২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গাজীপুরে করোনা রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে

এপ্রিলের ১৬ দিনে ২২ জনের মৃত্যু
-

কঠোর লকডাউনের মধ্যেও গাজীপুরে করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মোট নমুনা সংগ্রহের অর্ধেকই কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। এ সময় করোনা আক্রান্তে মারা গেছেন চারজন। জেলায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর দিক থেকে এযাবতকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড। এ নিয়ে সরকারি হিসাব অনুযায়ী চলতি এপ্রিলের ১৬ দিনে গাজীপুরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২২ জন মারা গেলেন। এতে জেলায় করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৮ জনে। উদ্বেগের বিষয় হলো- গত ২৪ ঘণ্টায় গাজীপুরের ৩৩২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৬৬ জনের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। অর্থাৎ মোট নমুনা সংগ্রহের শতকরা ৫০ ভাগই করোনা রোগী শনাক্ত হলো। সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে গাজীপুর মহানগর এলাকায়।
জেলায় চলতি এপ্রিলে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হয়েছে পাঁচ হাজার জনের। এর মধ্যে শনাক্ত হয়েছে ১৩১৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৪৪৯ জন। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে পাওয়া হিসাব অনুযায়ী এসব তথ্য জানা গেছে। এতে দেখা যায় সংক্রমণের বিস্তার রোধে কঠোর লকডাউনের মধ্যেও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দেয়া তথ্য অনুসারে জানা যায়, গত ১ এপ্রিল কোভিড-১৯ শনাক্ত হয় ৫৮ জন এবং মারা যায় একজন। ২ এপ্রিল শনাক্ত হয় ৪৭ জন এবং মারা গেছে একজন। ৩ এপ্রিল ৩২ জন শনাক্ত হয় এবং মারা যায় চারজন। ৪ এপ্রিল শনাক্ত হয় ৬৪ জন। ৫ এপ্রিল শনাক্ত হয় ৯০ জন এবং মারা যায় একজন। ৬ এপ্রিল ৯৮ জন শনাক্ত হন ও মারা যায় একজন। ৭ এপ্রিল ৭৯ জন শনাক্তের বিপরীতে মারা যায় দুইজন। ৮ এপ্রিল ১১৫ জনের শনাক্ত হয়, বিপরীতে মারা যায় একজন। ৯ এপ্রিল রেকর্ডসংখ্যক ১৪৪ জন শনাক্ত হয় এবং মারা যায় দুইজন। ১০ এপ্রিল ৭০ জন শনাক্তের বিপরীতে দুইজনের মৃত্যু হয়। ১১ এপ্রিল ৬৫ জন শনাক্ত হয়, বিপরীতে মারা যায় একজন। ১২ এপ্রিল ৯২ জন শনাক্ত হয়। ১৩ এপ্রিল ৭৯ জন শনাক্ত হয় এবং মারা যায় দুইজন। ১৪ এপ্রিল ৭৯ জন শনাক্ত হয়। ১৫ এপ্রিল ৭৮ জন শনাক্ত হয় এবং মারা যায় একজন। সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় (১৬ এপ্রিল) গাজীপুরে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ শনাক্ত হয় ১৬৬ জন এবং মারা যায় চারজন।
এপ্রিলের এই ১৬ দিনে সর্বাধিক কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে সদরে (মহানগর) ৮৯৫ জন, কালিয়াকৈরে ৯৪ জন, শ্রীপুরে ১১৮ জন, কালীগঞ্জে ১১৬ জন এবং কাপাসিয়ায় ৯৪ জন।
গত ১ এপ্রিল সর্বাধিক কোভিড-১৯ শনাক্ত রোগী ছিল সদরে (মহানগর) পাঁচ হাজার ১৭৬ জন, কালিয়াকৈরে ৮৩০ জন, শ্রীপুরে ৭৫৯ জন, কালীগঞ্জে ৬০৮ জন এবং কাপাসিয়ায় ৫২১ জন। মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল সাত হাজার ৮৯৪ জন এবং মোট মৃত্যু ছিল ১৩৬ জন। ওই দিন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা ছিল সাত হাজার ৩১৩ জন। ১ এপ্রিল পর্যন্ত গাজীপুরে ৬৫ হাজার ৬০৮ জনের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হয়েছিল।
গাজীপুরের সিভিল সার্জন মো: খায়রুজ্জামান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজীপুরে ৩৩২ জনের নমুনা পরীক্ষায় আরো ১৬৬ জনের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। নতুন শনাক্তদের মধ্যে সদরে (মহানগর) ১০২ জন, কাপাসিয়ায় ২২ জন, কালিয়াকৈরে ১৭ জন, কালীগঞ্জে ২০ জন এবং শ্রীপুরে পাঁচজন রয়েছে। এ সময় করোনায় মৃত্যু হয়েছে চারজনের। তিনি আরো বলেন, এ পর্যন্ত গাজীপুরের ৭০ হাজার ৬০৮ জনের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে ৯ হাজার ২১১ জন এবং সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা সাত হাজার ৭৬২ জন। কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়ে এবং মৃত্যুর পর পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছে মোট ১৫৮ জনের। সর্বাধিক কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে সদরে (মহানগর) ছয় হাজার ৭১ জন। এছাড়া কালিয়াকৈরে ৯২৪ জন, শ্রীপুরে ৮৭৭ জন, কালীগঞ্জে ৭২৪ জন এবং কাপাসিয়ায় ৬১৫ জন।
তবে প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা আরো বেশি হবে বলে এলাকার জনপ্রতিনিধিরা মনে করেন। মহানগর ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন মণ্ডল বলেন, ‘বৃহস্পতিবার আমি দু’টি নামাজে জানাজায় শরিক হয়েছিলাম। নিহত দুইজনেরই শরীরে করোনার লক্ষণ ছিল। তারা হাসপাতালে চিকিৎসা না নেয়ায় বা করোনা টেস্ট না করায় সরকারি হিসাবে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়নি।


আরো সংবাদ



premium cement