গাজীপুরে আদম ব্যবসায়ীকে উদ্ধারে গিয়ে পুলিশের অস্ত্র গুলি ছিনতাই : আটক ৫
- শ্রীপুর (গাজীপুর) সংবাদদাতা
- ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০
গাজীপুরের শ্রীপুরের রাজাবাড়ির নোয়াপাড়া এলাকায় শুক্রবার রাতে এক আদম ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করতে গিয়ে জনতার হামলায় দুই পুলিশ ও এক আনসার সদস্য ছাড়াও আদম ব্যবসায়ীসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। এ সময় হামলাকারীেেদর বিরুদ্ধে পুলিশের শর্টগান ও গুলি ছিনিয়ে নেয়ারও অভিযোগ করেছে পুলিশ। পরে অভিযান চালিয়ে পাঁচ হামলাকারীকে আটক এবং অস্ত্র-গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
হামলার শিকার কুমিল্লার দেবীদ্বার থানার নবিয়া গ্রামের আবুল হোসেন জানান, তিনি ঢাকার পুরানা পল্টন এলাকার ‘রাখা ইন্টারন্যাশনাল’এর মার্কেটিং অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। লাইসেন্সধারী এ প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন দেশে বৈধভাবে লোক পাঠানো হয়। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ি নোয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন ও শাহদত হোসেন নামে দু’জনকে দুবাই পাঠানো জন্য তাদের কাছ থেকে দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা নেয়া হয়। তাদের কাগজপত্র প্রক্রিয়া করতে গিয়ে করোনাকালীন লকডাউনে পড়ে যান তারা। এতে করে তাদের আর বিদেশ পাঠানো সম্ভব হয়নি। এমতাবস্থায় ইসমাইল হোসেন তাদের জমা দেয়া টাকা ফেরত দিতে বলেন। পরে এপ্রিলে ইসমাইলকে ৫০ হাজার টাকা বিকাশ করে ফেরত পাঠানো হয়। পরে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ফোন করে ইসমাইল আমাকে তার গ্রামের বাড়িতে দাওয়াত দেন এবং আরো লোকজনকে বিদেশ পাঠানোর জন্য আলোচনা করার প্রস্তাব দেন। দাওয়াত পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি (আবুল হোসেন) ও তার অপর বন্ধু মো: ফয়সাল আহমেদকে নিয়ে শ্রীপুরের নোয়াপাড়া ইসমাইলের বাসায় যান। পরে ইসমাইল তার ঘরের ভেতর আমাদের খাওয়া-দাওয়া সেরে দরজা আটকে দিয়ে তার স্ত্রী শারমিন আক্তার রিমা, ও শ্বশুর-শাশুড়িসহ কয়েকজন নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে একটি সাদা স্টাম্পে আমাকে ৩০০ টাকা মূল্যের স্বাক্ষর নেয় এবং তারা আমার সাথে থাকা দু’টি মোবাইল ফোনও ছিনিয়ে যায়। পরে ওই স্ট্যাম্পে ইসমাইল আমার কাছে পাঁচ লাখ টাকা পাবেন বলে লিখে এনে আমাকে ওইদিনই পাঁচ লাখ টাকা পরিশোধ করার জন্য চাপ দেয়। বিষয়টি জানিয়ে আমার সহকর্মী মো: ফয়সালকে খবর দিলে পরদিন শুক্রবার রাত ৮টায় ফয়সাল, তার বন্ধু ওমর বেপারী, মো: কালাম ও মাসুমকে সাথে নিয়ে ইসমাইলের বাড়িতে পৌঁছান। একপর্যায়ে ইসমাইল ও তার লোকজন তাদের ওপর হামলা করে। মাসুম বাইরে থেকে টের পেয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানায়।
শ্রীপুর থানার ওসি খন্দেকার ইমাম হাসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে শ্রীপুর থানার টহল পুলিশের এসআই মো: রফিকুল ইসলাম, কনস্টেবল খোরশেদ আলম ও এক অনসার সদস্য ইসমাইলের বাড়িতে যান। এ সময় ইসমাইল ও তার লোকজন অতর্কিতে পুলিশের ওপরও হামলা চালায় এবং পুলিশের সাথে থাকা শর্টগান ও পিস্তলের গুলিভর্তি ম্যাগজিন ছিনিয়ে নেয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দুই মহিলাসহ পাঁচজনকে আটক এবং অস্ত্র-গুলি উদ্ধার করা হয়। আহত পুলিশকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানায় মারামারি ও অস্ত্র আইনে দু’টি মামলা মামলা হয়েছে। মামলায় ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মূল হামলাকারী ইসমাইলসহ অন্যরা পলাতক রয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা