৩৩ দিন পর ৫ লাখ টাকায় মুক্তি পেল দুই বাঙালি
- রামগড় (খাগড়াছড়ি) সংবাদদাতা
- ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০
খাগড়াছড়ির রামগড়ে ইউপিডিএফের (প্রসীত গ্রুপ) সন্ত্রাসীদের হাতে অপহৃত হওয়া দুই বাঙালিকে অপহরণের ৩৩ দিন পর মুক্তিপণের বিনিময়ে উদ্ধার করেছে তাদের স্বজনরা। প্রশাসন অপহৃতদের উদ্ধারে ব্যর্থ হওয়ার পর উদ্বিগ্ন স্বজনরা ভিন্ন কৌশলে সন্ত্রাসীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে তাদের উদ্ধার করে। অপহৃত দুইজন হলেনÑ জুয়েল ট্রেডার্সের বিপণন কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আলম (৩৫) ও কর্মচারী রাজু মিয়া (২৭)।
গত ২৩ আগস্ট ফেনী থেকে খাগড়াছড়িগামী জুয়েল ট্রেডার্সের পিকাপ গাড়িটি প্লাস্টিকের পণ্য নিয়ে রামগড়ের যৌথ খামার নামক স্থানে পৌঁছালে সেখানে অপহরণের ঘটনা ঘটে। ওই স্থানে ইউপিডিএফের (প্রসীত গ্রুপ) পাঁচজনের একটি দল দু’টি মোটরসাইকেলে এসে পিলাক ঘাট এলাকার পোস্ট কমান্ডারের নেতৃত্বে গাড়ি দখল করে এ অপহরণের ঘটনা ঘটায়। অপহরণকারীরা গাড়ির চালক মিজানুর রহমানকে ছেড়ে দিয়ে বিপণন কর্মকর্তা মো: মঞ্জুরুল আলম ও মিস্ত্রি রাজু মিয়াকে অস্ত্রের মুখে বৌদ্ধপাড়ার দিকে নিয়ে যায়। অপহৃত মো: মঞ্জুরুল আলম চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকার সাইদুল হকের ছেলে ও মিস্ত্রি রাজু মিয়া নোয়াখালীর সুধারাম থানার বাসিন্দা। সন্ত্রাসীরা গাড়ির চাবি রেখে দিলেও পুলিশ গিয়ে গাড়িটি উদ্ধার করে রামগড় থানায় নিয়ে আসে। পরবর্তী সময়ে গাড়ির চালক মিজানুর রহমান বাদি হয়ে রামগড় থানায় মামলা করেন।
জুয়েল ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী ফেনী মাস্টারপাড়ার ধর্মপুরের বাসিন্দা মেহেদী হাসান জুয়েল মোবাইলে জানান, অপহরণের পর দীর্ঘ দিন পেরিয়ে গেলেও উদ্ধারে প্রশাসনের অগ্রগতি না দেখে অপহৃত রাজুর স্বজন কামাল উদ্দীনের মাধ্যমে অপহরণকারীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। সন্ত্রাসীরা প্রথমে আট লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করলে ও শেষ পর্যন্ত পাঁচ লাখ টাকার মধ্যে তাদের রাজি করানো হয়। কামাল উদ্দীন গুইমারা বড় পিলাকের ছনখোলার গরুবাজার এলাকায় গিয়ে সন্ত্রাসীদের মুক্তিপণ বুঝিয়ে দেয়। মুক্তিপণ পেয়ে সন্ত্রাসীরা অপহৃতদের জেলার মানিকছড়ি গিরি মৈত্রী কলেজ এলাকায় ছেড়ে দেয়। পরবর্তী সময়ে তাদের ফেনী যাওয়ার আগে পর্যন্ত কারো সাথে যোগাযোগ করা যাবে না এমন শর্ত দিয়ে ফেনীতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। মেহেদী হাসান জুয়েল আরো জানান, তাদের উদ্ধারের বিষয়টি রামগড় থানা পুলিশকে জানানো হলে অপহৃতদের রামগড় থানায় নিয়ে আসা হয়।
এই মামলার তদন্তকারী অফিসার রামগড় থানার সাব-ইন্সপেক্টর মুজিবুর রহমান জানান, অপহৃতদের উদ্ধার করে রামগড় থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। অপহৃতদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয়ার জন্য খাগড়াছড়ি আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মনির হোসেন জানান, অপহৃতদের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী নেয়ার জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে। জবানবন্দী নেয়া শেষে আদালতের মাধ্যমে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।