১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জুনে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৬৮ জনের প্রাণহানি

রেলপথে ২০ দুর্ঘটনায় নিহত ১৫, আহত ৪; নৌপথে ১৭ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৫, আহত ৬০
-

দেশে চলমান করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে গত জুন মাসে সারা দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩৫৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩৬৮ জন নিহত ও ৫১৮ জন আহত হয়েছেন। একই সময়ে রেলপথে ২০টি দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত ও চারজন আহত এবং নৌপথে ১৭টি দুর্ঘটনায় ৪৫ জন নিহত, ৬০ জন আহত ও ১০ জন নিখোঁজ হয়েছেন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল রোববার সমিতির মহাসচিব মো: মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুন মাসে সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হওয়াদের মধ্যে চালক ১৬২ জন ও পরিবহন শ্রমিক ১২৫ জন। এ ছাড়া ১১৩ জন পথচারী, ৬২ জন নারী, ২১ জন বিজিবি সদস্য, ১৮ জন আনসার সদস্য, ১৩ জন পুলিশ সদস্য, পাঁচজন সেনা সদস্য, ২৮ জন শিশু, ২৩ জন শিক্ষার্থী, ১১ জন রাজনৈতিক কর্মী, সাতজন শিক্ষক, একজন চিকিৎসক, একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং একজন প্রকৌশলী রয়েছেন।
আবার দুর্ঘটনার শিকারদের মধ্যে নিহত হয়েছেন ১১৬ জন চালক, ৯৮ জন পথচারী, ৪৯ জন নারী, ৪৬ জন পরিবহন শ্রমিক, ২১ জন শিশু, ১৯ জন শিক্ষার্থী, আটজন রাজনৈতিক কর্মী, সাতজন শিক্ষক, একজন চিকিৎসক, একজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন প্রকৌশলী, পাঁচজন পুলিশ ও দুইজন বিজিবি সদস্য।
দুর্ঘটনার কবলে পড়া যানবাহনের মধ্যে ৩৪ দশমিক ৯ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ২৪ দশমিক ১৫ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১২ দশমিক ১ শতাংশ বাস, ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ নছিমন-করিমন, ৮ দশমিক ১১ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৭ দশমিক ১৫ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক এবং ৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস রয়েছে। জুন মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে ৮ জুন। ওইদিন ২২টি দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হয়েছেন। আবার সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা ১০ জুন। ওইদিন ৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় চারজন নিহত ও ১৪ জন আহত হয়েছেন।
যাত্রীকল্যাণ সমিতি জানায়, মোট দুর্ঘটনার ৫১ দশমিক ১২ শতাংশ গাড়ি চাপায়, ২৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষে, ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ খাদে পড়ে, ৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ বিবিধ কারণে, ১ দশমিক ১২ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষে এবং ০ দশমিক ৫৬ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘটেছে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩১ দশমিক ৫৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এ ছাড়া সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ২ দশমিক ৭৯ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১ দশমিক ৯৫ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ১ দশমিক ১২ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়। মে মাসের তুলনায় জুন মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ৫৬ দশমিক ১৪ শতাংশ, মৃত্যু ৫৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ ও আহতের হার ৪৩ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়েছে।
প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে সড়ক নিরাপত্তায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম-দুর্নীতি ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি, জবাবদিহিতার অভাব, সরকারের আন্তরিকতার অভাব ও বিগত নির্বাচনে রাজনৈতিক অঙ্গীকারের প্রতিফলন না ঘটাকে দায়ী করা হয়েছে। সংস্থাটি মনে করে, উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস পদ্ধতি ঢেলে সাজানো না হলে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি হ্রাস করে সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল