১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যাত্রাবাড়ীতে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

-

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় চাঁদাবাজ মাদকসেবীদের ছুরিকাঘাতে বাবুল হোসেন (৩২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক সড়কে মনা টাওয়ারের সামনে দুর্বৃত্তরা তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। পরে রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। নিহতের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে আহত রোগীকে সিট না থাকার অজুহাতে ভর্তি না করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়। এরপর বাসায় নিয়ে গেলেই শুরু হয় রক্তক্ষরণ। রাত ২টার দিকে পুনরায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ভগ্নিপতি শফিকুল ইসলাম জানান, গত শনিবার রাতে তার কাজলার বাসা থেকে খাবার খেতে সহযোগী কামালের সাথে রিকশা করে বাসায় ফিরছিলেন বাবুল। তাদের রিকশা শহীদ ফারুক সড়কের মনা টাওয়ারের সামনে পৌঁছালে এলাকার চাঁদাবাজ মাদকসেবী রতনসহ কয়েকজন মিলে রিকশার গতি রোধ করে। তারা বাবুলকে রিকশা থেকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। পরে বাবুল ও কামালের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। কিন্তু জনতা তাদের মধ্যে একজনকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
এ দিকে গুরুতর আহত বাবুলকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাসায় চলে যেতে বলেন। এমন গুরুতর রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি কেন রাখা হচ্ছে না জানতে চাইলে চিকিৎসকরা বলেন, ‘হাসপাতালের কোনো সিট খালি নেই, যার কারণে তাকে বাসায় নিয়ে যেতে হবে।’ অনিচ্ছা সত্ত্বেও বাধ্য হয়ে বাবুলকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু বাসায় নেয়ার পরই তার ক্ষত থেকে শুরু হয় রক্তক্ষরণ। তার অবস্থার অবনতি হতে থাকলে পুনরায় রাত ২টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, এত বড় আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি রাখলে হয়তো বাঁচানো যেত।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক মো: আলাউদ্দিন আল আজাদ বলেন, হাসপাতালে সিট না থাকলেও কাউকে ফেরত পাঠানো হয় না। প্রয়োজনে রোগীকে মেঝেতে রাখা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা কেন তাকে ভর্তি না করে রিলিজ দিয়ে দিলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নিহতের ভগ্নিপতি শফিকুল ইসলাম আরো জানান, বাবুল দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়। বাবুলের একটি স্টিল কারখানা ছিল। কিন্তু গত বছরের করোনার পর থেকে তার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। পরে অপর একটি কারখানার টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ করতেন তিনি। যখন কারখানা ছিল, তখন সন্ত্রাসীরা প্রায়ই বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তার কাছ থেকে চাঁদা নিত। ইদানীং আর চাঁদা দিতে পারছিলেন না বাবুল। যার কারণে তার বাসার সামনে মাদকের স্পট বানায় চাঁদাবাজরা। এর প্রতিবাদ করায় বাবুলের সাথে ঝগড়া হয় রতন ও তার সহযোগীদের। যার কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।
পুলিশ বলছে, এই ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।


আরো সংবাদ



premium cement