসার প্রধান শৃঙ্খলা কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
তাকসিম এ খান বলেন, ঢাকা ওয়াসার মূল লক্ষ্য পরিবেশবান্ধব, টেকসই ও গণমুখী পানি ব্যবস্থাপনা। এ লক্ষ্যে ‘ঘুরে দাঁড়াও ঢাকা ওয়াসা’ কর্মসূচির আওতায় নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। তারই পরিক্রমায় ঢাকা ওয়াসা এখন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে একটি রোল মডেল। বর্তমানে দৈনিক ২৬০-২৬৫ কোটি লিটার পানি চাহিদার পুরোটাই ঢাকা ওয়াসা সরবরাহ করছে। উৎপাদিত পানির শতকরা ৩৪ ভাগ ভূ-উপরিস্থ উৎস থেকে সংগ্রহ করা হয় জানিয়ে তাকসিম এ খান বলেন, বাকি ৬৬ ভাগ পানি ভূগর্ভের উৎস তথা গভীর নলকূপ হতে আসছে। ২০২৩ সাল নাগাদ ঢাকা শহরে সরবরাহকৃত পানির ৭০ ভাগ আসবে ভূ-উপরিস্থ পানির উৎস থেকে। অবশিষ্ট ৩০ ভাগ ভূগর্ভের তথা গভীর নলকূপ থেকে আসবে বলেও তিনি জানান। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সেবা সংস্থাগুলোর বার্ষিক কর্ম সম্পাদনের তালিকায় ঢাকা ওয়াসা প্রথম স্থান অধিকার করেছে বলেও জানান ওয়াসা এমডি। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ওয়াসার পরিচালক (উন্নয়ন) আবুল কাশেম, বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক উত্তম কুমার রায়, সচিব শারমিন হক আমির ও প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা নিশাত মজুমদার।


আরো সংবাদ



premium cement