১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাজশাহী নগরীতে ঢোকা ও বের হওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক কড়াকড়ি

-

রাজশাহী নগরী থেকে প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে যেতে পারছেন না; আবার বাইরের জেলা থেকে নগরীতে প্রবেশ করতেও পারছেন না কেউ-ই। গতকাল সোমবার সকাল থেকে নগরীর প্রবেশমুখগুলোতে পুলিশ সদস্যরা এই কড়াকড়ি আরোপ করেছেন। এ ক্ষেত্রে কার্যত বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে অন্যান্য জেলার সাথে রাজশাহী জেলার যোগাযোগ। তবে রাজশাহী জেলা এখনো ‘লকডাউন’ ঘোষণা করা হয়নি বলে প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
সকাল থেকে রাজশাহী নগরীর বেলপুকুর, নওদাপাড়া আমচত্বর ও কাশিয়াডাঙ্গা প্রবেশমুখে গিয়ে দেখা গেছে, পুলিশ নগরী থেকে প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাইরে যেতে দিচ্ছে না। এ ছাড়া বাইরে থেকেও নগরীতে কাউকেই প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। রাজশাহীর মূল শহরে প্রবেশের আগে কয়েকটি মোড়েও অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। সড়কে বসানো হয়েছে ব্যারিকেড। এভাবে মানুষের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া জনসমাগম ঠেকাতে জেলা প্রশাসনের সাথে কাজ করছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরাও।
এ ব্যাপারে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপকমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস নয়া দিগন্তকে বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকার জন্য সোমবার থেকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত রাজশাহী নগরী থেকে কেউ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যেতে পারবেন না; আবার বাইরের জেলা থেকেও কেউ নগরীতে প্রবেশ করতে পারবেন না। সন্ধ্যা ৬টা থেকে কেবল ওষুধের দোকান ছাড়া কোনো দোকানপাট খোলা রাখা যাবে না। এ ছাড়া জরুরি সেবা বাদে রিকশা, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে তিনি জানান, রাজশাহী এখনো ‘লকডাউন’ ঘোষণা করা হয়নি।
এ দিকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় গতকাল সোমবার সকালে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে মানুষকে ঘরে থাকতে বাধ্য করার জন্য কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বিভাগীয় সমন্বয় সভায় লকডাউনের প্রস্তাব করা হয়েছিল, তবে এখনই সেই সিদ্ধান্তে না যাওয়ার জন্য সবাই একমত হন। কিন্তু রাজশাহীর বাইরে যাওয়া ও প্রবেশের ওপর এবং যানবাহন চলাচল সংরক্ষিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষেই এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ দিকে সভা শেষে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার মো: হুমায়ুন কবীর খোন্দকার সাংবাদিকদের বলেন, রাজশাহী বিভাগে এখনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। তবে শনাক্ত হলে কিভাবে রোগটি মোকাবেলা করা যাবে সে বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়। রাজশাহীতে জেনারেল হাসপাতাল নেই। তাই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, দুইটি বেসরকারি হাসপাতাল এবং তিনটি স্টেডিয়ামকে প্রস্তুত রাখার ব্যাপারে সবাই একমত প্রকাশ করেছেন।
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার মো: হুমায়ুন কবীর খোন্দকার। এতে অন্যদের মধ্যে রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী সদর আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো: হামিদুল হক, রাজশাহী রেঞ্জের উপপুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম হাফিজ আক্তার, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান, রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো: সুজায়েত ইসলাম, রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা: গোপন্দ্রনাথ আচার্য্য, রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন ডা: এনামুল হকসহ সংশ্লিষ্ট সব দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement