ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় না হলে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ হতো না : মুসলিম লীগ
- ০৩ জুলাই ২০২০, ০০:০০
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার শততম বার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সম্পৃক্ত সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নেপথ্য নায়ক নবাব সলিমুল্লাহ, নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী এবং শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছেন বাংলাদেশ মুসলিম লীগ নেতৃবৃন্দ। দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট বদরুদ্দোজা সুজা, মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আজিজ হাওলাদার, স্থায়ী কমিটির সদস্য আতিকুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেন আবুড়ী গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলার বর্ণবাদী হিন্দু নেতৃবৃন্দ ও ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের বঙ্গভঙ্গ বিরোধী সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনের কারণে ব্রিটিশ সম্রাট পঞ্চম জর্জ দিল্লিতে বসে ১৯১১ সালের ১২ ডিসেম্বর ঢাকাকেন্দ্রিক পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশ বাতিল করতে বাধ্য হন। বঙ্গভঙ্গ রহিত করার পর পূর্ববঙ্গের ক্ষুব্ধ মুসলমানদের ক্ষোভ প্রশমিত করতে ভারতের ভইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ, নবাব সলিমুল্লাহর দাবি মেনে ১৯১১ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। এই ঘোষণার পরই বাংলার বর্ণবাদী হিন্দু নেতারা তাদের সামাজিক আধিপত্য বজায় রাখার স্বার্থে এবং উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করা থেকে মুসলমানদের বঞ্চিত রাখার হীন উদ্দেশ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতায় অবতীর্ণ হন। ওই সময় প্রস্তাবিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নবাব সলিমুল্লাহ প্রায় দুইশত বিঘা জমি দান করেন। ১৯১৫ সালের ১৬ জানুয়ারি নবাব সলিমুল্লাহ রহস্যজনকভাবে কলকাতায় ইন্তেকাল করার পর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অজুহাত তুলে ব্রিটিশ সরকারের অর্থহীন টালবাহানা ও বর্ণ হিন্দু নেতাদের বিরোধিতার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় বঙ্গীয় প্রাদেশিক ব্যবস্থাপক পরিষদের দুইজন প্রভাবশালী সদস্য, ধনবাড়ীর জমিদার নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী ও তরুণ আইনজীবী এ কে ফজলুল হকের অক্লান্ত ও বিরামহীন প্রচেষ্টার ফলে ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম সীমিত পরিসরে চালু হয়। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্ত করে পাকিস্তান সৃষ্টি, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টি, ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী গণ-আন্দোলনসহ সব আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশের স্বকীয় শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক ইতিহাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অনস্বীকার্য। এক কথায় বলা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত না হলে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ হতো না।
নেতৃবৃন্দ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার শততম বার্ষিকী উপলক্ষে ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামানের প্রদত্ত বাণীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নেপথ্যের নায়ক উল্লেখিত তিন নেতার নাম উল্লেখ না করায় অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এই তিনজন নেতার কর্মকাণ্ড বাদ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস রচনা হবে শেকড়বিহীন ইতিহাস। তাদের শুভেচ্ছা বাণীতে স্মরণ না করে ভিসি এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীসহ সচেতন প্রতিটি মানুষকে ব্যথিত করেছেন। বিজ্ঞপ্তি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা