২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বড়াইগ্রামে আ’লীগ নেতা আয়নাল হত্যা মামলার রায়

বিএনপি নেতা তোরাব ও শামীমের মৃত্যুদণ্ড : ১১ আসামি খালাস

-

বড়াইগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি ও সাবেক মাঝগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ডা: আয়নাল হক হত্যা মামলার রায়ে বিএনপি নেতা তোরাব আলী ও শামীম কায়সারকে মৃত্যুদণ্ড ও প্রত্যেককে ১০ হাজার এক টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে মামলায় ১১ জন আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া মামলার প্রধান অভিযুক্ত সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ একরামুল আলমসহ চার আসামি ইতঃপূর্বেই মারা যাওয়ায় মামলা থেকে তাদেরকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সোমবার জনাকীর্ণ আদালতে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান সিদ্দিক বহুল আলোচিত এ হত্যা মামলার রায় দেন। এ দিকে, মামলার রায়ে বাদি ও বিবাদি উভয়পক্ষই অসন্তোষ প্রকাশ করে উচ্চ আদালতে আপিল করবে বলে জানিয়েছে।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি তোরাব আলী উপজেলার মহিষভাঙ্গা গ্রামের বাহার উদ্দিন মোল্লার ছেলে এবং শামীম কায়সার একই গ্রামের পলান মোল্লার ছেলে। তারা দু’জনেই বনপাড়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
মামলায় বাদিপক্ষের আইনজীবী নাটোর জজকোর্টের পিপি সিরাজুল ইসলাম জানান, ২০০২ সালের ২৮ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বনপাড়া হীরামন সিনেমা হলের সামনে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আব্দুল আলিম মোল্লাকে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। এর পরপরই বিএনপি নেতাকর্মীরা বনপাড়া বাজারে ডা: আয়নাল হকের চেম্বারে হামলা করে। এ সময় তাকে টেনে-হিঁচড়ে চেম্বার থেকে বের করে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে তারা। একই সাথে তারা মহিষভাঙ্গা গ্রামের আয়নাল হকের বাড়িসহ প্রায় ৫০টি বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে আহত আয়নাল হকের স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ৩১ মার্চ নিহতের পুত্রবধূ বর্তমান পৌরমেয়র কে এম জাকির হোসেনের স্ত্রী নাজমা বেগম বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ১৫ জনের নামে চার্জশিট দেয়। আদালত বিচারিক কার্যক্রম চলাকালে মোট ১০ জনের সাক্ষ্য নিয়ে দেড় যুগ পর গতকাল এই মামলার রায় ঘোষণা করেন।
মামলার রায়ে বলা হয়, মূল অভিযুক্ত উপজেলা বিএনপির সভপাতি অধ্যক্ষ একরামুল আলম এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাহের উদ্দিন মোল্লার ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আয়নাল হকের মৃত্যু হয়। কিন্তু এই দুইজনসহ মামলায় অভিযুক্ত জিয়াউল হক সেন্টু এবং আলিমুদ্দিন মৃত্যুবরণ করায় তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া মামলায় অভিযুক্ত মহিষভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা বনপাড়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক লুৎফর রহমান, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আতাউর রহমান, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সালাম মোল্লা, বিএনপি নেতা ছোরাব আলী, নাজমুল হক, বনপাড়া মহল্লার বাসিন্দা ও পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল করিম, জিয়াউল করিম মামুন ও আব্দুর রহিম, জোয়াড়ী গ্রামের আনিসুর রহমান, কাচুটিয়া গ্রামের বয়েন উদ্দিন মণ্ডল ও কামারদহ গ্রামের রেজাউল করিম ভুট্টোর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement