২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

করোনায় মৃত তিন শতাধিক লাশ দাফন করেছে কোয়ান্টাম

-

সারা দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত বা করোনা সন্দেহভাজনে মৃতদের তিন শতাধিক লাশ দাফন ও সৎকার করেছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। গত ৭ এপ্রিল থেকে কোয়ান্টামের চার শতাধিক নিবেদিতপ্রাণ স্বেচ্ছাসেবক দিনরাত ২৪ ঘণ্টা এ সেবাকাজে নিয়োজিত রয়েছেন। করোনা আতঙ্কে পরিবারের সদস্যরা যখন লাশ ফেলে যাচ্ছেন বা ভয়-আতঙ্কে দূরে দূরে থাকছেন; তখন লাশের শেষ বিদায় জানাতে মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে এগিয়ে এসেছেন প্রতিষ্ঠানটির একদল স্বেচ্ছাসেবক।
কোয়ান্টামের দাফন কার্যক্রমের সমন্বয়ক ছালেহ আহমেদ জানান, গত ৭ এপ্রিল থেকে আমরা দাফন কার্যক্রম শুরু করি। এ পর্যন্ত দেশব্যাপী ৩০৬টি লাশ দাফন ও সৎকার করেছি। এর মধ্যে ঢাকায় ২৩৫ জন ও বাকি ৭১ জন রাজশাহী, চট্টগ্রাম, বরিশাল, বগুড়া, সিলেট, রংপুর, দিনাজপুর, পাবনা, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। রাজধানীর বাইরে সারা দেশকে ১৮টি জোনে ভাগ করে আমাদের দাফন কার্যক্রম চলছে। ধর্মীয় বিধান মেনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষণ অনুযায়ী দাফন বা সৎকারের কাজ করে যাচ্ছি আমরা। শুধু মুসলিমই নয়; সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্যও রয়েছে আমাদের বিশেষ দল। মহিলাদের দাফনে সহযোগিতা করছেন ২০ জনের একটি মহিলা দল।
শুরু থেকেই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশবাহিনী, আনসার সদস্য, সচিব, সাংবাদিক, ব্যাংকারসহ নানা পেশার মানুষকে দাফন ও সৎকার করেছে কোয়ান্টাম।
ছালেহ আহমেদ বলেন, এর মধ্যে আমরা ৫ জন মুক্তিযোদ্ধাকে তাদের শেষযাত্রায় সম্মানের সাথে বিদায় দিতে পেরেছি। যারা আমাদের দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন; সেই বীরদেরকে মমতার সাথে নিজেদের হাতে কবরস্থ করতে পেরে আমরা ধন্য মনে করছি। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গৌতম আইচ সরকারের লাশ সৎকার করি আমরা। গত ৯ মে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে মারা যান তিনি। ঢাকা থেকে গৌতম আইচের মরদেহ যথাযথভাবে ডব্লিউএইচও’র নির্ধারিত ব্যাগে প্যাকিং করে বরিশালে নেয়া হলে কোয়ান্টাম বরিশাল দল তাকে সমাধিস্থ করে। গত ১১ মে ঢাকা মেডিক্যালের করোনা ইউনিটে মারা যান নর্দার্ন মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর ডা: আনিসুর রহমান। তার লাশ দাফন করে কোয়ান্টামের দাফন দল।
এভাবেই দিনরাত স্বেচ্ছাসেবার জন্য প্রস্তুত থাকছেন কোয়ান্টামের স্বেচ্ছাসেবক দল, যাদের অনেকেই ব্যক্তিগত জীবনে বিভিন্ন পেশার সাথে জড়িত। দিনে বা রাতে যেকোনো সময় ডাক পড়লেই তারা হাজির হয়ে যান হাসপাতাল বা মৃতের বাসাবাড়িতে।
জানা যায়, একটি দাফন প্রক্রিয়ায় প্রায় ২৭ রকমের উপকরণ ব্যবহার করে কোয়ান্টাম। দাফন কাজে সুরক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয় অ্যালকোহলসহ কয়েক ধরনের জীবাণুনাশক। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী, এ দাফন কার্যক্রম চলে। কার্যক্রমের পুরো প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত পিপিই, মাস্ক, সেফটি গ্লাস, ফেস শিল্ড, সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস, হেভি গ্লাভস, নেক কভার, কাফনের কাপড়, লাশ বহনের জন্য বিশেষ বডিব্যাগসহ সুরক্ষার জন্য কয়েক ধরনের জীবাণুনাশক- পুরোটাই কোয়ান্টামের স্ব-অর্থায়নে স্বেচ্ছাসেবায় পরিচালিত হচ্ছে।
কোয়ান্টাম দাফন কার্যক্রমের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল ছালেহ আহমেদ আরো জানান, করোনায় মারা গেলেও মৃতদের জানাজা পড়ানো হয় সাধারণ লাশের মতো যথাযথ সম্মানের সাথে। কবরস্থ করার পর মৃতের জন্য আন্তরিক দোয়া করা হয়। একজন মানুষ মারা গেলে পরিবারের মানুষ কাছে থাকবে না, আত্মীয়রা জানাজায় আসবে নাÑ এটা আমাদের দেশের সংস্কৃতি নয়। করোনার এই সময়ে স্বজনহীন সেসব মৃতকে শেষ সম্মান জানানোর মানবিক দায়িত্ববোধ থেকেই এই সেবাকাজে আমরা নেমেছি। দেশের এই দুর্যোগে শেষ পর্যন্ত আমরা সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যেতে চাই। বিজ্ঞপ্তি।

 


আরো সংবাদ



premium cement
কক্সবাজারে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, স্বজনদের হাসপাতাল ঘেরাও বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিকসহ কার্গো জাহাজডুবি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশকে ‘নেট সিকিউরিটি প্রোভাইডার’ হিসেবে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি রাজশাহীতে টানা তাপদাহ থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা শরীয়তপুরে তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ জামায়াতের এক শ্রেণিতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী নয় : শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নজিরবিহীন দুর্নীতির মহারাজার আত্মকথা ফতুল্লায় ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে নির্মাণকাজ বন্ধ, মারধরে আহত ২, মামলা পার্বত্যাঞ্চলে সেনাবাহিনী: সাম্প্রতিক ভাবনা গফরগাঁওয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে টিকটক করতে গিয়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু

সকল