২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

ইবির ১০ লাখ টাকার বোটানিক্যাল গার্ডেন এখন ঝোঁপঝাড়

-

ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের (ইবি) সৌন্দর্যবর্ধন ও উদ্ভিদবিজ্ঞানের গবেষণার জন্য দুই বছর আগে উদ্বোধন করা হয় বোটানিক্যাল গার্ডেনের। এতে ১০ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হলেও পরিচর্যার অভাবে ঝোঁপঝাড়ে পরিণত হয়েছে বিশ^বিদ্যালয়ের এ গার্ডেনটি। যথাযথ পরিকল্পনার অভাবে অতিরিক্ত টাকা খরচ করার অভিযোগও রয়েছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, ২০১৯ সালের ৩ আগস্ট বিশ^বিদ্যালয় লেকের পাশে ছয় বিঘা জমির ওপর এই গার্ডেনের উদ্বোধন করেন তৎকালীন ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী। গার্ডেনটিতে প্রায় ৮৫ প্রজাতির দেশী ও বিদেশী গাছের চারা রোপণ করা হয়। জমিটি নিচু হওয়ার পরেও কার্যকরী পরিকল্পনার অভাবে মাটি ভরাট না করেই চারা রোপণ করা হয় সেখানে। ফলে কিছুদিন পরেই বৃষ্টির পানিতে ডুবে যায় চারাগুলো। পরে চারাগুলো উঠিয়ে মাটি সামান্য ভরাট করে আবার সেই চারাগুলো রোপণ করা হয়। কিন্তু পর্যাপ্ত মাটি ভরাট না করায় আবারো জলাবদ্ধতার শঙ্কা দেখা দেয়। এরপর জলাবদ্ধতা থেকে চারাগুলোকে বাঁচানোর জন্য বাগানের মাঝ দিয়ে খাল খনন করে কর্তৃপক্ষ।
বিশ^বিদ্যালয়ের এস্টেট শাখা ও ইঞ্জিনিয়ারিং অফিসের অধীনে এ প্রকল্পের কাজ করা হয়। অভিযোগ রয়েছে কার্যকরী পরিকল্পনা ছাড়াই একই কাজ বারবার করায় দ্বিগুণের বেশি খরচ গুনতে হয়েছে। এ দিকে পরিচর্যার অভাবে মারা গেছে বেশির ভাগ গাছ। অনেক দিন পরিষ্কার না করার কারণে ঝোঁপঝাড়ে পরিণত হলেও বাগানটি পরিচর্যায় বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনকে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় এস্টেট অফিসের তৎকালীন প্রধান সাইফুল আলম জানান, এই প্রকল্পের কাজের জন্য প্রথমে সাড়ে চার লাখ টাকার বাজেট দেয় ফিন্যান্স কমিটি। তবে সে টাকায় কাজ শেষ না হওয়ায় কয়েক দফায় আরো বাজেট দেয়া হয়। সব মিলে এ প্রকল্পে মোট ১০ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে ।
বিশ^বিদ্যালয়ের এস্টেট শাখার বর্তমান প্রধান টিপু সুলতান বলেন, ‘বিশ^বিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত হওয়ার পর হল ও অ্যাকাডেমিক ভবন পরিষ্কার কাজে ব্যস্ততা থাকায় ওই কাজে মনোনিবেশ করতে পারিনি। তবে আমি নিজে সেখানে খোঁজখবর নিয়ে পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করব।’ এ দিকে বিশ^বিদ্যালয়ের মেগাপ্রকল্পের অধীনে নতুন কয়েকটি আবাসিক হল তৈরির জন্য কাটা হচ্ছে প্রায় দেড় হাজার গাছ। একসাথে বিপুল পরিমাণ গাছ কাটায় ক্যাম্পাসের পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। এ ক্ষেত্রে বিশ^বিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারত। কিন্তু পরিকল্পনা আর পরিচর্যার অভাবে বাজেটের দ্বিগুণ খরচ করেও আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের সৌন্দর্যবর্ধন কমিটির তৎকালীন আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. জাকারিয়া রহমান বলেন, ‘বোটানিক্যাল গার্ডেনসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে অনেক গাছ লাগানো হয়েছিল যেগুলো পরিচর্যার অভাবে মারা যাচ্ছে। বর্তমান ভিসি দায়িত্ব গ্রহণের পর এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কয়েকবার জানিয়েছিলাম কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। আমাদের ক্যাম্পাসের মাটি অনেক উর্বর একটু পরিচর্যা করলেই গাছগুলো ভালোভাবে বেড়ে উঠত।’
এ বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিশ^বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য যে গাছ কাটা হবে সে অভাব পূরণের জন্য ইতোমধ্যে চার হাজার বৃক্ষ রোপণের পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া আমরা বোটানিক্যাল গার্ডেন পরিদর্শন করে তা পরিষ্কার করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

 


আরো সংবাদ



premium cement