২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ফেব্রুয়ারিতে ৪০৬ সড়ক দুর্ঘটনায় ৫১৭ জন নিহত

১৩টি রেলপথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু ১৬
-

গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪০৬টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫১৭ জন এবং আহত হয়েছেন ৬৫৯ জন। এছাড়া ছয়টি নৌদুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত এবং ৫৫ জন আহত হয়েছেন। ১৩টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত এবং চারজন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এতে ১০১টি দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ১১৩। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহ বিভাগে। এতে ২১টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৭ জন। একক জেলা হিসেবে ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। এ জেলায় ২৯টি দুর্ঘটনায় ৪১ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম মেহেরপুর জেলায়। এতে দুইটি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন একজন।
গত বুধবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে। সংস্থাটি সাতটি জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনায় ১২৭ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ। এছাড়া যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৭৬ জন, অর্থাৎ ১৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল আরোহী ১৭১ জন (৩৩ দশমিক ৭ শতাংশ), বাস যাত্রী ৬৬ জন (১২ দশমিক ৭৬ শতাংশ), ট্রাক-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি যাত্রী ৩৭ জন (৭ দশমিক ১৫ শতাংশ), মাইক্রো-কার-অ্যাম্বুলেন্স যাত্রী ১৬ জন (৩ দশমিক ৯ শতাংশ), থ্রি-হুইলার (সিএনজি-ইজিবাইক-অটোরিকশা-অটোভ্যান-টমটম) ৭৪ জন (১৪ দশমিক ৩১ শতাংশ), নসিমন-ভটভটি-বোরাকল্পাখিভ্যান-চান্দের গাড়ি যাত্রী ১৪ জন (২ দশমিক ৭০ শতাংশ) এবং বাইসাইকেল, প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান, পাওয়ারটিলার যাত্রী ও ১২ জন শ্রমিক (২ দশমিক ৩২ শতাংশ) নিহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৩৮টি (৩৪ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ১২২টি (৩০ দশমিক ০৪ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ৯৫টি (২৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে, ৪৪টি (১০ দশমিক ৮৩ শতাংশ) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে সাতটি (১ দশমিক ৭২ শতাংশ) সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনার ৭৯টি (১৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৪২টি (৩৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ১২৩টি (৩০ দশমিক ২৯ শতাংশ) পথচারীকে চাপা বা ধাক্কা দেয়া, ৪৯টি (১২ দশমিক ০৬ শতাংশ) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১৩টি (৩ দশমিক ২০ শতাংশ) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বেপরোয়াভাবে বাড়ছে। গত জানুয়ারি মাসে ৪২৭টি দুর্ঘটনায় ৪৮৪ জন নিহত হন। গড়ে প্রতিদিন নিহতের সংখ্যা ছিল ১৫ দশমিক ৬১। ফেব্রুয়ারিতে প্রতিদিন গড়ে নিহতের সংখ্যা ১৮ দশমিক ৪৬। সে হিসাবে ফেব্রুয়ারিতে প্রাণহানি বৃদ্ধির হার ১৮ দশমিক ২৬ শতাংশ।
দুর্ঘটনার জন্য দায়ী যানবাহন- ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ ২৫ দশমিক ২৫ শতাংশ, ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-জিপ ৩ দশমিক ৫২ শতাংশ, যাত্রীবাহী বাস ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ, মোটরসাইকেল ২৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান) ১৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ, নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-চান্দের গাড়ি-বোরাক-টমটম-ডাম্পার, পাওয়ারটিলার ৮ দশমিক ৮১ শতাংশ এবং প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান, বাইসাইকেল ২ দশমিক ২০ শতাংশ। দুর্ঘটনায় আক্রান্ত যানবাহনের সংখ্যা ৬৮১টি। এর মধ্যে ট্রাক ১২১, বাস ৭৯, কাভার্ডভ্যান ১৮, পিকআপ ৩৩, লরি ৬, ট্রলি ১৭, ট্রাক্টর ৯, মাইক্রোবাস ১৩, প্রাইভেটকার ৮, অ্যাম্বুলেন্স ২, জিপ ১, মোটরসাইকেল ১৬৩, ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান ১৩৬, টমটম ৪, ডাম্পার ২, নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-চান্দের গাড়ি-বোরাক ৫২, বাইসাইকেল ৬, প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান ৯ এবং পাওয়াটিলার ৪টি।
সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে ভোরে ৬ দশমিক ৪০ শতাংশ, সকালে ২৮ দশমিক ৮১ শতাংশ, দুপুরে ১৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ, বিকেলে ২২ দশমিক ১৬ শতাংশ, সন্ধ্যায় ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং রাতে ১৮ দশমিক ২২ শতাংশ।

 


আরো সংবাদ



premium cement