১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
মিরসরাইয়ে ট্রিপল মার্ডার

১৫ দিন আগে হত্যার পরিকল্পনা করে বড় ছেলে সাদেক

-

মূলত বাড়ির চার শতক জায়গা নিয়ে ক্ষোভে মা-বাবা ও ভাইকে হত্যা করেছে সাদেক হোসেন সাদ্দাম। পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন ঘাতক সাদ্দাম। ১৫ দিন আগে থেকে হত্যার পরিকল্পনা করে সে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত বুধবার রাতে সে নৃশংসভাবে মা-বাবা ও ভাইকে হত্যা করেছে। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যম সোনাপাহাড় এলাকায় এমন আলোচিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেছেন নিহত নুরুল মোস্তফা সওদাগরের একমাত্র মেয়ে জুলেখা। নিহতরা হলেন, স্থানীয় নতুনবাজারের মুদি ব্যবসায়ী নুরুল মোস্তফা সওদাগর (৬০), তার স্ত্রী জোসনা আক্তার (৫০) ও তাদের মেজ ছেলে আহমদ হোসেন (২৫)।
এ দিকে একসাথে এভাবে একঘরের তিনজনকে উপর্যুপরি চুরিকাঘাতে হত্যার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না এলাকাবাসী। পুরো এলাকায় শোকের পাশপাশি মানুষকে উদ্বিগ্ন দেখা গেছে। তারা আর কোথাও এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয় এ জন্য প্রশাসনের কাছে ঘাতক সাদ্দামের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন। এ দিকে গতকাল শুক্রবার বাদ জুমা উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ঐতিহাসিক ছুটি খাঁ জামে মসজিদের সামনে সাদেক হোসেন সাদ্দামের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছে তার আত্মীয় স্বজন, বাজার ব্যবসায়ী এবং এলাকাবাসী।
নিহত মো: মোস্তফার ছোট ছেলে আলতাফ হোসেন বলেন, বাবা, মা আর ভাইয়ের ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার রাতে লাশ দাফন করা হয়েছে। তিনি এ ঘটনায় ঘাতক বড় ভাই সাদেক হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
পুলিশের কাছে সাদ্দামের জবানবন্দীমূলক স্বীকারোক্তির পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকের ব্রিফিং করেছেন পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (মিরসরাই সার্কেল) মোহাম্মদ লাবিব আব্দুল্লাহ ও জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুর হোসেন মামুন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সাদ্দাম তার মা-বাবা ও ভাইকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। সে বলেছে, এই খুনের পরিকল্পনা ১৫ দিন আগে নিয়েছে। সে অনুযায়ী চট্টগ্রাম শহর থেকে একটি ছুরি কিনে বাড়িতে আসে। রাত ৪টার দিকে সবাই যখন গভীর ঘুমে, তখনই মা-বাবার কক্ষে ঢোকে সে।
ঘুমন্ত অবস্থায় বাবাকে ধারালো ছুরি দিয়ে কোপাতে থাকে সাদ্দাম। এরপর মাকে।
মা-বাবার চিৎকার শুনে পাশের কক্ষ থেকে মেজ ছেলে আহমেদ ছুটে আসে। তখন তার গলায় ছুরি চালিয়ে দেয় সাদ্দাম। তিনজন সেখানেই প্রাণ হারান। বাবার শরীরে ছুরি দিয়ে ২২টি কোপ দেয়। মায়ের শরীর বিক্ষত হয় ২৩টি কোপে! বসতভিটার ১২ শতক জায়গার মধ্যে ৪ শতক মোস্তফা লিখে দেন তার মেজ ছেলে আহম্মদ হোসেনকে। হত্যার প্রধান কারণ এটি। সবাইকে খুন করার পর সে ঘরের ছাদে উঠে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করলে এলাকাবাসী ছুটে আসে।
জোরারগঞ্জ থানার ওসি মো: নুর হোসেন মামুন বলেন, আলোচিত ট্রিপল মার্ডারের ঘাতক সাদেক হোসেন সাদ্দাম বাবা, মা ও ভাইকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার বোন বাদি হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছে। আসামিকে গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement