জুনিয়রদের নির্যাতন করায় খুবির ৭ শিক্ষার্থীকে শাস্তি

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে জুনিয়র শিক্ষার্থীদের ওপর রাতভর শারীরিক নির্যাতন ও গালিগালাজ করার অপরাধে পাঁচজন এবং তদন্ত ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করার দায়ে আরো দুই শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছে ভার্সিটি কর্তৃপক্ষ। গত বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সদস্য সচিব মো: শরীফ হাসান লিমন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গালিগালাজ ও অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে দিয়ে মারধর, স্বাভাবিক চলাচলে বিঘœ ঘটানো ও হুমকি প্রদানের অপরাধে ইংরেজি ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মশিউর রহমান রাজাকে দুই বছর (৪ টার্ম) ও শারীরিকভাবে নির্যাতন ও গালিগালাজ করার অপরাধে একই ডিসিপ্লিনের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র রাজ বর্মণ বিধানকে দুই বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে নির্যাতনে উসকানি দেয়ার অপরাধে একই ডিসিপ্লিনের মিনহাজুর রহমানকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার, সাবেরুল বাশার নিরবের এক বছরের জন্য সার্টিফিকেট স্থগিত এবং ফাহাদ রহমান অঝোরকে অভিভাবকসহ মুচলেকা প্রদানের শর্তে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া বাংলা ডিসিপ্লিনের ৩য় বর্ষের মোবারক হোসেন নোমানকে দু’জন শিক্ষকের পথ আটকানো ও তাদের সাথে গুরুতর অসদাচরণ করা, তদন্ত কমিটির সামনে বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি ও অন্য শিক্ষার্থীকে কমিটির সামনে বক্তব্য না দেয়ার জন্য চাপ প্রদান এবং অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করার অপরাধে এক বছরের (২ টার্ম) জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের ইমামুল ইসলামকে দু’জন শিক্ষকের পথ আটকানো ও তাদের সাথে গুরুতর অসদাচরণ করা, তদন্ত কমিটির সামনে বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি, অন্য শিক্ষার্থীকে কমিটির সামনে বক্তব্য না দেয়ার জন্য চাপ প্রদান, অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করা, ব্যক্তিগতভাবে পাঠানো তদন্ত কমিটির গোপনীয় চিঠি উসকানিমূলক শিরোনাম দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করা বা কাউকে দিয়ে পোস্ট করানো ও তদন্ত কমিটির সাক্ষাৎকার গোপনে রেকর্ড করার চেষ্টার অপরাধে দুই বছরের (৪ টার্ম) জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সদস্য সচিব মো: শরিফ হাসান লিমন বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতে আমরা শাস্তি দিতে চাইনি। তবে তদন্তের বিষয়টি দ্রুত সুরাহা করার জন্য শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফাহাদ রহমান অঝোরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কোনো শিক্ষার্থী চাইলে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে আপিল করতে পারবে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৭ জানুয়ারি খুবির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ইংরেজি ডিসিপ্লিনের পাঁচ শিক্ষার্থীর ওপর রাতভর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে। নির্যাতিত শিক্ষার্থীরা বিচার চেয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন। অন্য দিকে একই বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বেতন-ফি কমানোসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় দুই শিক্ষকের সাথে অসদাচারণ করা হলে শিক্ষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে শাস্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।