২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
রিজভীর প্রশ্ন

রিজেন্ট ও জেকেজির গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে কেন

-

রিজেন্ট হাসপাতাল ও জেকেজি হেলথ কেয়ারের কর্ণধারদের ‘নৈপথ্য গডফাদাররা কেনো ধরাছোঁয়ার বাইরে’ তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল সোমবার দুপুরে করোনা প্রতিরোধে লক্ষণভিত্তিক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই প্রশ্ন তুলে বলেন, সাহেদের কেলেঙ্কারি, জেকেজির চেয়ারম্যানের কেলেঙ্কারি এরা সবাই আওয়ামী লীগের লোক। আজকে যখন চারিদিক থেকে আওয়াজ উঠেছে কই রুই-কাতলা তো ধরা পড়ে না। গত শনিবার নামমাত্র একজন (ডা: সাবরিনা) ধরা পড়লেন। আমরা জানতে চাই, এর পেছনে গডফাদার কারা? এর পেছনে সেই ক্ষমতাশালী লোক তারা কারা? কই তারা তো ধরা পড়ে না। সাহেদের সাথে জেকেজির সাথে আরো যারা রুই কাতলা জড়িত আছে তাদের তো আপনারা ধরতে পারবেন না। কারণ ওরা ক্ষমতাসীনদের লোক।
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হোমিওপ্যাথিক ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এইচ ড্যাব) উদ্যোগে কোভিড-১৯ ভাইরাস মোকাবেলায় মেডিক্যাল ক্যাম্প করা হয়। সংগঠনের সভাপতি শফিকুল আলম নাদিমের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব এ কে এম জাকির হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সম্মিলিত হোমিওপ্যাথিক জোটের সভাপতি আরিফুর রহমান মোল্লা বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক মুজিব উল্লাহ মুজিব, গাজী নাজিমউদ্দিন, কাশেমুর রহমান খান, আশরাফ হিলালী, শাহ মোয়াজ্জেম সোহেল, ফয়সাল মেহবুব মিজু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘সিঙ্গেল স্ট্যান্ডার্ডে চলছে আওয়ামী লীগ। সেই সিঙ্গেল স্ট্যান্ডার্ড হচ্ছে তাদের মধ্যে মানবতার কোনো কাজ নেই। তাদের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর কোনো কাজ নেই। জনগণের পকেট থেকে টাকা দিয়ে যে ত্রাণ কেনা হয়েছে সেই ত্রাণ আওয়ামী লীগের নেতাদের বাসা থেকে, না হলে গ্যারেজ থেকে, না হলে পুকুর থেকে, না হলে মাটির তলা থেকে পাওয়া গেছে। এটাই তাদের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নমুনা। বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠন নিজের পকেট থেকে অর্থ দিয়ে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে প্রান্তিক মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরে আপনারা সংবাদপত্রের পাতায় দেখছেন। মাস্কের দুর্নীতি কে করেছে? মন্ত্রীর ছেলে। করোনার জন্য জীবন বাঁচানোর মেশিন ভেন্টিলেটর, সেই ভেন্টিলেটর দুর্নীতির সাথে জড়িত কে? ক্ষমতাসীন দলের লোক অথবা মন্ত্রীর আত্মীয়স্বজন। যখন পত্রপত্রিকা, গণমাধ্যম চারিদিকে ছি ছি পড়ে গেছে,তখন তাদের টনক নড়ে। আওয়ামী লীগের এমন কোনো নেতা নাই যার সাথে রিজেন্ট হাসপাতালের মালিকের সম্পর্ক নাই। সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্য অধিদফতর অনুমোদন দিয়েছে তাদেরকে করোনা টেস্ট করার জন্য। স্বাস্থ্য অধিদফরের ডিজি যখন অনুমোদন দেয় সেটা তো সরকারেরই অনুমোদন।
রিজেন্ট হাসপাতালের কর্ণধার মো: সাহেদের প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, উনি সরকারের পক্ষে টকশো করছেন, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক উপ-কমিটির সদস্য তিনি। তারপরে বললেন সে নাকি হওয়া ভবনের লোক। যখন ফাঁস হয়ে যায়, যখন মুখ দেখানোর কিছু থাকে না, তখন বিএনপি অথবা হাওয়া ভবনের বলে চাপিয়ে দেয় তারা। ওরা দুর্নীতি-লুটপাট সব করে যখন ধরা পড়ে যায় তখন বলে হাওয়া ভবনের লোক। তাদেরকে বলি, এতদিন লালন করেছেন, পুষেছেন, সমৃদ্ধি দিয়েছেন, সাধারণ মানুষের পকেট থেকে কোটি কোটি টাকা অর্জন করেছেন। যাদের পজিটিভ তাদের নেগেটিভ সনদ দিয়েছেন, আর যাদের নেগেটিভ তাদের পজেটিভ সনদ দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করছেন।
সরকারের দমননীতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, একটি বাচ্চা মেয়ে মাহমুদা পলি তাকে রাতের অন্ধকারে ধরেছেন। কেনো? সে ফেসবুকে লিখেছে সরকারের বিরুদ্ধে। এখনো সে কারাগারে। ছাত্রদলের সাবেক নেতা টিটো হায়দারকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরকারি লোকেরা ৪-৫দিন আগে তুলে নিয়ে গেছেন। এভাবে দুর্বৃত্তপনা, অমানবিক মনুষ্যত্বহীন মানসিকতার শাসন দিয়ে আপনাদের একের পর এক কালো আচরণ বন্ধ করে রাখতে পারবেন না।

 


আরো সংবাদ



premium cement