১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিদেশী দুই এয়ারলাইন্স মানবপাচারে সম্পৃক্ত

ব্যবস্থা নিচ্ছে সিআইডি
-

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য নারী-পুরুষকে বিভিন্ন দেশে পাচারের সাথে দু’টি এয়ারলাইন্সের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠান দু’টির সাতজন কর্মকর্তাকে সিআইডি সদর দফতরে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, তারাও বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন। তবে এয়ারলাইন্স দু’টির নাম বলেননি তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান।
এর আগে, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মানবপাচারের জড়িত পলাতক ছয় বাংলাদেশী নাগরিকের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করে ইন্টারপোল। তারা হলোÑ মিন্টু মিয়া, তানজিমুল ওরফে তানজিদ, জাফর ইকবাল, নজরুল ইসলাম মোল্লা, শাহাদাত হোসেন ও স্বপন। এদের মধ্যে নজরুলের বাড়ি মাদারীপুরে, শাহাদাতের বাড়ি ঢাকায়, বাকি চারজনের কিশোরগঞ্জে। তানজিমুল বর্তমানে ইতালিতে রয়েছে।
সিআইডি প্রধান বলেন, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে মানবপাচারের সাথে বিদেশী দু’টি এয়ারলাইন্স জড়িত। যাদের দেশ থেকে পাচার করা হয়েছে, তাদের সবাইকেই ভিজিট ভিসা বা কনফারেন্স ভিসায় নেয়া হয়েছে। কিন্তু এসব ভিসায় কেউ কোনো দেশে গেলে তাদের রিটার্ন টিকিট থাকার কথা। তবে কোনো ব্যক্তি রিটার্ন টিকিট নেয়নি। এটা এয়ারলাইন্সের ত্রুটি। এতে তাদের কর্মকর্তারা জড়িত। পাচার হওয়া অধিকাংশ ব্যক্তি এই দু’টি এয়ারলাইন্সে গেছেন। আমরা এয়ারলাইন্স দু’টির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথেও কথা বলেছি। তারাও স্বীকার করেছেন। সিআইডি প্রধান জানান, গত ১৮ অক্টোবর বাংলাদেশ পুলিশ ইন্টারপোলের কাছে ছয় মানবপাচারকারীকে গ্রেফতারে সহায়তা চায়। গত ২৭ নভেম্বর ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করে। তবে এই ছয়জনের বাইরে আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
২০১৯ সালের মে মাস থেকে বিভিন্ন সময় ৩৮ জন বাংলাদেশী নাগরিককে লিবিয়ায় পাচার করা হয়। তাদের ইতালি ও স্পেনে পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ার বেনগাজিতে নিয়ে যাওয়া হয়। মুক্তিপণের জন্য গত ২৬ মে নির্বিচারে গুলি করে ২৬ জনকে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় মানবপাচারের অভিযোগে সারা দেশে ২৬টি মামলা হয়। এর মধ্যে সিআইডি বাদি হয়ে তিনটি মামলা করে। বাকিগুলো ভুক্তভোগীদের পরিবার করে।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ মে লিবিয়ায় ২৬ জন বাংলাদেশীকে হত্যার ঘটনার পর মানবপাচারের ২৬ মামলার মধ্যে ২৫টি মামলা তদন্ত করছে সিআইডি। এখন পর্যন্ত ১৭১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হবিগঞ্জে দায়ের করা একটি মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। গ্রেফতার আসামিদের মধ্যে ৪২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement