২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মৃত মা সম্পর্কে কুৎসিত মন্তব্য করায় সৎ মাকে কুপিয়ে হত্যা করেন আশিক!

-

মৃত মা সম্পর্কে কুৎসিত মন্তব্য করাসহ নানা ধরনের ক্ষোভের কারণে সৎ মা সীমা বেগমকে (৩৩) কুপিয়ে হত্যা করেন সৎ ছেলে এস এম আশিকুর রহমান নাহিদ। এরপর তার লাশ আগুনে পড়িয়ে ফেলারও চেষ্টা করে করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশ আশিক ও তার স্ত্রীসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে। গত রোববার রাজধানীর কাফরুলের বাইশটেকি ইমাম নগর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে সীমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার শরীরে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ছাড়া শরীরের পেছন দিকটা আগুনে ঝলসানো ছিল। ঘটনার পরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে উত্তরখান থানা এলাকা থেকে নিহতের সৎ ছেলে এস এম আশিকুর রহমান নাহিদকে (২৭) গ্রেফতার করা হয়। একই দিন ভোর ৪টায় কাফরুলের ইমাম নগর ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ আশিকের স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা আইরিন (২২), শ্বশুর আসেক উল্লাহ (৫০), শাশুড়ি রোকেয়া বেগম (৪০), বাবা শাহজাহান শিকদার (৫০) ও শ্যালক সাকিকে (২০) গ্রেফতার করে। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, আশিকের বাবা শাহজাহান শিকদারের প্রথম স্ত্রী অনেক আগে মারা যান। এর পর এ বছরের শুরুতে তিনি সীমাকে বিয়ে করে ওই ফ্ল্যাটে ওঠেন। সেখানে আগের ঘরের সন্তান আশিক ও তার স্ত্রী আইরিনও থাকতেন। গত সোমবার বিকেলে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে জানতে পেরে পুলিশ ওই ফ্ল্যাটের একটি রুম থেকে সীমার লাশ উদ্ধার করে। ঘটনার পর বাসা থেকে পালিয়ে যান সৎ ছেলে আশিক ও তার স্ত্রী। এর পর পুলিশ অভিযান চালানো শুরু করে তাদের গ্রেফতার করে।
সীমা হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাফরুল থানার এসআই শারিফুজ্জামান নয়া দিগন্তকে বলেন, গ্রেফতারের পর আশিকের বক্তব্যে ধারণা করা হচ্ছে তীব্র ক্ষোভ থেকে তিনি তার সৎ মাকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। এর পর লাশ পুড়িয়ে দেয়ারও চেষ্টা করেছিলেন। তিনি বলেন, গ্রেফতার আশিক পুলিশকে জানিয়েছেন, তার মায়ের মৃত্যু হয়েছে অনেক আগে। এর পর তার ব্যবসায়ী বাবা সীমা বেগমকে বিয়ে করে ঘরে আনেন। তারা একই সংসারে থাকছিলেন; কিন্তু সীমা বেগম কোনোভাবেই তাদের সহ্য করতে পারছিলেন না। নিহত সীমা আশিকের মাকে কখনো দেখেননি। অথচ সেই মৃত মাকে নিয়ে আজেবাজে মন্তব্য করতেন। চোখের সামনে তার সব কিছু ওই বাসা থেকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন। এমনকি ওই মায়ের সন্তান আশিককেও ওই পরিবার থেকে ছুড়ে ফেলে দেয়ার হুমকি দিতেন। এসব বিষয়ে বাবার কাছে অভিযোগ করলেও তিনি কোনো প্রতিবাদ করতে সাহস পেতেন না। এসব নিয়ে আশিকের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম হয়। সেই ক্ষোভ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে পুলিশ।
শারিফুজ্জামান আরো বলেন, এটা আশিকের একক বক্তব্যের মূল কথা। তবে অন্য পক্ষেরও বক্তব্য নেয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু আশিক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেবেন তাই তাদের রিমান্ডে নেয়ার চিন্তা নেই।

 


আরো সংবাদ



premium cement