২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মাদকাসক্ত সন্তানদের হাতুড়ির আঘাতে রক্তাক্ত হলেন মা

-

মাদকাসক্ত ছেলেমেয়ের হাত থেকে বাঁচতে নিজের বাড়ি ছেড়ে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন একা হতভাগী মা। জীবিকা নির্বাহের জন্য ওই দোকানে পার্লার খুলে ছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে গিয়েও নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি। মাদকাসক্ত সন্তানদের হাতে হাতুড়ির নির্মম আঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় নার্গিস বেগম নামে ওই মাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে মোহাম্মদপুর থানার এ ব্লকের ২/২ লালমাটিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছেলে তানভীর আহম্মেদ ওরফে সোহেলকে (৩৭) আটক করেছে।
জানা গেছে, মোহাম্মদপুর থানার এ ব্লকের ২/২ লালমাটিয়া এলাকার বাসিন্দা নার্গিস আক্তার স্বামীর সম্পত্তিতে ছেলে তানভীর ও মেয়ে নাইমা আহমেদ শান্তার সাথে বসবাস করতেন। কিন্তু দুই সন্তানই ছিল মাদকাসক্ত। বাড়ি ভাড়ার টাকাই ছিল তাদের আয়ের উৎস। ভাড়াটিয়ারা ভাড়া দেয়ার পরপরই সন্তানরা সেই টাকা নিয়ে যেত। এ নিয়ে মায়ের সাথে প্রায় সব সময় বিরোধ চলতো তাদের। একপর্যায়ে দুই ভাইবোন মাকে পিটিয়ে বাসা থেকে বের করে ভাড়ার টাকা নিজেরাই ভাগ করে নিতে শুরু করে। আর নার্গিস বেগম ওই ভবনের কাছেই একটি দোকান ভাড়া নিয়ে সেখানে পার্লার খোলেন। রাতে দোকানেই থাকতেন।
নার্গিস বেগম নয়া দিগন্তকে বলেন, নিজেরই তো সন্তান, তাই সব তাদের কাছে ছেড়ে দিয়ে চলে আসি। কিন্তু এখানেও তারা শান্তিতে থাকতে দিলো না। দুপুরে ছেলেমেয়ে একসাথে এসে পার্লারে হামলা চালায়। তারা হাতুড়ি দিয়ে আমাকে বেধড়ক পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এর আগে গত জানুয়ারি মাসে তার ছেলেমেয়ে এবং মেয়ের জামাই বাড়ি থেকে তাকে বের করে দেয়। এরপর তিনি পাশের একটি বাড়ির নিচতলা ভাড়া নিয়ে পার্লারের ব্যবসা করেন। আর সেখানেই তিনি কর্মচারীদের সাথে থাকতেন।
খবর পেয়ে মোহাম্মদপুর থানার সহকারী পরিদর্শক ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত ছেলে তানভীরকে আটক করে। তার ছেলের নামে চারটি মামলা থাকলেও পুলিশ এতদিন তাকে আটক বা গ্রেফতার করেনি। এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আহত নার্গিস আক্তার। তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে বাড়িভাড়ার টাকায় এখন আর তাদের পোষাচ্ছে না। তাই জমিসহ পুরো বাড়িটাই বিক্রি করে মাদকের পেছনে টাকা ঢালতে চাইছে। এতে মা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে ভেবেই তাকে হত্যার চেষ্টা করে।


আরো সংবাদ



premium cement