২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঈদের সময়েও সদরঘাটে সুনসান নীরবতা

আশপাশের ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত
-

রাজধানীর সদরঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চ ৪১ রুটে চলাচল করত। গত ঈদেও ওইসব রুটে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ যাতায়াত করে। অথচ করোনার লকডাউনের কারণে এবার সদরঘাটে বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা। অন্য দিকে লঞ্চযাত্রী না থাকায় আশপাশের মার্কেট ও শপিংমলে ব্যবসায়ীদেরও কপাল পুড়েছে। ঈদের সময়ও তারা মাথায় হাত রেখে হতাশা প্রকাশ করা ছাড়া উপায় থাকছে না। টার্মিনাল এরিয়ায় এখন তেলাপোকা ও ইঁদুর ছোটাছুটি করছে। জানা গেছে, গত বছর সদরঘাটে লঞ্চ দুর্ঘটনায় ৪০ জনের মৃত্যু হয়। তার মধ্যে ১৩ জানুয়ারি কীর্তন খোলা ১০ এবং ফারহান ৯ লঞ্চের সংঘর্ষে দুইজন নিহত হন, আহত ১২ জন, ৯ ফেব্রুয়ারি এমভি জলতরঙ্গের ধাক্কায় ডুবে নিহত ১, আহত ৮ জন। ২৯ জুন ময়ূর ২ লঞ্চের ধাক্কায় শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায় মর্নিংবার্ড লঞ্চ। এ সময় ৩৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। আহত হন ৬৫ জন যাত্রী। এ ছাড়া ৬ জুলাই ১ জন, ৩০ আগস্ট ১ জন এবং ১২ অক্টোবর ১ জন লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহত হন। এ ঈদে মৃতপুরী সদরঘাট এখন নীরব। তবে বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা-কমচারীরা ঠিকই অফিস করছেন। তারা রুমে খোশগল্পে পার করছেন সময়। টার্মিনাল সূত্র জানায়, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে এ সময়ে লাখো যাত্রীর ঢল থাকে। কোথাও দাঁড়াবার জায়গা থাকে না। আর এ ঈদে করোনা লকডাউনে সব যাত্রী পরিবহন বন্ধ থাকায় লঞ্চ চলাচলও নিষিদ্ধ। তাই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাফতরিক কোনো কাজ ছাড়া লঞ্চ চলাচল নিয়ে আপাতত কোনো চিন্তা নেই। তারা আরো জানান, টার্মিনাল এরিয়ায় তেলাপোকা ও ইঁদুরের উৎপাত চোখে পড়ার মতো।
এ দিকে, সদরঘাট টার্মিনালের সামনে রাস্তার দুই পাশে ছোট ছোট চকি বসিয়ে ঈদের কাপড় বিক্রি করত হকাররা। তাদের কোনো উৎপাত নেই। শতাধিক হকার এখন কর্মহীন। টার্মিনালের সামনে সিটি করপোরেশন মার্কেটের শতাধিক দোকানি বলেন, তাদের মার্কেটে বেশির ভাগ শার্ট প্যান্ট, সালোয়ার কামিজ ও শিশু-কিশোরদের জামাকাপড় পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করা হয়। ঈদে ঢাকার সব মার্কেট খোলা। অথচ তাদের মার্কেট খোলা থাকলেও বেচাকেনা শূন্য। কোনো কাস্টমার নেই। কারণ লঞ্চ যাত্রীই ছিল তাদের কাস্টমার। সদরঘাট গ্রেট ওয়াল মার্কেটের সভাপতি ও যুবলীগ নেতা জাবেদ হোসেন মিঠু এ প্রতিবেদককে বলেন, এবার ঈদে করোনায় লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় সদরঘাট এলাকার মার্কেটগুলোতে কোনো বেচাকেনা নেই। তবে তাদের মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা কিছুটা বাড়লেও দোকানিদের মুখে হাসি নেই বলে জানান তিনি। বিআইডব্লিউএ নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো: জয়নাল আবেদীন নয়া দিগন্তকে বলেন, কোভিড-১৯ আতঙ্কে মানুষ। তাই যাত্রী পরিবহন বন্ধ। এ কারণে লঞ্চ চলাচল করছে না। আগের ঈদগুলোতে সারারাত জেগে যাত্রীরা লঞ্চের জন্য সময় পার করেছেন টার্মিনালে। তিনি বলেন, নিয়মিত অফিস করছি। তবে লঞ্চ চলাচলের টেনশন আপাতত নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল