২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রতারক চক্রের কবলে পড়ে শত কোটি টাকা খোয়ালেন ব্যবসায়ী

-

তৈরী পোশাক খাতের ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এই প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে শত কোটি টাকার ক্ষতির শিকার হয়েছেন তৈরী পোশাক কারখানার মালিক উত্তরার আতিকুর রহমান। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০১২ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ২২টি এলসির মাধ্যমে তিনি ১৯১ কোটি ৪৭ লাখ ৭৪ হাজার টাকার সমপরিমাণ ও আরো ৭টি এলসির মাধ্যমে আট কোটি ৭১ লাখ টাকার বেশ কিছু মেশিনারিজ ক্রয় করেন। ২০১৭ সালের জুন মাসে তার অগোচরে রানিং টাইগার বিডি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক সাইদুর রহমান হাবিব পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে তার কোম্পানির চলমান ১৫০০টি মেশিন বন্ধ করে দেয়। এ বিষয়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক হাবিবকে জানানো হলে তিনি টাকা দাবি করে একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষরে বাধ্য করান। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী ১৩ নভেম্বর আদালতে সাইদুর রহমান হাবিবের বিরুদ্ধে ৬৮৪ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা করেন। ক্ষতিপূরণ মামলা করায় হাবিব ক্ষিপ্ত হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় গত বছরের ৯ ডিসেম্বর একটি মিথ্যা মামলা করেন। মামলাটি পরে ডিবিতে স্থানান্তর করেন। গত ৬ জানুয়ারি রাত ১১টায় ডিবির কয়েকজন সদস্য গ্রেফতার করে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়। রিমান্ড থাকা অবস্থায় ১৪ জানুয়ারি মোকারম হোসেন জিমি নামক ব্যক্তি ডিবি অফিসে জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষে প্রবেশ করেন। তিনি ডিবির লোক পরিচয়ে আতিককে টাকা দেয়ার জন্য নানামুখী চাপ দেন। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে জিমি ও রানিং টাইগার বিডির হাবিব ডিবি অফিসে যান। হাবিব জিমিকে ইন্টারপোলের লোক বলে পরিচয় করিয়ে দেয়। মোকারম হোসেন জিমি বিভিন্ন সময় নিজেকে এসবি, এনএসআই, ডিজিএফআই, দুদক, পিবিআই বা সিআইডির কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিতে থাকে। পরে জানতে পারি যে মোকারম হোসেন জিমি রানিং টাইগার বিডির পরিচালক। গত ১৫ জানুয়ারি ডিবি কার্যালয়ের জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষে দুই পুলিশ কর্মকর্তা, হাবিব ও জিমি টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। যদি টাকা না দিই তাহলে আমাকে পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে লাশ গায়েব করে দেবে বলে হুমকি দেয়। তাদের হুমকির মুখে ৭৬টি চেকে ৬০ কোটি টাকা লিখে দেই। তারা হুমকি দিয়ে বলে জামিনে ছাড়া পেয়ে কোথাও যাতে কোনো অভিযোগ না করি। তাদের হুমকির মুখে ভীত হয়ে গত ২৯ জানুয়ারী দুই কোটি টাকা দিতে বাধ্য হই। পরে তাদের বিভিন্ন হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে বাধ্য হয়ে গত ১ মার্চ আদালতে ৭২টি চেকের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ চেয়ে মামলা করি। মামলাটি আদালতে চলমান আছে।
আতিকুর রহমান আরো বলেন, হাবিব ও জিমির প্রতারণার কারণে তার মোট ১২২ কোটি ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার তৈরী পোশাক রফতানি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। বর্তমানে নিঃস্ব হয়ে তিনি ও তার পরিবার ঘর ছাড়া এবং নিরাপত্তাহীনতায় দিন যাপন করছেন। তাদের প্রতারণা থেকে বাঁচতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, ডিএমপি কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।


আরো সংবাদ



premium cement