২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

কবে হবে সংগ্রহশালার ঘাট কখন ভাসবে শিশুস্বর্গ

সুলতান ভক্তদের প্রশ্ন
নড়াইলে সুলতান সংগ্রহশালার ঘাট নির্মাণের কাজ দুই বছর আগে উদ্বোধন করা হলেও তা শেষ হয়নি। ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গের পাশে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পিলারের রডগুলো বিপজ্জনক অবস্থায় এলোমেলো পড়ে আছে : নয়া দিগন্ত -

কবে আলোর মুখ দেখবে সুলতান সংগ্রহশালার ঘাট? কখন আবার ‘শিশুস্বর্গ’ কলকাকলী মুখর হয়ে ঘুরে বেড়াবে চিত্রা নদীতে। এমন প্রশ্ন এখন সুলতান ভক্তদের। কারণ ভিত্তিপ্রস্তর দিয়েই কাজের শুরুতে থমকে গেছে সংগ্রহশালার ঘাট নির্মাণের কাজ। এস এম সুলতান সংগ্রহশালার পাশে চিত্রা নদীর পাড়ে ‘ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গ’ ঘিরে এই ঘাট নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। তবে কাজ বেশি দূর এগোয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এস এম সুলতানের ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গ তথা দ্বিতলা নৌকাটি চিত্রা নদীর পাড়ে যথাযথভাবে সংরক্ষণসহ পর্যটক আকর্ষণীয় করতে ২০১৮ সালের জুনে দৃষ্টিনন্দন ‘সুলতান ঘাট’ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কয়েকটি পিলার ঢালাইয়ের মধ্য দিয়ে নির্মাণকাজ শুরু করা হলেও তা বেশি দূর এগোয়নি। নকশা পরিবর্তন ও আর্থিক সমস্যায় প্রায় দুই মাস পরেই নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। এ কাজের জন্য প্রায় ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পিলারের চারপাশে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। রডগুলো বেরিয়ে আঁকাবাঁকা হয়ে গেছে। এমনকি রডগুলো এলোমেলো অবস্থায় ছড়িয়ে থাকায় দর্শনার্থীসহ স্থানীয়দের জন্য বিপদের কারণ হয়েছে। এ ছাড়া ঝোপঝাড়ে একাকার হয়ে আছে। এ অব্যবস্থাপনার কারণে পর্যটকদের মনে হতে পারে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে এস এম সুলতানের ‘ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গ’। এমনটিই জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যদিও বর্তমানে করোনাকালে দূর-দূরান্তের পর্যটকদের তেমন একটা দেখা নেই। তবে ঈদ আনন্দে অনেকে দেখতে এসেছেন সুলতান সংগ্রহশালাসহ দ্বিতলা এই নৌকাটি।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, বড় পরিসরে সুলতান সংগ্রহশালার ঘাট নির্মাণসহ ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গটি মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ কারণে অর্থের পরিমাণও বেড়ে গেছে। ঘাটটিকে দৃষ্টিনন্দন ও বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে প্রায় ২ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। এ জন্য সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত বিভাগে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করছি এই অর্থবছরেই বরাদ্দ পেয়ে যাবো। এরপর কাজ শুরু হবে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এস এম সুলতান তার জীবদ্দশায় চিত্রা নদীতে শিশুদের নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গে। ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৫ ফুট প্রস্থের ইঞ্জিনচালিত দ্বিতল নৌকাটি (ভ্রাম্যমাণ শিশুস্বর্গ) সুলতান তার নিজের অর্থে তৈরি করান। প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছিল। সুলতানের মৃত্যুর পর চিত্রা নদীর পাড়ে তুলে টিনের ছাউনির নিচে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয় দ্বিতল নৌকাটি। তবে যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে নৌকাটি ধীরে ধীরে সৌন্দর্য হারিয়েছে।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইলের মাছিমদিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বার্ধক্যজনিত কারণে ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। করোনা সঙ্কটের কারণে আগামী ১০ আগস্ট জন্মদিনে বর্ণাঢ্য আয়োজন থাকছে না বলে এস এম সুলতান ফাউন্ডেশন ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।


আরো সংবাদ



premium cement