২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দীর্ঘ ৫ বছর পর ২৬ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট

হাবিপ্রবির ২ মেধাবী ছাত্র হত্যা মামলা
-

দিনাজপুুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হাবিপ্রবির দুই মেধাবী ছাত্র খুনের ঘটনায় দিনাজপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের (সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত) সভাপতি আবু ইবনে রজব, কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ কাঞ্চন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া জাকিরসহ ২৬ নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার চার্জশিট প্রদান করা হলো। গত ৩০ জুলাই বিকেলে দিনাজপুর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আমলি আদালত-১ (সদর)-এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির ওসি রমজান আলী।
হত্যা মামলাটির অভিযুক্ত অপর আসামিরা হলেনÑ শহরের দক্ষিণ বালুবাড়ীর রশিদুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা সিরাজুল সালেকিন রানা, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মাহমুদুল হাসান ওরফে সিঙ্গেল, ছাত্রলীগ নেতা হারুনুর রশিদ ওরফে রায়হান, রকিবুল ইসলাম মিথুন, যুবলীগ নেতা মাহমুদুর রহমান মাসুম, ছাত্রলীগ নেতা নাহিদ আহমেদ নয়ন, ঘাষিপাড়ার মমিনুল ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা রুহুল কুদ্দুস জোহা, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থানার আমিনুল ইসলাম, খানসামা উপজেলার আশরাফুল আলম, ফুলবাড়ির নাজমুল হাসান ওরফে মামুন, সদর উপজেলার কামরুজ্জামান ওরফে কামু, বড়ইল গ্রামের জুয়েল ইসলাম, উত্তর বালুবাড়ীর নাছিম আলী, ক্ষেত্রীপাড়ার তায়েফ বিন শরীফ, বড়ইল মোল্লাপাড়ার আবু হারেজ ওরফে বুলু, রাজবাড়ী সুখসাগরের আজিজার রহমান, দিনাজপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ সুজন, পুলহাটের আরমান বিশ্বাস, উপশহর এলাকার আরাফাত হোসেন, কসবা মিশন রোডের শহিদুল ইসলাম ওরফে সাজু ও আবু সাঈদ শেরু।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, নিয়োগ ও বিভিন্ন প্রকল্পে সুবিধা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় তৎকালীন ভিসি রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে হাবিপ্রবি ছাত্রলীগ। অন্য দিকে ছাত্রলীগের আরেকটি গ্রুপ ভিসির পক্ষ নিয়ে ছাত্রলীগের আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে তারা ভিসির মদদে মারধর করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করে। পরে বিতাড়িতরা আধিপত্য পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে। ২০১৫ সালের ১৬ এপ্রিল রাত ৮টায় অডিটোরিয়াম-১-এ ভেটেরিনারি অনুষদের নবীনবরণ অনুষ্ঠানের সময় দুটি মাইক্রোবাস ও কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে অডিটোরিয়ামে ঢুকে ককটেল বিস্ফোরণ ও এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় বিদ্যুৎ চলে গেলে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সেখান থেকে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী শেখ রাসেল হলে গিয়ে অবস্থান নেন। হামলাকারীরা চার দিক থেকে শেখ রাসেল হল ঘেরাও করে হামলা চালায়। একপর্যায়ে তারা শেখ রাসেল হলের কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবু ইবনে রজব ও কোতোয়ালি আওয়ামী লীগ নেতা বিশ্বজিৎ ঘোষ কাঞ্চনের নেতৃত্বে সশস্ত্র হামলা চালায়। সেখানেই জাকারিয়া ও মাহমুদুল হাসান মিল্টন নামে দুই মেধাবী ছাত্র মারা যান। খুনের ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে দু’টি মামলায় ৪১ জনকে আসামি করা হয়। ওই বছরেরই ২০ এপ্রিল কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক আবদুন নুর বাদি হয়ে অজ্ঞাত ৫০-৬০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। গত বছরের মার্চে মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তরিত করা হয়। গত ৫ বছরেও মামলার কোনো কূল-কিনারা না হওয়ায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে নিহত জাকারিয়া ও মাহমুদুল হাসান মিল্টনের মা-বাবা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দেন। এরপর গত ১১ জুন আবু ইবনে রজব ও সাব্বির আহমেদ সুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও পোস্টারিং করা হয়। এ ব্যাপারে দিনাজপুর কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক ইসরাইল হোসেন বলেন, ‘চার্জশিটের কপি পেয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement