২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শেষ পর্যন্ত পিসিআর মেশিন নিতে রাজি রামেক কর্তৃপক্ষ

-

শেষ পর্যন্ত প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার আরো একটি পলিমার চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) মেশিন নিতে রাজি হয়েছে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) কর্তৃপক্ষ। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে নমুনা পরীক্ষার চাপ বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এই মেশিনটি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবে জনবল সঙ্কটের কারণ দেখিয়ে প্রথমে রামেক এই মেশিন নিতে রাজি হয়েছিল না। তবে শেষ পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ পিসিআরটি নিতে রাজি হয়েছে। এখন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে আরো একটি ল্যাব প্রস্তুতের কাজ চলছে। কয়েক দিনের মধ্যে ল্যাব প্রস্তুত হলেই মেশিনটি রাজশাহী আসবে। অত্যাধুনিক এই মেশিনটি একসঙ্গে ২৮২টি নমুনা পরীক্ষা করতে পারবে। রামেক প্রথমে মেশিনটি নিতে আগ্রহ না দেখানোর কারণে সেটি খুলনায় পাঠিয়ে দেয়ার বিষয়ে কথাবার্তা চলছিল।
রামেকের ভাইরোলজি বিভাগে এখন দুটি পিসিআর মেশিন চলে। প্রতিটি মেশিনে এক শিফটে ৯৪টি নমুনা পরীক্ষা করা যায়। এখন নমুনার চাপ থাকায় প্রতিদিন প্রতিটি মেশিনে দুই শিফট করে মোট ৩৭৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। রামেক হাসপাতালের ল্যাবেও একটি পিসিআর মেশিনে ৯৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন মেশিনটি চালু হলে রাজশাহীতে মোট পিসিআর হবে চারটি।
এ দিকে রাজশাহী বক্ষব্যাধি হাসপাতালেও ‘জিন-এক্সপার্ট’ মেশিনে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তবে এখানে শুধু সেখানকার ভর্তি থাকা রোগী, চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। রামেক হাসপাতালেও শুধু রোগী ও চিকিৎসক-নার্সদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শুধু রামেকের দুটি পিসিআর ল্যাবেই সব শ্রেণী-পেশার মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এখানে রাজশাহী ছাড়াও জয়পুরহাট, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং নওগাঁয় নমুনা পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। সাম্প্রতিককালে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসার পর নমুনার চাপ বেড়ে যাওয়ায় সবগুলো রামেকে পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছিল না। বাড়তি নমুনা পাঠাতে হচ্ছিল ঢাকা। তাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এখানে আরেকটি পিসিআর বরাদ্দ দেয়। এ ছাড়া পাবনা মেডিক্যাল কলেজ ও বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজেও (শজিমেক) একটি করে পিসিআর মেশিন বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে শুধু রামেক এই মেশিন নিতে আগ্রহী ছিল না। গত ২৭ এপ্রিল রাজশাহী বিভাগীয় উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় বিষয়টি আলোচিত হয়। সভায় গণপূর্তের পক্ষ থেকে ল্যাব স্থাপনে নিজেদের প্রস্তুতি থাকার কথা জানানো হয়। কিন্তু নানা সমস্যার কথা তুলে ধরে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে বিভাগীয় কমিশনার ড. হুমায়ুন কবীর মেশিনটি দ্রুত স্থাপনে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের পরিচালককে তাগিদ দেন। শেষ পর্যন্ত রামেক মেশিনটি নিতে রাজি হয়। এরপর গণপূর্ত অধিদফতর ল্যাব প্রস্তুতের কাজ শুরু করেছে।
রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা: হাবিবুল আহসান তালুকদার সাংবাদিকদের জানান, রাজশাহী বিভাগের জন্য পাওয়া নতুন তিনটি পিসিআর মেশিনের মধ্যে পাবনা ও বগুড়ায় স্থাপনে কোনো সমস্যা ছিল না। রাজশাহীতেই মেশিনটি বসানো নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছিল। কারণ এটি রামেক ছাড়া অন্য কোথাও দেয়া যেত না। শেষ পর্যন্ত রামেক মেশিনটি নিচ্ছে। ল্যাব স্থাপনের কাজও দ্রুত এগোচ্ছে। ল্যাব প্রস্তুত হলেই মেশিনটি ঢাকা থেকে চলে আসবে। তখন আরো বেশিসংখ্যক নমুনা পরীক্ষা করা যাবে। কোনো নমুনা আর ঢাকায় নিতে হবে না। অত্যাধুনিক এই মেশিনটির কার্যক্ষমতা অনেক বেশি। একসঙ্গে ২৮২টি নমুনা পরীক্ষা করতে পারবে মেশিনটি।


আরো সংবাদ



premium cement