২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
মিরপুরের প্যারিস মার্কেটও হাসপাতাল হবে

মহাখালী ডিএনসিসি মার্কেটকে ৫০০ শয্যার হাসপাতালের পরিকল্পনা

-

রাজধানীর মহাখালী ডিএনসিসি মার্কেটকে ৫০০ শয্যার আরবান হাসপাতালে রূপান্তরের পরিকল্পনা নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। ৭.১৭ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এই মার্কেটটির আয়তন এক লাখ ৮০ হাজার ৫৬০ বর্গফুট। পাইকারি কাঁচাবাজারের জন্য এ মার্কেট তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তেমন আগ্রহ না দেখানোয় অনেক দিন পড়ে ছিল মার্কেটটি। সম্প্রতি করোনা মহামারীর কারণে মার্কেটটিকে করোনা আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিদেশগামীদের করোনা টেস্টের জন্য বিশেষভাবে এ মার্কেটটি ব্যবহৃত হচ্ছে। যেখানে প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার ব্যক্তি করোনা টেস্টের নমুনা দিতে পারেন।
গতকাল এ কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শনে যান ডিএনসিসি মেয়র মো: আতিকুল ইসলাম। এ সময় তিনি মহাখালীর মার্কেটকে ৫০০ শয্যার আরবান হাসপাতালে রূপান্তরের পরিকল্পনার কথা জানান। এ ছাড়া মিরপুরের প্যারিস মার্কেটকেও হাসপাতালে রূপান্তরের চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানান মেয়র। আতিকুল ইসলাম বলেন, প্যারিস মার্কেটকে কিভাবে হাসপাতালে রূপান্তর করা যায় তা চিন্তাভাবনা করছি। এই দু’টি ভবনকে হাসপাতালের রূপান্তর করার জন্য খুব শিগগিরই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি প্রস্তাবনা আমরা জমা দেবো। এখানে বেড থেকে শুরু করে সব ধরনের ইকুইপমেন্ট মোটামুটি আছে। ছয়তলায় ইংল্যান্ড থেকে আনা উন্নতমানের ২৫টি আইসিইউ আছে। আমরা এটিকে অচিরেই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নগরবাসীর জন্য একটি আধুনিক মাপের হাসপাতাল করার ইচ্ছা আমরা পোষণ করছি। আমাদের কাউন্সিলররাও এতে মত দিয়েছেন। আমাদের সবই আছে। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে ডাক্তার, নার্স পেয়েছি, সিএমএইচ থেকে ১৯ জন অফিসার পেয়েছি। আমরা সবাই মিলে চাই নগরবাসীকে একটি সুন্দর হাসপাতাল উপহার দিতে। আমি মনে করি এখানে হাসপাতাল হলে নগরবাসী উপকৃত হবেন। পরিদর্শনকালে মেয়র আইসোলেশন সেন্টারটি ঘুরে দেখেন এবং কোভিড টেস্ট করাতে আসা মানুষের সাথে কথা বলেন।
পরিদর্শন শেষে মেয়র সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, ডিএনসিসি মার্কেট মূলত পাইকারি কাঁচাবাজারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এটি বাজারে বাস্তবায়ন করা যায়নি। ৭০০ দোকান বিক্রয়ের পরিকল্পনা নিয়ে গত বছর আমরা সিটি করপোরেশনের বাজেট প্রণয়ন করেছিলাম। কিন্তু এর মধ্যে কোভিড এলো। কোভিড আমাদের অনেক বড় শিক্ষা দিয়ে গেছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নিজস্ব কোনো হাসপাতাল নেই। ঢাকা সিটি করপোরেশন যখন দুই ভাগ হয় তিনটি হাসপাতালই দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে পড়েছে। মার্চের শুরুতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিলে আমরা বলেছিলাম প্রয়োজন হলে এই মার্কেটকে আইসোলেশন সেন্টারে রূপান্তর করা হবে। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এটি আর্মড ফোর্স ডিভিশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আর্মড ফোর্স ডিভিশন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাথে আমি একটি মিটিং করে কাজ শুরু করি। মেয়র বলেন, যারা বিদেশ যাচ্ছেন, তারা করোনা পরীক্ষা নিয়ে সমস্যার মধ্যে থাকেন। তাই এই মার্কেটটিকে পরবর্তীতে কোভিড টেস্টের জন্য রূপান্তর করা হয়। যারা বিদেশ যাবেন, তারা যাতে করোনা টেস্টের সনদ নিতে পারেন। এ ধরনের একটি প্লাটফর্ম প্রয়োজন। আমরা এখান থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোভিড টেস্টের ফল দেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করি। প্রথম দিন ২০ জুলাই এখানে ১২৩ জন পরীক্ষা করতে এসেছিল। আমাদের একটা পরিকল্পনা ছিল যারা বিদেশ যাবেন তারা যেন নির্বিঘেœ, কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই করোনা টেস্ট করতে পারেন। বর্তমানে এখানে প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার করোনা টেস্ট করা যায়। এই ক্যাপাসিটি আমরা অর্জন করেছি। এখানে সমগ্র দেশ থেকেই মানুষ আসে করোনা পরীক্ষা করার জন্য। মানুষ যতই অনলাইনে ফরম ফিলাপ করে অনলাইনে টাকা জমা দিতে পারেন, সে ব্যবস্থা করার জন্য আমি নির্দেশ দিয়েছি। আমরা চাই নগরবাসীকে যথাসম্ভব কষ্ট কম দিতে।
আতিকুল ইসলাম আরো বলেন, যেহেতু ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কোনো ধরনের আরবান হাসপাতাল নেই, এটিকে কিভাবে আরবান হাসপাতালে রূপান্তর করা যায় তার পরিকল্পনা করছি। এই ভবনকে আমরা যদি আরবান হাসপাতালে রূপান্তর করতে পারি, তাহলে নগরবাসীর জন্য অনেক সুবিধা হবে।
পরিদর্শনকালে আইসোলেশন সেন্টারের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: জুবায়েদুর রহমান, আর্মড ফোর্স ডিভিশনের মহাপরিচালক (অপারেশন ও প্লø্যানিং) এ এন এম মঞ্জুরুল হক মজুমদার, ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন, আঞ্চলিক কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল বাকী, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক মো: হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement