২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
আর্টিকেল নাইনটিনের বিবৃতি

সাগর-রুনি হত্যা বিচারহীনতার সংস্কৃতির অন্যতম উদাহরণ

-

সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় ৭৬ বারের মতো পিছিয়েছে। আট বছর ধরে চাঞ্চল্যকর একটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় এভাবে পেছানো নজিরবিহীন। আর্টিকেল নাইনটিন মনে করে, বাংলাদেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতির প্রেক্ষাপটে ও তদন্তের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতার অন্যতম উদাহরণ হয়ে রইল এই হত্যা মামলা। এই তদন্তের কার্যক্রমে সদিচ্ছার অভাব, বিশেষ কোনো মহলের চাপ বা অন্য কোনো কারণ আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানায় আর্টিকেল নাইনটিন।
গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আর্টিকেল নাইনটিন বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় ৭৬ বার পেছানো প্রচলিত একটি প্রবাদবাক্যের কথা মনে করিয়ে দেয় বিচারÑ বিলম্বিত হওয়া মানে বিচার অস্বীকার করা (জাস্টিস ডিলেইড ইজ জাস্টিস ডিনাইড)। কিন্তু নির্মম সত্য হলোÑ সাগর-রুনি হত্যা মামলার ক্ষেত্রে এ কথাও বলা যাচ্ছে না। এই মামলার তদন্ত কবে শেষ হবে, বিচার আদৌ শুরু হবে কি না এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া খুব জরুরি।’
২০১২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। পরদিন পুলিশ তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে। হত্যাকাণ্ডের সময় বাসায় ছিল সাগর-রুনির সাড়ে চার বছরের ছেলে মাহির সরওয়ার মেঘ, তার বয়স এখন ১২ পার হয়েছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হবে। ২০১২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েই মহীউদ্দীন খান আলমগীর ১০ অক্টোবরের মধ্যে সাগর-রুনির হত্যারহস্য উদঘাটিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন। এরপর ৯ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে একজনকে ধরতে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন তিনি। পরে সেই ব্যক্তিকে ধরাও হয়, কিন্তু ঘটনার রহস্য আর উন্মোচিত হয়নি। কেন খুন হন সাগর-রুনি, সে রহস্যও ভেদ করা যায়নি।
এই হত্যাকাণ্ডের পর প্রথমে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ ও পরে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এই মামলার তদন্তভার পায়। দায়িত্ব পাওয়ার ৬২ দিনের মাথায় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টে ব্যর্থতা স্বীকার করে ডিবি। এরপর আদালত র্যাবকে মামলার তদন্তের নির্দেশ দেন। সেই থেকে র্যাব মামলাটি তদন্ত করছে এবং এখন পর্যন্ত সাতজন তদন্ত কর্মকর্তা বদল করেছে সংস্থাটি।
গত ৩ মার্চ ২০২০ তারিখে অগ্রগতি প্রতিবেদনে র্যাব আদালতকে জানায়, ‘ডিএনএ পরীক্ষার প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী সাগরকে বাঁধার জন্য ব্যবহৃত চাদর এবং রুনির টি-শার্ট থেকে প্রাপ্ত নমুনা পরীক্ষণে প্রতীয়মান হয় ওই হত্যাকাণ্ডে কমপক্ষে দুইজন অপরিচিত পুরুষ জড়িত ছিল।’ এ অপরিচিত অপরাধী শনাক্তকল্পে ডিএনএ পরীক্ষাকারী যুক্তরাষ্ট্রের দু’টি ল্যাব কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে র্যাব। এর পর থেকে আদালতে জমা দেয়া প্রতিটি প্রতিবেদনে শুধু ‘গুরুত্বসহ তদন্ত চলছে’ বলেই উল্লেখ করা হচ্ছে। ২৯ ডিসেম্বর ২০২০-এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নতুন সময় নির্ধারণ করেছেন আদালত। এ প্রসঙ্গে র্যাবের তদন্ত কর্মকর্তাকে উদ্দেশ করে আদালতের করা দুইটি প্রশ্ন এখানে প্রনিধানযোগ্য, ‘তদন্ত শেষ হবে কবে? তদন্ত কি অনন্তকাল ধরে চলবে?’
এ প্রসঙ্গে ফারুখ ফয়সল বলেন, এটা মনে করার কোনো কারণ নেই যে, সাগর-রুনি হত্যায় জড়িত খুনিদের খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই যুগে কোনো ঘটনাই আড়াল করে রাখা যায় না। উগ্রবাদ দমনে ও চাঞ্চল্যকর বিভিন্ন মামলার তদন্তে সরকারের সদিচ্ছা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকার পাশাপাশি প্রযুক্তি সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। আমরা সেই সদিচ্ছার প্রতিফলন সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তের ক্ষেত্রেও দেখতে চাই।


আরো সংবাদ



premium cement
এবারের আইপিএলে কমলা ও বেগুনি টুপির লড়াইয়ে কারা সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে সন্ত্রাসনির্ভর হয়ে গেছে : রিজভী রাশিয়ার ৯৯টি ক্ষেপণাস্ত্রের ৮৪টি ভূপাতিত করেছে ইউক্রেন আওয়ামী লীগকে ‘ভারতীয় পণ্য’ বললেন গয়েশ্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে দাগনভুঞার যুবক নিহত কাশ্মিরে ট্যাক্সি খাদে পড়ে নিহত ১০ অবশেষে অধিনায়কের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছল পাকিস্তান জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে আবার অর্থায়ন শুরু করবে জাপান শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে : ওবায়দুল কাদের রাশিয়া সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৬ সেনা সদস্য

সকল