২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল-নালা উদ্ধারে জোর দুই সিটির

অবৈধ দোকান উচ্ছেদ অভিযান আপাতত স্থগিত
-

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মালিকানাধীন মার্কেটগুলোর অবৈধ দোকান উচ্ছেদ কার্যক্রম নগরবাসীর মধ্যে সাড়া ফেলেছিল। এ নিয়ে অবৈধ দখলদাররা বাধা দেয়ার চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত পিছু হটে। পরবর্তী সময়ে দোকানদারদের নিয়ে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের মানববন্ধন, বর্তমান মেয়রের নামে দুর্নীতির অভিযোগ করা, সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের নামে মামলা বিশেষ আলোচনার জন্ম দেয়। কিন্তু এরপরই উচ্ছেদ কার্যক্রম স্থগিত করেছে ডিএসসিসি। বর্তমানে তারা জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল-নালা উদ্ধার কার্যক্রম জোরদার করেছে। একইভাবে উত্তর সিটি করপোরেশনও সড়ক-ফুটপাথের অবৈধ স্থাপনা কার্যক্রমের পরিবর্তে খাল-নালা উদ্ধারে মনোযোগ দিয়েছে।
ডিএসসিসি : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৮টি মার্কেটে প্রায় তিন হাজার অবৈধ দোকান ছিল। পার্কিংয়ের স্থান, টয়লেট, সিঁড়ি, করিডোরসহ বিভিন্ন খালি স্থান দখল করে সেখানে দোকান নির্মাণ করে মালিক সমিতি ও ডিএসসিসির কর্মকর্তারা যোগসাজশে সেগুলো বিক্রি ও ভাড়া দেন। ব্যারিস্টার তাপস মেয়র হওয়ার পর অবৈধ এসব দোকান উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। সে হিসাবে গত ৮ ডিসেম্বর ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট-২-এর সিটি প্লাজা, নগর প্লাজা ও জাকের প্লাজাতে থাকা ৯১১টি দোকান উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় দোকান কর্মচারীরা বিক্ষোভ করেও পরে পিছু হটতে বাধ্য হয়। এরপর সুন্দরবন মার্কেটের অবৈধ দোকান উচ্ছেদে অভিযান চালায় ডিএসসিসি। এ মার্কেটের দোকানদাররা সামনা সামনি বাধা না দিলেও ৩৪ জন মিলে হাইকোর্টে একটি রিট করেন। এ অভিযানকালে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন, বর্তমান কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন রতনসহ অনেকের নামে অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। সাঈদ খোকনের নামে ফুলবাড়িয়া মার্কেট সমিতির সভাপতি একটি মামলাও করেছেন। পরে সাঈদ খোকন একটি মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বর্তমান মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুললে সাঈদ খোকনের নামে মানহানির মামলার আবেদন করা হয়। অবশ্য আদালত সে আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। এর পর থেকেই ডিএসসিসি মার্কেটের অবৈধ দোকান উচ্ছেদ কার্যক্রম স্থগিত রেখেছে। এর পরিবর্তে তারা আসন্ন বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল-নালা পরিষ্কার ও উদ্ধারে মনোযোগ দিয়েছে। ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন নয়া দিগন্তকে বলেন, যে মার্কেটগুলোতে অভিযান শুরু করা হয়েছিল সেগুলোর কাজ মোটামুটি শেষ। সেখানে এখন যেসব ভাঙা স্থাপনা রয়েছে তা ম্যানুয়ালি সরানো হচ্ছে। তবে এখন অন্যান্য মার্কেটের অবৈধ দোকান উচ্ছেদ কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। এখন সামনের বর্ষা মৌসুমে যাতে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা না হয় সে জন্য খাল ও বক্স কালভার্টের আবর্জনা পরিষ্কার ও অবৈধ দখল উচ্ছেদ কার্যক্রমে জোর দেয়া হচ্ছে। খাল-নালা পরিষ্কারের পর আবার দোকান উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। তিনি বলেন, মাত্র দু’জন ম্যাজিস্ট্রেট আছেন, তাদের দিয়ে একসাথে সব কাজ করানো সম্ভব হচ্ছে না।
খাল বক্স কালভার্ট পরিষ্কার অভিযান : গত ৩১ ডিসেম্বর ওয়াসার কাছ থেকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্ব দেয়া হয়। তবে এর আগে থেকেই খাল পরিষ্কারে অভিযান শুরু করে ডিএসসিসি। দায়িত্ব পাওয়ার পর আরো জোরেশোরে কাজ শুরু হয়। বিশেষ করে বক্স কালভার্টের মধ্যে দীর্ঘ দিনের জমে থাকা শক্ত বর্জ্য পরিষ্কার শুরু করে সংস্থাটি। বর্তমানে শ্যামপুর খাল, জিরানি খাল, কালুনগর খাল, মান্ডা খাল ও খিলগাঁও ঝিলের বর্জ্য অপসারণ ও পরিষ্কার করা হচ্ছে। গতকাল বুধবার জিরানি খালের পরিষ্কার কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, আগামী বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে আমাদের ব্যাপক কর্মসূচি চলমান আছে এবং এটা অত্যন্ত দুরূহ কাজ। খালগুলো দীর্ঘ দিন দখল অবস্থায় আছে; কিন্তু আমরা সেই দখলমুক্ত করার বিশাল কর্মযজ্ঞে লিপ্ত হয়েছি। ডিএসসিসি মেয়র আরো বলেন, আপনারা জানেনÑ ওয়াসার সাথে আমাদের যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে, সে অনুযায়ী আমরা তাদের কাছ থেকে যে যান-যন্ত্রপাতি পাবো, সেগুলো হস্তান্তর প্রক্রিয়া এখনো চলমান আছে। যার কারণে আমাদের কিছুটা সক্ষমতার অভাব রয়েছে। সব যন্ত্রপাতি পেলে আমাদের কার্যক্রমটা আমরা ত্বরান্বিত করতে পারব। তারপরও আমরা আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রেখেছি। আগামী মার্চের মধ্যেই আমরা এ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে চাই। চলমান খাল দখলমুক্ত ও বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে করা হচ্ছে বলেও জানান মেয়র।
ডিএনসিসি : আগামী বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা নিরসনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনও ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে খাল ও নালা পরিষ্কার করা হচ্ছে। গতকাল বুধবার ডিএনসিসি মেয়র ভাটারা, সাঁতারকুল, বাড্ডা এলাকায় (৩৭, ৩৮, ৪০ ও ৪১ নম্বর ওয়ার্ড) সুতিভোলা খাল ও কড্ডা খাল পরিদর্শন করেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ডিএনসিসির সম্প্রসারিত ওয়ার্ডগুলোতে ১৩টি খাল রয়েছে; ২৯ কিমি দীর্ঘ এসব খালের যে অংশ অবৈধভাবে দখল করা হয়েছে তা পুনরুদ্ধার করা হবে। মেয়র আরো বলেন, এ এলাকার অবকাঠামো উন্নয়নে ইতোমধ্যে চার হাজার ২৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে পাস হয়েছে। আমার প্রথম কাজ হচ্ছেÑ এসব এলাকায় রাস্তার পাশে ড্রেন নির্মাণ করা। দ্বিতীয় কাজ রাস্তা চওড়া করা। সরু রাস্তাগুলো অবশ্যই প্রশস্ত করতে হবে। এ কাজে আমাদেরকে জনগণ এবং রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা সাহায্য করছেন। আমরা রাজউককে পত্র দিয়েছি, এ এলাকায় যেন কোনো ধরনের ভবন নির্মাণের প্ল্যান দেয়া না হয়। আমি কাউন্সিলরদেরকে বলেছি, এ এলাকায় আর যাতে কোনো বাড়ি না হয়। খাল থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘সিএস, আরএস, সিটি জরিপ যে দাগে খালের জায়গা বেশি পাওয়া যাবে সে দাগ অনুসারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। কারণ খাল যত বড় হবে এলাকার পানি তত সহজে নির্গমন হবে। এ এলাকার রাস্তায় একটু বৃষ্টি হলে কোমর পানি হয়ে যায়। আমি ইতোমধ্যে এখানে যেসব ড্রেন আছে তা পরিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছি। প্রকল্পে ড্রেনগুলো বড় করার নির্দেশ দিয়েছি। এ ছাড়া এ এলাকায় আর কোনো বাড়ি উঠবে না।’ আতিকুল ইসলাম আরো বলেন, চার হাজার ২৫ কোটি টাকার প্রকল্পের অধীনে ২৯ কিমি খাল পুনরুদ্ধার, পুনঃখনন, পাড় বাঁধাই, সাইকেল লেন, ওয়াকওয়ে ও সবুজায়ন করা হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
এবার তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে বললেন এমপি জয় পঞ্চপল্লীর ঘটনায় ন্যায়বিচারের স্বার্থে যা দরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে করার নির্দেশ সরকার ভিন্ন মত ও পথের মানুষদের ওপর নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে : মির্জা ফখরুল ধুনটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বৃদ্ধের মৃত্যু বাকৃবির এক্স রোটারেক্টরর্স ফোরামের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠিত পাবনায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড, হিট স্ট্রোকে মৃত্যু ১ দাগনভুঞায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তির ঘটনায় আ’লীগ নেতাকে শোকজ দখলে থাকা ৪ গ্রাম আজারবাইজানকে ফিরিয়ে দেবে আর্মেনিয়া স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে স্ত্রীর আত্মহত্যা! কুলাউড়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে নারীর মৃত্যু

সকল