২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

৯ বছর পর মামলা সিআইডিতে গ্রেফতার আরো ২

মধুখালীর শিশু ফয়সাল হত্যা
-

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের ডুমাইন গ্রামের ১০ বছরের শিশু ফয়সাল হত্যাকাণ্ডের ৯ বছর পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে ওই মামলায় তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। আর তদন্তে নেমে এরই মধ্যে সিআইডির হাতে নতুন করে গ্রেফতার হয়েছে দু’জন। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল রোববার দু’দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। শিগগিরই ওই মামলার তদন্ত শেষ হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।

গ্রেফতার ওই দু’জন হলো ডুমাইনের জসীম মোল্লা (৩৫) ও তুজাম বিশ^াস (৫০)। গত ২ জুলাই সিআইডির পৃথক অভিযানে তাদের ডুমাইন গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। জানা গেছে, তুজাম বিশ^াস একটি রাইস মিলের মালিক। শিশু ফয়সালের লাশ উদ্ধারের পর তার প্যান্টে লেগে থাকা কুঁড়ো ও পোড়া মবিলের সূত্র ধরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। হত্যার আগে ঘাতকরা রাইস মিলে নিয়ে ফয়সালকে নির্যাতন করে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ফয়সালের লাশ উদ্ধারের পরপর রাইস মিলটি সিল করে দিয়েছিল পুলিশ। তবে সে সময় তার বিরুদ্ধে তদন্ত এগোয়নি। অন্য দিকে গ্রেফতার জসীম মোল্লা পরিবারপরিকল্পনা কেন্দ্রের নাইট গার্ড ছিল। ফয়সালের লাশ উদ্ধারের পর সেও গা ঢাকা দিয়েছিল। 

২০১১ সালের ১৫ এপ্রিল ডুমাইন মাঠে ফুটবল খেলা দেখার সময় দুর্বৃত্তরা ফয়সালকে অপহরণ করে। এরপর তার শরীর থেকে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গ কেটে নিয়ে পরিবারপরিকল্পনা কেন্দ্রের সেফটি ট্যাংকে লাশ গুম করে। 

মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুস সাত্তারের সন্তান ফয়সাল চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিল। তিন ভাই তিন বোনের মধ্যে ফয়সাল সবার ছোট। ফয়সাল নিখোঁজ হওয়ার পর তার বাবার করা জিডির সূত্র ধরে ওই বছরের ১৭ এপ্রিল গ্রেফতার হয় প্রধান আসামি জাহাঙ্গির আলম পলাশকে। তাকে দু’দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের পর ৩০ এপ্রিল গ্রেফতার হয় অপর আসামি মুরাদ বিশ^াসকে। তাকেও দু’দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। এরপর ১২ ও ১৩ মে তাদের দু’জনকে আবারো একসাথে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এরপরই ১৫ মে ফয়সালের লাশের সন্ধান মেলে। মাত্র চার মাসের মধ্যে তদন্ত শেষে ওই বছরের ১০ আগস্ট আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়। 

ফয়সাল অপহরণ ও হত্যা মামলা তদন্তে শুরু থেকেই আপত্তি তোলে নিহতের পরিবার। আসামিদের রক্ষার জন্য তড়িঘড়ি করে চার্জশিট দেয়ার অভিযোগ এনে নিম্ন আদালতে তারা নারাজি দিলেও তা নামঞ্জুর হয়। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ১৯ জানুয়ারি হাইকোর্টের শরণাপন্ন হন তারা। ওই আপিলের শুনানি শেষে বিচারপতি জাহাঙ্গির হোসেন ও বিচারপতি মো: রেজাউদ্দিন খান সমন্বয়ে বেঞ্চ ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর মামলাটি ফের তদন্তের জন্য ফরিদপুর সিআইডিকে নির্দেশ দেন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ওই আদেশ পেয়ে ফরিদপুর সিআইডি মামলা তদন্ত শুরু করে। এরপরই নতুন করে গ্রেফতার হয় দু’জন।

 


আরো সংবাদ



premium cement