শিক্ষাকে ধ্বংস করতেই অটো পাসের সিদ্ধান্ত
সুতার ওপর ঝুলে আছে সরকার : মান্না ; দেশও চালাচ্ছে অটো পাসের সরকার - ডা: জাফরুল্লাহ- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৫ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০
দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে সরকার পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট নাগরিক ও শিক্ষাবিদরা। বিশেষ করে করোনার অজুহাতে শিক্ষার্থীদের অটো পাসের মাধ্যমে শিক্ষাকে আরো কয়েক ধাপ পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। সরকার এক দিকে যেমন নিজেরাই বিনা ভোটে অটো পাসের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে দেশ চালাচ্ছে, তাই ছাত্র আন্দোলনকে ভয় করে তারাও এখন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীদের অটো পাস দিয়ে দিচ্ছে। গতকাল শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভ (ইআরআই) আয়োজিত ‘করোনাকালীন পরীক্ষায় অটো পাস : শিক্ষার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তরা এসব মন্তব্য করেন।
সভায় গণস্বাস্থ কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান ট্রাস্টি ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, শুধু শিক্ষার্থীরাই অটো পাস করছে না, বর্তমান সরকারও অটো পাস করে দেশ চালাচ্ছে। তিনি বলেন, এই সরকার ২০০৮ সালে অটো পাস করেছে। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালেও অটো পাস করে ক্ষমতায় বসেছে। অন্য দিকে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, এই সরকার এখন সুতার ওপর ঝুলে আছে। বিশেষ একটি দেশের প্রতি নতজানু থাকার কারণেই মূলত এই সরকার এখনো টিকে আছে। নতজানুর এই নীতি বাদ দিলে সরকার এক দিনও ক্ষমতায় টিকবে না।
ইআরআইর চেয়ারম্যান ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়াম, অ্যাডভোকেট রফিক শিকদার, অধ্যাপক শাহ আলম, রোকেয়া চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিনিয়র সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরো বলেন, জাতিকে ধ্বংস করার জন্যই অটো পাস দেয়া হচ্ছে। পরীক্ষায় করোনার কারণটা একেবারেই অজুহাত। দেশে যেভাবে গার্মেন্ট চলছে, অফিস-আদালত চলছে তা দেখে বোঝার কোনো উপায় নেই এখানে করোনার কোনো প্রভাব আছে। তাই স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার কোনো সুযোগ নেই। এটি জাতিকে ধ্বংস করে দেয়ার একটা অজুহাত মাত্র। এই সরকার নিজেরাই বিনা ভোটে অটো পাসের সরকার বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, শিক্ষার্থী সবাই মিলে যদি মনে করে অটো প্রমোশন একটা লজ্জার বিষয় তা হলে এর বিরুদ্ধে তাদেরই আগে প্রতিবাদ করা দরকার। কেননা এই সার্টিফিকেট সামনের দিনে তাদের জন্য লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তিনি আরো বলেন, দেশের সব কিছু খোলা থাকলেও শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ। দেশের সরকারই যেখানে বিনা ভোটে অটো পাসের মাধ্যমে দেশ চালাচ্ছে সেখানে শিক্ষার্থীদের অটো পাসের মধ্যে দোষের কিছু নেই। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের এই অটো পাসের বিষয়ে আমরা প্রতিবাদ করলেও মূলত শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকেই অটো পাসের বিষয়ে প্রতিবাদ হওয়া দরকার। ছাত্র আন্দোলনের ভয়ে সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সাহস পাচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন খাতের অনিয়ম আর অবস্থাপনার বিষয় তুলে ধরে ছাত্ররা যদি রাস্তায় নামে তা হলে এই বছরের মধ্যেই সরকার পতনের মাধ্যমে নতুন একটি সকাল আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
সভাপতির বক্তব্যে এহছানুল হক মিলন বলেন, কোনো অবস্থায়ই অটো পাস দিয়ে এ জাতিকে আর ধ্বংস করা যাবে না। সরকার অটো পাসে আসতে পারে, সংসদ সদস্য অটো পাসে আসতে পারে। কিন্তু শিক্ষায় অটো পাস দেয়া যাবে না। তিনি বলেন, জাতিকে ধ্বংস করার কোনো অধিকার এই সরকারের নেই। এ জন্যই আমরা বলব, অবৈধ সরকারের অবৈধ সিদ্ধান্ত এই জাতি মানে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা