২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে দর্শনার্থীদের ভিড়

পর্যটন স্পট ও দোকানপাট বন্ধ
-

চার মাস পর বিশে^র দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত স্বাস্থ্যবিধি মানা দর্শনার্থীদের জন্য শিথিল করা হয়েছে। এতে ঈদ পরবর্তী সমুদ্রসৈকতে স্থানীয় দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটক কম হলেও স্থানীয়দের সমাগমে সমুদ্রসৈকতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসতে শুরু করেছে। তবে হোটেল মোটেল, দোকানপাট ও পর্যটন স্পটগুলো এখনো বন্ধ রয়েছে। ঈদুল আজহার পরও কক্সবাজারের পর্যটন স্পটসহ হোটেল মোটেল ও দোকানপাট বন্ধ থাকায় পর্যটন খাতে দৈনিক ২০০ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে হোটেল মোটেল ও দোকানপাটসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দিলে পর্যটকদের আগমনে আবারো মুখরিত হয়ে উঠবে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত।
প্রতি বছর ঈদের পরদিন থেকে সপ্তাখানেক লাখো পর্যটকে মুখরিত থাকত কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। ভরপুর থাকত পাঁচ শতাধিক হোটেল মোটেল ও গেস্ট হাউজের সব কক্ষ। করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতির কারণে সেই চিরচেনা দৃশ্য এখন নেই। দেশের সবচেয়ে বড় পর্যটন এলাকা কক্সবাজারে গত চার মাস ধরে পাঁচ শতাধিক হোটেল মোটেল, গেস্ট হাউজ, পাঁচ শতাধিক রেস্টুরেন্ট, বার্মিজ মার্কেটসহ পর্যটন নির্ভর পাঁচ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ লক্ষাধিক মানুষ। কক্সবাজারে করোনা সংক্রমণ কিছুটা কমে যাওয়ায় ঈদুল আজহার পরে হোটেল মোটেল, বিনোদনকেন্দ্রসহ পর্যটন শিল্প খুলে দেয়ার আশা করলেও তা হয়নি। তবে সৈকতে স্থানীয় দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটেছে। ট্যুরিস্ট পুলিশ তাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে সচেতন করছেন। আগত দর্শনার্থীরা জানান, চিরচেনা সৈকতে আগের মতো পর্যটক নেই। তার পরেও দীর্ঘদিন পর সৈকতে আসতে পেরে ভালো লাগছে।
এবারের ঈদে সব ধরনের প্রস্তুতি থাকলেও হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজসহ পর্যটন স্পটগুলো বন্ধ থাকায় দৈনিক ২০০ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে। তাই হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজসহ পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেয়ার দাবি জানান একজন কর্মকর্তা।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, পর্যটন খাতে সারা বছরে দুই ঈদ পরবর্তী দুই সপ্তাহ হলো ব্যবসায়িক আয়ের সময়। করোনার কারণে ঈদুল ফিতরে বন্ধ ছিল। ৪ মাস বন্ধ থাকার পর সবার আশা ছিল ঈদুল আজহায় হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজসহ পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেয়া হবে। কিন্তু প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব করছে। এতে দৈনিক ২০০ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। কক্সবাজারের ট্যুরিস্ট পুলিশের ওসি তারিকুল ইসলাম জানান, ঈদ সার্বজনীন উৎসব। তাই স্থানীয় লোকজন ও পর্যটকরা সৈকতে বেড়াতে আসবে। সবাইকে মাস্ক পরে সামাজিক দূরত্বসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসতে হবে। সবার নিরাপত্তার জন্য নিয়মিত টহল, সৈকতে বিচবাইক নিয়ে টহল, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা, সাদা পোশাকধারী টিমসহ সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে।
ককক্সবাজারের জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে কক্সবাজারের হোটেল মোটেল, বিনোদন কেন্দ্রসহ পর্যটন শিল্প খুলে দেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধিসহ নিয়মনীতি মেনে চলার জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটির কর্মপরিকল্পনা তৈরির মাধ্যমে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে সীমিত আকারে খুলে দেয়া হবে। ঈদের পরে প্রাথমিকভাবে কক্সবাজারের বিনোদন কেন্দ্রসহ পর্যটন শিল্প খুলে দেয়ার খবরে ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। ছুটে চলছে সৈকতের ঘোড়াগুলো, বিচ ফটোগ্রাফাররা ছুটছেন পর্যটকদের আশায়। ব্যবসায়ী পর্যটক সবাই যেন উন্মুখ হয়ে আছেন আবারো প্রাণচঞ্চল সৈকত দেখতে।


আরো সংবাদ



premium cement