১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মডেল টাউনে বিদ্যুৎ নেই : চরম দুর্ভোগে ২৫ হাজার মানুষ

-

ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানা এলাকার মডেল টাউন আবাসিক এলাকা গত চার দিন আগে থেকে লকডাউন। মিটারে টাকা শেষ হওয়ায় বিদ্যুৎ ও পানি সঙ্কটে চরম দুর্ভোগে ২৫ হাজারের বেশি বাসায় আটকা পড়া মানুষ। এ ছাড়া সব ধরনের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত তারা।
জানা গেছে, কেরানীগঞ্জ মডেল টাউন আবাসিকে নতুন আরো ৫০টি ভবন নিয়ে মোট ২০০টি ভবন রয়েছে। প্রতিটা ভবনে শত শত লোকের বসবাস। গত ৫ এপ্রিল সন্ধ্যার পরে লকডাউন করা হয়েছে এই এলাকা। এর আগে এ ব্লকের ১ নম্বর রোডে বাড়িওয়ালা জব্বার মিয়ার এক ভাড়াটিয়ার করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাই মেইন গেটসহ ৯টি পকেট গেটেও তালা। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র না কিনতে পারা ও পানি বিদ্যুৎ সঙ্কট থাকায় ফুঁসে উঠেছেন এখানকার হাজার হাজার লোক। প্রতিদিন মেইন গেট থেকে ফিরে আসছেন তারা। আবাসিক এরিয়া থেকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না তাদের। গেটে পুলিশ মারধর ও গালাগালি করছে। এমনকি পুলিশ লাঠিচার্জ করছে।
কাজি জিহাদুল ইসলাম ওরফে কাজি, খলিলুর রহমান, জব্বার, জাহাঙ্গির, রুবেলসহ বাড়িওয়ালা মালিক সমিতির একাধিক নেতা জানান, এ ব্লকের ১ নম্বর রোডে জব্বার মিয়ার ভাড়াটিয়া ইলেকট্রনিক্স দোকানি ও মেকানিক মোস্তফাকে করোনা রোগী শনাক্ত করছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
পরে লকডাউন করে দেয় তারা। এ সময় ইউএন থানা পুলিশ উপস্থিত ছিল। গত ৫ এপিল সন্ধ্যার পর থেকে কোনো মানুষ বের কিংবা ঢুকতে পারছে না এই আবাসিকে। বিদ্যুতের মিটার ডিজিটাল হওয়ায় কার্ড ফুরানো কেউ টাকা ঢোকাতে পারছে না। এমনকি বাড়িয়ালারাও পারছেন না। এতে করে প্রায় বাড়িতে চার থেকে ছয় জন করে ভাড়াটিয়াদের বিদ্যুৎ ডিজিটাল কার্ডে টাকা নেই। এছাড়া প্রত্যেক রোডে কোনো কোনো বাড়িওয়ালার পানি উত্তোলন করা বিদ্যুৎ মিটার কার্ডে টাকা নেই। তারাও পানি দিতে পারছে না। তাই পানির জন্য চলছে হাহাকার। এ ছাড়া অন্ধকারে কাটছে দুর্ভোগে পড়া মানুষগুলোর জীবন। মডেল টাউন বাড়ি মালিক সমিতির সভাপতি হাজি রহমান বলেন, মডেল টাউন আবাসিকে ২০০ ভবন রয়েছে। প্রতিটা ভবন ৮ থেকে ১০ তলা। সব মিলিয়ে ২৫ হাজারের বেশি লোক বসবাস করছে এই এলাকায়। এসব লোকজন চার দিন যাবত বন্দী।
তিনি বলেন, গত ৫ এপিল জব্বার ভাইয়ের বাড়িতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এমন এক ভাড়াটিয়াকে শনাক্ত করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। পরের দিন কেনাকাটা ও বিদ্যুৎ মিটারে টাকা ঢুকানোর সুযোগ দিয়ে লকডাউন করা হলে এতটা সমস্যায় পড়তে হতো না। এখন হাহাকার অবস্থা। এ দুর্ভোগকালে সরকারের উচ্চমহলসহ সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে এগিয়ে এসে সমস্যা সমাধানের অনুরোধ করছি বলে জানান তিনি।
মডেল টাউন বি ব্লকের বাড়িওয়ালা মালিক সমিতির সাবেক সহ সভাপতি খোকন মিয়া বলেন, তার ব্লকের সকল ভাড়াটিয়ার বিদ্যুৎ মিটার রিচার্জের কথা বলা হয়েছে। তাই অনেকটা কম সমস্যা। এছাড়া টুকিটাকি সমস্যাগুলো উপজেলার জননেতা ও কর্মকর্তাদের সাথে বসে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মীর মোবারক হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, লকডাউনে এলাকার বাসিন্দাদের নানা সমস্যা হচ্ছে তা ঠিক। তবে এসব সমস্যা সমাধানে উপজেলা কর্মকর্তাদের নিয়ে সমাধান করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা ইউএন ও অমিত দেবনাথ নয়া দিগন্তকে বলেন, যাদের বিদ্যুৎ মিটার কার্ডের টাকা ফুরিয়ে যাবে, তারা অন্য কারো দিয়ে বিদ্যুৎ মিটার কার্ডে টাকা ঢুকাবে। আর তা না পারলে কিছু করার নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল