কক্সবাজারের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মুরশেদের সাফল্যগাথা
একসাথে পাগড়ি নিলো ২০০ জন- কক্সবাজার অফিস
- ০৭ মার্চ ২০২১, ০০:০৭
কক্সবাজারের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হাফেজ মুরশেদুর রহমান। ১৯৮১ সালে কক্সবাজার সদরের পোকখালীর গোমাতলীতে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মগতভাবে দৃষ্টিহীন মুরশেদের জীনবে রয়েছে অনেক সাফল্যগাথা। তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দেশ-বিদেশের শুভাকাক্সক্ষীসহ প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চান।
গতকাল ছিল হাফেজ মোর্শেদের প্রতিষ্ঠিত হেফজখানা ও এতিম খানার দশম বার্ষিক মাহফিল ও দস্তার বন্দী অনুষ্ঠান । এই মাহফিলে তার প্রতিষ্ঠিত ‘আন নুর হেফজখানা ও এতিম খানা’ থেকে গত ১০ বছরে হেফজ সমাপ্তকারী ২০০ ছাত্রছাত্রীকে দস্তারে ফজিলত বা পাগড়ি প্রদান করা হয়। এ-উপলক্ষ্যে সদর উপজেলার কাছে জানার ঘোনা এলাকায় তার প্রতিষ্ঠিত ‘আন নুর হেফজখানা ও এতিম খানা’ আয়োজন করা হয় দোয়া মাহফিল ও সূধী সমাবেশ। এই সমাবেশে ওই ২০০ ছাত্রছাত্রীকে পাগড়ি প্রদান করা হয়।
জন্মান্ধ হাফেজ মুরশেদ বলেন, ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সে (১৯৯৬ সালে) পটিয়া আল জামেয়া ইসলামিয়া থেকে তিনি হেফজ শেষ করে সেখানে পড়ালেখা শুরু করেন। এর পর তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে ‘মাদরাসায়ে আন নুর ফর দি ব্লাইন্ডে দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করেন।
সেখানে তিনি হাদিস শাস্ত্র, কম্পিউটার ও ব্রেইল শিক্ষা অর্জন করেন।
২০০৩ সালে তিনি আরব আমিরাতের দুবাইতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে তৃতীয় স্থান অর্জন করে দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনেন। ওই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ৯০টি দেশের হাফেজরা অংশগ্রহণ করেন।
ডারবান থেকে দেশে ফিরে তিনি কক্সবাজার শহরতলীর সদর উপজেলার কাছে জানার ঘোনায় প্রতিষ্ঠা করেন ‘আন নুর হেফজখানা ও এতিম খানা’।
সরেজমিন গতকাল গিয়ে দেখা গেছে, তিনতলা বিশিষ্ট নিজস্ব ভবনে ওই মাদরাসায় হফজ বিভাগ, নুরানী ও এতিম খানায় কয়েক শত শিক্ষার্থী রয়েছে। হেফজ বিভাগে ১০০ ছাত্র, ৫০ জন ছাত্রী, নুরানী বিভাগে ১০০ ছাত্রছাত্রী পড়ালেখা করছে। এর মধ্যে ৩০ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী রয়েছে। এখানে পাঁচজন মহিলাসহ ১৭ জন শিক্ষক কর্মচারী রয়েছে।
গতকাল যে ২০০ জন ছাত্রছাত্রীকে পাগড়ি প্রদান করা হয়েছে তার মধ্যে পাঁচজন ছাত্রী এবং ১০ জন দৃষ্টিহীন হাফেজ ও রয়েছে। হাফেজ মুরশেদ এর শিক্ষক পটিয়া আল জামেয়া ইসলামিয়ার কেরাত ও হেফজ বিভাগের প্রধানকারি মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুচ ছমদ জানান, প্রচণ্ড মেধাবী হাফেজ মুরশেদ দৃষ্টিহীন হয়েও বসে থাকেনি। তিনি নিজে স্বাবলম্বী হয়ওয়ার পাশাপাশি অন্যদেরও স্বাবলম্বী করছে- এটি অনেক বড় কথা।
এ প্রসঙ্গে হাফেজ মুরশেদ বলেন, তার শুভাকাক্সক্ষীদের সহযোগিতায় তিনি এই মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন। আগামীতে তার রয়েছে আরো অনেক পরিকল্পনা।
তার এই কার্যক্রম পরিচালনায় তিনি দেশ-বিদেশের দানশীল ব্যক্তিদের সহযোগিতার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর সুনজর কামনা করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা