১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দেশ করোনা সংক্রমণ চক্রে পতিত হওয়ায় ওয়ার্কার্স পার্টির উদ্বেগ

-

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি দেশ করোনাভাইরাসের ‘সংক্রমণ চক্রে’ পতিত হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গতকাল শুক্রবার পার্টির পলিটব্যুরোর সভায় গৃহীত প্রস্তাবে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। প্রস্তাবে বলা হয়, জুলাই মাসের প্রথম দিনে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ‘সংক্রমণ চক্রে’ পতিত হওয়ার উৎকৃষ্ট প্রমাণ। কেবল তাই নয়, এই সংক্রমণ এখন প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছেছে। জনস্বাস্থ্যবিদদের মতে কোরবানির হাট ও ঈদে বাড়ি যাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে এই সংক্রমণ ও মৃত্যুর হারে ঊর্ধ্বমুখী বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।
প্রস্তাব বলা হয়, এই বাস্তবতাতেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রতিটি পরীক্ষার জন্য ফি ধার্য করেছে, যা মানুষকে করোনা পরীক্ষার ব্যাপারে অনুৎসাহিত করবে। অন্য দিকে পরীক্ষার ক্ষেত্রে যে সক্ষমতা রয়েছে, তার অর্ধেকেও ব্যবহার করা হচ্ছে না। একই সময়ে গত ৪ জুন ঢাকা মহানগরকে ‘রেড’, ‘ইয়েলো’ ও ‘গ্রিন’ জোনে ভাগ করে সংক্রমিতদের বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত হলেও তা-ও এক মাস ধরে দু’টি এলাকা ছাড়া কোথাও বাস্তবায়ন করা হয়নি। এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি না মানার জন্য দোষারোপ করা হলেও কার্যত কর্তৃপক্ষের মনোভাবই তাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি না মানতে উৎসাহিত করছে। অথচ এই বাংলাদেশেই সংক্রমণের প্রথম পর্যায়ে ঢাকার টোলারবাগ, মাদারীপুরের শিবচরের মানুষ ‘লকডাউন’ সফল করতে কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করেনি কেবল, নিজেরাই তা কার্যকর করতে স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছে।
বস্তুত করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম জনমনে অনাস্থা সৃষ্টি করেনি কেবল, তাদের ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। আর এই অবস্থায় এন-৯৫ মাস্ক, পিপিই ও আরটি-পিসিআর ক্রয় নিয়ে দুর্নীতির যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছিল তার নিরসন না হয়ে সরকারি অনুমোদনহীন রিজেন্ট হাসপাতালকে কোভিড-১৯ হাসপাতাল হিসেবে অনুমোদন, বিনা পয়সার পরীক্ষায় অর্থ আদায় ও সর্বোপরি ছয় হাজারের ওপর মিথ্যা সনদ দান মানুষের হতাশা আরো বাড়িয়ে তুলেছে।
ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে বলা হয় যে কেবল স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেই অব্যবস্থাপনা, সমন্বয়হীনতা কাজ করছে না, এবার যে বাজেট দেয়া হয়েছে তাতেও কোভিড-১৯-কে উপেক্ষা করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গীত গাওয়া হয়েছে। ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে এই করোনাকালের সুযোগ নিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ ঘোষণা করা আর এক অমানবিক কাজ।
পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পলিটব্যুরোর সভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বীরমুক্তিযোদ্ধা ও দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন এমপির মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। সভায় ওয়ার্কার্স পার্টির প্রাক্তন নেতা বর্তমানে সিপিবির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কমরেড হায়দার আকবর খান রনো ও পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড জ্যোতি শংকর ঝন্টুর দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয়।
পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশার সঞ্চালনায় ‘জুম অ্যাপে’ অনুষ্ঠিত এই সভায় যুক্ত হন পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড আনিসুর রহমান মল্লিক, কমরেড ড. সুশান্ত দাস, কমরেড মাহমুদুল হাসান মানিক, কমরেড নুর আহমদ বকুল, কমরেড কামরুল আহসান, কমরেড আমিনুল ইসলাম গোলাপ, কমরেড অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী, কমরেড আলী আহমেদ এনামুল হক এমরান, কমরেড নজরুল হক নিলু প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement