২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ফৌজদারহাট-বায়েজিদ সড়ক ঝুঁকিমুক্ত করতে পুনরায় কাটা হবে পাহাড়

পাহাড় কেটে নির্মিত সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট-বায়েজিদ লিংক রোড : নয়া দিগন্ত -

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট-বায়েজিদ লিংক রোডের ষোলটি পাহাড় ঝুঁকিমুক্ত করতে পুনরায় কাটা হবে। ইতোমধ্যে এ ষোলটি পাহাড়কে পরিবেশসম্মতভাবে কাটার ডিজাইন চূড়ান্ত করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও চুয়েটের বিশেষজ্ঞ টিম। এ প্রস্তাবনা ইতোমধ্যে পরিবেশ অধিদফতরে জমা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস।
জানা যায়, ফৌজহারহাট-বায়েজিদ ছয় কিলোমিটারের লিংক রোড নির্মাণে কাটা হয় ১৬টি পাহাড়। একেবারে নতুন রাস্তাটি নির্মাণের জন্য পরিবেশ অধিদফতর থেকে আড়াই লাখ ঘন ফুট পাহাড় কাটার অনুমোদন নিয়ে সিডিএ ১০ লাখ ৩০ হাজার ঘনফুট পাহাড় কাটে। পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস, উপরিভাগের মাটি এবং ভূমির বাইন্ডিং ক্যাপাসিটি নষ্টসহ পরিবেশ-প্রতিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করার দায়ে গত বছরের ২৯ জানুয়ারি ১০ কোটি ৩৮ লাখ ২৯ হাজার ৫৫৩ টাকা জরিমানা নির্ধারণ করে পরিবেশ অধিদফতর। একইভাবে গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি আরেক শুনানিতে প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডকেও ৫ কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে পরিবেশ অধিদফতর। যদিও জরিমানার দুই মামলা আপিল শুনানিতে এখনো নিষ্পত্তি হয়নি।
পরে প্রকল্পের আগে কাটা ১৬টি পাহাড় ২২.৫ ডিগ্রি এঙ্গেলে কাটার প্রস্তাবনা দিলেও পরিবেশ অধিদফতর না করে দেয়। পরে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অনুমোদন চাওয়া হলেও ২২.৫ ডিগ্রি এঙ্গেলে পাহাড় কাটার সম্মতি মেলেনি। এরপর ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলো কাটা ও সংরক্ষণ কিভাবে করা হবে সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামতসহ প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশনা দেয় পরিবেশ অধিদফতর। এরপর সিডিএর প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। সিডিএর চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষের নির্দেশনায় পাঁচ সদস্যের এ কমিটিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের এক প্রকৌশলীকেও রাখা হয়। অন্যদের মধ্যে ছিলেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের দুই বিশেষজ্ঞ শিক্ষক। পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদন এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের বিশেষজ্ঞদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই পাহাড় কাটার বিষয়ে সিদ্ধান্তে নিয়েছিল সিডিএ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এ সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আসে। পরে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে প্রকল্প পরিচালক ও চুয়েটের দুই শিক্ষকের সমন্বয়ে চার সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি করা হয়। বিশেষজ্ঞ কমিটি তাদের প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে। মূলত চুয়েটের দুই শিক্ষকই পাহাড়গুলোর ব্যবস্থাপনার মূল পরিকল্পনা ও ডিজাইন তৈরি করেন।
সরেজমিনে ফৌজহারহাট-বায়েজিদ লিংক রোডে গিয়ে দেখা গেছে, বৃষ্টিতে পাহাড় ধস শুরু হওয়ায় দুর্ঘটনা রোধে গত ২১ এপ্রিল থেকে একপাশে আড়াআড়ি করে দেয়া আরসিসি ব্লকগুলো সরিয়ে নেয়া হয়েছে এবং যান চলাচল করছে।
সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, রোডটিতে কাটা ১৬টি পাহাড়কে নতুন করে পরিবেশসম্মত উপায়ে কাটার প্রস্তাবনা ও ডিজাইন প্রস্তুত করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদফতর থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার পর পাহাড়গুলো কাটার কাজে হাত দেয়া হবে। তিনি বলেন, উন্নত বিশ্বে যেভাবে পাহাড় ব্যবস্থাপনা করা হয়, সেভাবেই পাহাড়গুলোকে কাটা হবে। তা ছাড়া কিছু পাহাড়ে রিটেইনিং ওয়াল, কিছুতে জিও টেং, জিও ম্যাশ দিয়ে গ্রিন এনভায়রনমেন্ট তৈরি করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement