১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

সংগ্রাম সম্পাদকের জামিন স্থগিত

-

রাষ্ট্রদ্রোহ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। গতকাল মঙ্গলবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো: নুরুজ্জামানের আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে আগামী আট সপ্তাহের জন্য হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মো: এমদাদুল হক এবং বিচারপতি মো: আকরাম হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এক বছরের জন্য আবুল আসাদের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন। পাশাপাশি কেন তাকে স্থায়ী জামিন দেয়া হবে না, সে মর্মে রাষ্ট্রপক্ষকে কারণ দর্শানোর জন্য রুল জারি করেন।
আদালতে আবুল আসাদের পক্ষে শুনানি করেন প্রবীণ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। সাথে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো: আসাদ উদ্দিন।
আইনজীবীরা জানান, গত বছরের ডিসেম্বর মাসের ১২ তারিখে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা আব্দুল কাদের মোল্লাকে শহীদ উপাধি দিয়ে সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে দণ্ডবিধির রাষ্ট্রদ্রোহ ও ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করেন এক মুক্তিযোদ্ধা। সে মামলায় ১৪ ডিসেম্বর আবুল আসাদকে তার অফিস থেকে গ্রেফতার করা হয়।
আদেশের পর আইনজীবী শিশির মনির বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করতে হলে সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে কমপ্লেইন্ট-এর মাধ্যমে তা করতে হয়। কিন্তু এ মামলাটি একজন ব্যক্তি থানায় এফআইআর দায়েরের মাধ্যমে করেছেন যা আইন দ্বারা বারিত। অন্যদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করতে হলে অভিযোগের বিষয়টি কোনো ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিকস মাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার হতে হবে। কিন্তু এ মামলায় বাদি প্রিন্টেড পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন যা এ আইনে বিচার্য নয়। এ ছাড়া জামিন প্রদানের সময় আদালত আসামির প্রায় ৮০ বছর বয়সের বিষয়টিও বিবেচনায় নিয়েছিলেন।
জামায়াতের নিন্দা
বিশিষ্ট সাংবাদিক দৈনিক সংগ্রামের প্রবীণ সম্পাদক আবুল আসাদের জামিন স্থগিত হওয়ায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ২৯ সেপ্টেম্বর প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, আবুল আসাদ প্রায় সাড়ে ৯ মাস ধরে কারাগারে বন্দিজীবন-যাপন করছেন। তিনি একজন প্রবীণ সাংবাদিক। দেশের প্রাচীন একটি পত্রিকার সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাকে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। দেশের উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিন পান। তিনি আইনি প্রক্রিয়ায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর কারাগার থেকে বের হওয়ার সব প্রস্তুতি যখন চূড়ান্ত, তখন সরকারের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার জামিন স্থগিত হয়ে যায়। সরকারের এ ভূমিকায় আমরা বিস্মিত ও হতবাক।
আবুল আসাদ সাহিত্য ও সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রেখে চলেছেন। তার মতো একজন বয়োবৃদ্ধ সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীকে অন্যায়ভাবে আটক রেখে সরকার তার ওপর জুলুম করছে। সরকারের এ ভূমিকায় সংবাদপত্র ও সাংবাদিক দলনের চরিত্র ফুটে উঠেছে।
আমরা অবিলম্বে আবুল আসাদকে মুক্তি দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।


আরো সংবাদ



premium cement